ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বাংলাদেশ পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারকারী দেশের কাতারে: রোসাটম ডিজি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৩
বাংলাদেশ পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারকারী দেশের কাতারে: রোসাটম ডিজি

রূপপুর (পাবনার ঈশ্বরদী) থেকে: পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়াম নিয়ে বাংলাদেশ পরমাণু প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারকারী দেশের কাতারে সামিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ৷

বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন৷

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রথম ব্যাচের জ্বালানির হস্তান্তর উপলক্ষে প্রকল্প সাইটে এক জাঁকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। অনুষ্ঠানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন।

এছাড়া রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ, বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানসহ সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তারা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

রাশিয়া এবং বাংলাদেশের শীর্ষ নেতাদের অনুমতিক্রমে পারমাণবিক জ্বালানি হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। রোসাটম মহাপরিচালক বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর হাতে জ্বালানি হস্তান্তরের সনদ তুলে দেন। সনদে এই মর্মে নিশ্চয়তা দেওয়া হয় যে, সব নিরাপত্তা মান সম্পূর্ণভাবে অনুসরণ করে জ্বালানি হস্তান্তর করা হয়েছে। রূপপুর প্রকল্পের জন্য জ্বালানি প্রস্তুত করেছে রাশিয়ার নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্লান্ট (এনসিসিপি), যা রোসাটমের জ্বালানি ডিভিশনের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সক্রিয় নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে জ্বালানি প্রস্তুত ও পরিবহন সম্পন্ন হয়েছে।

রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আজকের দিনটি একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করল। পারমাণবিক জ্বালানি নেওয়ার পর রূপপুর এনপিপি এখন একটি পারমাণবিক স্থাপনা হিসেবে স্বীকৃতি পেল। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সেই সব দেশের কাতারে সামিল হলো, যারা শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক প্রযুক্তি ধারণ করছে।

তিনি বলেন, রোসাটমের জন্য এটি একটি বিশাল সম্মানের বিষয় যে, সংস্থাটি এমন একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যা স্থিতিশীল বিদ্যুতের নিশ্চয়তা দিবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশে অনন্য প্রকৃতি সংরক্ষণে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করে বলেন, বিশেষ এই মুহুর্তের জন্য আমরা অনেকদিন অপেক্ষায় ছিলাম। এটি শুধুমাত্র পাবনা জেলার জনগণের জন্য নয়, সমগ্র জাতির জন্য একটি উৎসব। আজকে আমরা জ্বালানি হস্তান্তর সনদ পেয়েছি। এর মাধ্যমে বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের অর্জনের স্বীকৃতি মিলল। বাংলাদেশের মানুষ তাদের জীবনযাত্রায় প্রাণচঞ্চল এবং বর্ণিল। এ ঘটনাটিকে আমরা বর্ণিলভাবে উদযাপন করছি। গোটা জাতির মাঝেই আজকে উৎসবের আমেজ।

রুশ আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুটি ইউনিট স্থাপিত হচ্ছে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট। প্রকল্পে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর এক হাজার ২০০ রিয়্যাক্টর ব্যবহার হচ্ছে। এ রিয়্যাক্টরগুলো সব আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সক্ষম। রিয়্যাক্টরগুলোর জীবনকাল ৬০ বছর হলেও, তা আরও ২০ বছর বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০২০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২৩
এসকে/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।