ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণ কুইক রেন্টাল নয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৪
বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণ কুইক রেন্টাল নয় প্রতীকী

ঢাকা: কুইক রেন্টালের কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়েনি। তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করায় দাম বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব আবুল কালাম আজাদ।



শনিবার দুপুরে হোটেল রূপসী বাংলায় ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ‍ইন্ডাট্রি (আইবিসিসিআই) আয়োজিত বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন,  তখন এর কোনো বিকল্প ছিলো না। চাইলেই গ্যাস কিংবা কয়লায় যেতে পারছিলাম না।

কয়লায় যাওয়ার একটা সুযোগ ছিলো। কিন্তু কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গেলে ৫ থেকে ৭ বছর সময় লাগতো। সে কারণে তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, মহেশখালীতে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ৫ থেকে ৭ বছরের আগে বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব নয়।

সচিব বলেন, ২০০৯ সালে ৯৫ শতাংশ বিদ্যু‍ৎ উৎপাদন করা হতো গ্যাস দিয়ে। আর এখন হচ্ছে ৬৪ শতাংশ।   তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রতি ইউনিটের দাম পড়ে ২০ থেকে ২২ টাকা।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিআইডিএস’র এক সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের আর্থিক মূল্য হচ্ছে দেড় ডলার অর্থাৎ ১০০ টাকার ওপরে। তাহলে আমি কেন ২২ টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবো না।

তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসানো সময়ের চাহিদা ছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, যখন তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসানো হয় তখন ফার্নেস অয়েলের দাম ছিলো ২৬ টাকা। আর এখন ৬৮ টাকা।

তিনি বলেন, সরকারের উদ্যোগের কারণে বিদ্যুতের বিতরণ কোম্পানিগুলো নিজের পায়ে দাঁড়াতে শুরু করেছে।

সোলার হোম সিসটেম স্থাপনে বাংলাদেশ মাইল ফলক পার করেছে। ২০১৫ সালের মধ্যে ৩০ লাখ সোলার হোম সিসটেম স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা অনেক আগেই অর্জিত হয়েছে। এখন লক্ষ্যমাত্রা রিভাইস করে ৬০ লাখ করা হয়েছে। দৈনিক ৩ হাজার সোলার হোম সিসটেম স্থাপন হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের বিদ্যুৎ সমস্যা কেটে যাবে। বিদ্যুৎ বিভাগের ওপর সেই আস্থা রয়েছে। ’

সেমিনারে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, উন্নয়নশীল দেশে জিডিপি ১ শতাংশ বাড়লে বিদ্যুতের চাহিদা দেড় শতাংশ বাড়ে। কিন্তু আমাদের দেশে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। এতে বুঝা যায় কিভাবে অর্থনীতির প্রসার ঘটছে।

বিদ্যুৎ খাতে গত ৫ বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। আগামী ৫ থেকে ৬ বছরের মধ্যে অনেক মেগা প্রকল্প উৎপাদনে আসবে বলেও জানান তিনি।

সচিব বলেন, প্রাইভেট সেক্টরের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৪৬ শতাংশ বেসরকারি খাতের অবদান রয়েছে।

২০৩০ সাল নাগাদ আমদানি ও দেশীয় কয়লা দিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এ লক্ষে কাজ করা হচ্ছে।

সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ম. তামিম বলেন, ‘ফুয়েল মিক্সের পরিকল্পনা সঠিক হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশীয় কয়লা উত্তোলনের কোনো পদক্ষেপ নেই। আমার পরামর্শ হচ্ছে দেশীয় কয়লার দিকে যাওয়া।

আমাদের কয়লার দিকে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই উল্লেখ করে ম.তামিম বলেন, এখন কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রামপাল আর মাতারবাড়ীকে লক্ষ্য করা হয়েছে। এর বাইরে সিলেট, ভোলা এবং লবনছড়াকে মাথায় নেওয়া উচিত।

ম. তামিম বলেন, বিনিয়োগ বড় সমস্যা। রামপাল মৈত্রী প্রকল্প এখনও প্লানিং পর্যায়ে রয়েছে। এলএনজির অগ্রগতি বেশি নেই।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, ভরতের সাবেক বিদ্যুৎ সচিব আর ভি শাহী,  বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেপুটি ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জীব চক্রবর্তী, আইবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী, বিশেষ উপদেষ্টা আব্দুল মাতলুব আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৪/ আপডেট ১৮৫০ ঘণ্টা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।