ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

নাসির উ্দ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৪
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ফাইল ফটো

সিলেট: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর সাত নম্বর গ্যাস কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে আরও সাড়ে আট মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

সোমবার (০৪ নভেম্বর) দুপুরের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

এতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব এবং পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।   

সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ৭ নম্বর কূপ থেকে আজ নতুন করে আরও সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে যাচ্ছে।

এর আগে ২২ অক্টোবর সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর তেলের পুরোনো কূপ (সিলেট-৭নং কূপ) সংস্কার করতে গিয়ে দুই স্তরে নতুন গ্যাসের স্তরের সন্ধান মেলে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দুই দফায় পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে এক হাজার ২০০ মিটার গভীরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড কর্তৃপক্ষ।


সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরাতন গ্যাসকূপ সিলেট-৭ নম্বরে জুলাই মাস থেকে অনুসন্ধান চলে। গত ১৪ অক্টোবর কূপের ২০১০ মিটার গভীরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান মেলে।

এরপর ২২ অক্টোবর ওই কূপের ১২০০ মিটার গভীরে আরও সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এই টেস্ট হিসেবে এক সপ্তাহ গ্যাস উত্তোলন করা হয়। পরবর্তীতে ওই কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত করা হয়। প্রতিদিন সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।   

সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য মতে, ১৯৮৬ সালে জৈন্তাপুরের হরিপুর সিলেট-৭ নম্বর কূপে তেল উত্তোলন শুরু হয়। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেল উত্তোলন করা হয়। এরপর তেল উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেলে ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হয়।

এবার পুরোনো কূপে দুটি লেয়ারে গ্যাসের সন্ধান মেলে। সিলেট থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় গ্রিডে ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়ে আসছিল। এখন সেটি আরও বাড়ছে।  

সিলেটে ১৪টি কূপে খনন ও গ্যাস উত্তোলন করে দেশীয় তেল গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি বাপেক্স। এরমধ্যে জৈন্তাপুরের হরিপুর গ্যাস ফিল্ডে দুটি কূপে, গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা তিনটিতে, রশিদপুর সাতটি ও বিয়ানীবাজার দুটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন অব্যাহত আছে।

এরমধ্যে জৈন্তাপুরের হরিপুর গ্যাস ফিল্ডে ১৯৫৫ সালে নয়টি কূপে পরীক্ষা চালিয়ে দুটিতে গ্যাস পাওয়া যায় এবং ১৯৬১ সালে এই কূপ দুটি উৎপাদনে যায়। গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা ১৯৬২ সালে সাতটি কূপে পরীক্ষা চালিয়ে তিনটিতে গ্যাসের সন্ধান মেলে এবং ১৯৮৩ সালে উৎপাদনে যায়। রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডে ১৯৬০ সালে ১১টি কূপ খনন করে সাতটিতে গ্যাস উৎপাদনে যায় ১৯৯৩ সালে। বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডে ১৯৮১ সালে দুটি কূপ খনন করে দুটিতেই গ্যাসের সন্ধান মেলে এবং ১৯৯৯ সালে উৎপাদনে যায়।

এছাড়াও ১৯৫৯ সালে ছাতক গ্যাস কূপে অনুসন্ধান করে একটি কূপের সন্ধান মেলে। তবে ১৯৬০ সালে উৎপাদনে গিয়ে সেটি স্থায়িত্ব পায়নি, এখনও বন্ধ রয়েছে।

সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) প্রকল্প পরিচালক ও ডিজিএম আবদুল জলিল প্রামাণিক বাংলানিউজকে বলেন, এসব কূপের বাইরেও অনেক কূপ খনন করা হয়েছে। যেগুলো থেকে গ্যাস পাওয়া যায়নি। তবে সিলেটের হরিপুর ৭নং কূপ সংস্কার করতে গিয়ে দুই স্তরে গ্যাসের সন্ধান মেলে। সর্বশেষ গত ২২ অক্টোবর ওই কূপের ১২০০ মিটার গভীরে আরও সাড়ে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান মেলে। এটি আজ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৪
এনইউ/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।