ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

শিল্পাঞ্চল ছাড়া আর গ্যাস সংযোগ নয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫
শিল্পাঞ্চল ছাড়া আর গ্যাস সংযোগ নয় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট শিল্পাঞ্চল ছাড়া আর গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ‘ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।



প্রতিমন্ত্রী বলেন, আর কখনও আবাসিক এলাকা ও ক্যাপটিভ ক্ষেত্রে (জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ ‍উৎপাদন) গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না। তবে, যেসব শিল্প কারখানায় সংযোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংযোগ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা শিল্প-মালিকদের অনুরোধ করবো, তারা যেন নির্দিষ্ট অঞ্চলে শিল্প স্থাপন করেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন বিদ্যুতের কোনো লোডশেডিং নেই। বিতরণ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে নিরবচ্ছিন্ন ও প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। এ সমস্যাও একসময় মিটে যাবে।

লোডশেডিংমুক্ত বিদ্যু‍ৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য আর তিন বছর সময় চান প্রতিমন্ত্রী।

বহুজাতিক তেল কোম্পানি কনোকো ফিলিপসসহ অনেকে উৎপাদন ও বণ্টন চুক্তিতে (পিএসসি) গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে ‍আসছে। দাম বাড়ানো না হলে তারা বাংলাদেশের গ্যাস অনুসন্ধ্যান ও উত্তোলনে আগ্রহী নয়। বিদেশি কোম্পানিগুলো উদাহরণ দিয়ে আসছে মায়ানমারের চেয়ে অনেক কম দাম বাংলাদেশে।

কোম্পানিগুলোর এ ধরনের বক্তব্য ও প্রস্তাবের বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি বিভাগের সচিব আবুবকর সিদ্দিক বলেন, আমরা এখনও গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছি না। কারণ মায়ানমারের সঙ্গে আমাদের পরিস্থিতি মেলে না। মায়ানমার গ্যাস রপ্তানি করে। তাই দাম বাড়লে তাদের নিজেদের লাভ। আর বাংলাদেশ পুরো গ্যাস কিনে নেয়। ‍তাই দাম বাড়লে বাংলাদেশের লোকসান।

তবে পিএসসির অন্যান্য ক্ষেত্রে কিছুটা সংশোধনী আনা হচ্ছে, যেন বিদেশি কোম্পানিগুলো আগ্রহী হয়- জানান জ্বালানি বিভাগের সচিব।

আবু বকর সিদ্দিক আরও জানান, গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান মাল্টিক্লেইন জরিপ করা হবে। তার ভিত্তিতে দরপত্র আহ্বান করা হবে।

এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আমরা বাপেক্সকে শাক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছি। বাপেক্সের কর্ম-এলাকা বাদ দিয়ে স্থলভাগেও বিদেশি কোম্পানির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশ-ভারত যৌথ মালিকানায় নির্মাণাধীন থাকলেও বাংলাদেশ একাই প্রকল্পের ঋণ সংগ্রহের জন্য সভরেন্ট গ্যারান্টি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আমাদের দেশের মাটিতে হচ্ছে। এছাড়া, চুক্তিও এভাবেই করা হয়েছে।

কয়লাভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণে অগ্রগতি বেশি নেই স্বীকার করে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এগুলোতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়। বিনিয়োগ সংগ্রহ কর‍া যাচ্ছে না। আমরা আশা করছি, কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে।

এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়া জোরদার করার জন্য চেষ্টা চলছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কাতারের সঙ্গে সম্পাদিত সমঝোতা চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিশ্বের অনেক দেশের বড় বড় কোম্পানি এলএনজি সরবরাহে আগ্রহ দেখিয়েছে।
 
নসরুল হামিদ বলেন, পাইপ লাইনে আর আবাসিকে গ্যাস দেওয়া হবে না। সরকার এলপিজিকে সহজলভ্য করতে নীতিমালা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হচ্ছে। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও বোতলজাত গ্যাস গ্রাহকের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা হবে।

আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান মোল্লা আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জ্বালানি বিভাগের আরেক সচিব মনোয়ার ইসলাম, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল হাসান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫/আপডেট ২০১৩ ঘণ্টা
এসআই/এসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।