ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

‘বিদ্যুৎ খাতে মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার ব্যর্থ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১২
‘বিদ্যুৎ খাতে মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার ব্যর্থ’

ঢাকা: বিদ্যুৎ খাতে মধ্যমেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন  
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান মুনসুর।

সোমবার বিয়াম মিলনায়তনে সাপ্তাহিক কাগজ আয়োজিত ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।



ড. মুনসুর বলেন, “মধ্যমেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে রেন্টাল নির্ভরতা ৩ বছর থেকে বেড়ে ৫ বছর হয়েছে। রেন্টাল নির্ভরতা ৭ বছর, এমনকি ১১ বছরও ছাড়িয়ে যেতে পারে। ”

তিনি বলেন, “কয়লানীতি না হওয়ায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। আর রাজনৈতিক কারণে কয়লানীতি হচ্ছে না। ”

জাতীয় স্বার্থে রাজনীতিকদের কয়লানীতি চুড়ান্ত করার আহ্বান জানান আহসান মুনসুর।

এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি আনিসুল হক বলেন, “২০০৯ সালে বিদ্যুতের যে অবস্থা ছিলো তাতে কুইক রেন্টালের বিকল্প ছিলো না। যারা সমালোচনা করেন তাদের বলব শিল্পে এর ফলাফল খুঁজে দেখতে। ”

তিনি বলেন, “বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ায় শুধু গার্মেন্টস খাতেই ৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি বেড়েছে। না পাওয়ার চেয়ে বেশি দাম ভালো কি না তা ভেবে দেখতে হবে। ”

সরকার দাম বাড়িয়ে ভালো করেছে কি না তার রায় জনগণ আগামী ভোটে দেবে বলেও মন্তব্য করেন আনিসুল হক।

তিনি আরও বলেন, “আমার নিজেরও বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এখানে কোটি কোটি টাকা লোপাট করার সুযোগ নেই। ”

৮০ শতাংশই নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র বলেও দাবি করেন তিনি।

কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, “কুইক রেন্টাল কোন দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা হতে পারে না। ”

বিদ্যুৎ খাত দুর্নীতি ছেয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চুক্তিগুলো নিয়ে সবদলের অংশগ্রহণে সংসদে আলোচনা হওয়া উচিৎ। ”

“সেদিন যদি বিরোধীদল না যায় তাহলে তাদের কথা বলার অধিকার থাকবে না” মন্তব্য করে মকসুদ বলেন, “দেশে বিদেশে সংসদের সুবিধা নেবেন আর দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন না তা হতে পারে না। ”

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বলেন, “আমি কুইক রেন্টাল বুঝি না। তবে শিল্পে অনেক উন্নয়ন হয়েছে বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে। ”

তিনি প্রশ্ন করেন, “অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আমদানি করে চীন বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, তাহলে আমরা কেন পারব না। ”

তিনি জানান, ২০১১ সালে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং ছিলো, এখন ১ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।

টিভি ব্যক্তিত্ব আব্দুর নূর তুষার বলেন, “সেহরি-ইফতারে বিদ্যুতের প্রয়োজন নেই। খেলার জন্যও বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিদ্যুৎ দিতে হবে উৎপাদনমুখী খাতে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া যাতে বিঘ্ন না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ”

ডিসিসিআই সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম বলেন, “স্বল্প মেয়াদে কুইক রেন্টাল ভালো ছিলো। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অভাব দেখা যাচ্ছে।   সরকার কয়লা নীতি চুড়ান্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। কয়লা নীতি চুড়ান্ত করা প্রয়োজন। গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে হবে। এলপিজি আমদানি ও বিকল্প জ্বালানির দিকে নজর দিতে হবে। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। ”

মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, “২০০৯ সালে যে প্রেক্ষাপট ছিলো তাতে কুইক রেন্টালের বিকল্প ছিলো না। ”

তিনি বলেন, “দেশের ৫০ শতাংশ লোক বিদ্যুতের বাইরে। আর ১০ শতাংশ ধনিক শ্রেণি ৮০ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। সবার কাছ থেকে টাকা তুলে এ খাতে ভর্তুকি দেওয়ার কোন অর্থ থাকতে পারে না। ”

দ্রুত গ্যাস ও বিদ্যুতের দামের সমন্বয় করা প্রয়োজন বলেও জাানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১২
ইএস/ সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।