ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

আরো নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান!

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৫
আরো নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান!

ঢাকা: মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে আরো নতুন গ্যাসক্ষেত্র পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ। সে কারণে ওই এলাকায় কূপ খনন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।


 
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) পরিচালিত দ্বিমাত্রিক সিসমিক সার্ভেতে গ্যাসের স্ট্রাকচারের প্রাথমিক ধারণা পাওয়া গেছে। ওই এলাকায় বাপেক্সকে কূপ খনন করার জন্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব আবুবকর সিদ্দিক।
 
তিনি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) ওই এলাকায় কূপ খনন করবে। সেখান থেকে বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস উত্তোলন সম্ভব কিনা তাও যাচাই করবে। তাদের প্রস্তাবনা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
 
বাপেক্সের টু-ডি সার্ভে বিভাগের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে গ্যাস আছে বা নেই কোনোটাই বলতে চাইছি না। টু-ডি সার্ভের ডাটা প্রসেসিংয়ের কাজ চলছে। এরপর ইন্টারপ্রেটিশন (ব্যাখ্যা) শেষে সম্ভাবনা ইভ্যুলিয়েশন (মূল্যায়ন) করা হবে। তারপর প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যাবে।
 
পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক (মাইনিং) মকবুল-ই ইলাহী চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, কিছু কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে গ্যাস রয়েছে, কিন্তু পরিমাণে কম। সে কারণে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন সম্ভব হয় না।
 
তিনি বলেন, একটি কূপ খনন করতে ৫০-৭০ কোটি টাকা খরচ পড়ে। তাছাড়াও অনেক বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ে। খনিতে যদি বেশি পরিমাণ গ্যাস না থাকে, তাহলে লোকসান হবে। এ রকম পরিস্থিতিকে ‘পকেট গ্যাস’ বলা হয়, যা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন সম্ভব নয় বলে ঘোষণা করা হয়।
 
মকবুল-ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, কূপ খননের আগ পর্যন্ত নিশ্চিত করে কোনোটাই বলা সম্ভব নয়। তবে দ্বিমাত্রিক জরিপের ভিত্তিতে একটা ধারণা পাওয়া যায় মাত্র।
 
রাষ্ট্রীয় এই কোম্পানিটি সালদা, ফেঞ্চুগঞ্জ, শাহবাজপুর, সেমুতাং, সুন্দলপুর, শ্রীকাইল ও বেগমগঞ্জ গ্যাসফিল্ড থেকে ১২টি কূপ দিয়ে দৈনিক ১৩৬.২ মিলিয়ন ঘনফুট উত্তোলন করছে। দেশিয় কোম্পানি বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) ৫টি গ্যাসফিল্ডের ৩৮টি কূপ দৈনিক ৮২৪ মিলিয়ন ঘনফুট, সিলেট গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড ৫টি গ্যাসফিল্ডের ১৩টি কূপ দিয়ে ১৫৩.৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করছে।
 
অন্যদিকে, বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশ তিনটি গ্যাসফিল্ডের ৩৪টি কূপ দিয়ে দৈনিক দেড় ‍হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করছে। এ ছাড়া ক্রিস এনার্জি বাঙ্গুরা গ্যাসফিল্ড থেকে ৪টি কূপ দিয়ে দৈনিক ১০৫.৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেছেন, দেশে বর্তমানে প্রমাণিত ও সম্ভাব্য মিলে ১৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে। আর বছরে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। গ্যাস থাকলেও কূপের তিন/চার বছর পর থেকে চাপ কমে যাওয়ায় উৎপাদনও কমে যাবে।

তিনি জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রায় ৪২ শতাংশ, আবাসিকে ১২ শতাংশ,  সিএনজিতে ৬ শতাংশ, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৭ শতাংশ, সার উৎপাদনে ৪ শতাংশ এবং শিল্প, চা-বাগানসহ অন্যান্য খাতে ১৮ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৫
এসআই/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।