নীলফামারী: বগুড়া-সৈয়দপুর পর্যন্ত গ্যাসলাইনের পাইপ বসানোর কাজ শেষ। এখন সৈয়দপুরে চলছে মিটার স্টেশনের কাজ।
এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
জিটিসিএল সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ স্থাপনসহ এ সংক্রান্ত স্থাপনা নির্মাণ কাজও শুরু হয় একই সময়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার ও জিটিসেল কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৩৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় ৩০৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এছাড়া ৫৭৬ দশমিক ৩৭ একর জমি হুকুম দখল করা হয়েছে। প্রকল্পটির সিংহভাগ কাজ গেল জুন মাসে সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনও নির্মাণাধীন রয়েছে সৈয়দপুরে অবস্থিত মিটার স্টেশন। এ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
জিটিসিএলের প্রকল্প পরিচালক আরিফ হোসেন জানান, বগুড়া থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। মাটির তলদেশ থেকে ওই পাইপলাইন নিয়ে আসার সময় ছয়টি নদী ও দুটি খাল পাড়ি দেওয়া হয়। আশা করছি, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের যে কোনো দিন পাইপলাইনে পরীক্ষামূলক গ্যাস সরবরাহ করা হবে। তবে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। উচ্চ পর্যায় থেকে শিগগিরই তারিখ জানানো হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় সৈয়দপুরে ১০০ মিলিয়ন স্ট্যান্ডার্ড কিউবিক ফুট প্রতিদিন (এমএমএসসিএফডি) ক্ষমতা সম্পন্ন সেন্ট্রাল গ্যাস সাপ্লাই স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। একই ভাবে রংপুরে ৫০ ও পীরগঞ্জে ২০ এমএমএসসিএফডি স্টেশন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ভবিষ্যতের চাহিদা মাথায় রেখে ২৪ ইঞ্চি ব্যাসের পরিবর্তে ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সৈয়দপুরের বৃহত্তম শিল্প পরিবার ইকু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিদ্দিকুল আলম জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যে পাইপলাইনে গ্যাস পাচ্ছি। এতে উৎপাদন খরচ অনেকটা কমে আসবে। এ অঞ্চলে শিল্পের বিপ্লবসহ ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সহ-সভাপতি ও রয়েলেক্স মেটাল ইন্ড্রাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজকুমার পোদ্দার বলেন, আমরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র, গ্যাসের চুলা ও প্রেসার কুকার তৈরি করে থাকি। এসব উৎপাদনে ফার্নেস অয়েল ব্যবহার করা হয় জ্বালানি হিসেবে। গ্যাস এলে উৎপাদন খরচ অনেক কমে যাবে।
সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, উত্তরের ব্যবসাবাণিজ্যের কেন্দ্র হচ্ছে সৈয়দপুর। গ্যাস পেলে এখানকার কলকারখানা প্রাণশক্তি ফিরে আসবে। অল্প খরচে মালামাল তৈরি করে ব্যবসায়ীরা বাজারে সরবরাহ করতে পারবেন। তিনি এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২৩
এসআই