ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

নভেম্বরে মিলছে রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
নভেম্বরে মিলছে রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ

ঢাকা: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ব্যয়ের জন্য আগামী নভেম্বরের মধ্যে বড় অংকের অর্থ দেবে রাশিয়া। একটা থোক (থোক বরাদ্দ) এ অর্থ দেবে দেশটি।



সম্প্রতি বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এসব কথা বলেছেন।  

তিনি এও বলেছেন, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্য নিয়ে যাওয়ারও নিশ্চয়তা দিয়েছে রাশিয়া এছাড়া আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ৫৯তম বার্ষিক সম্মেলনে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অগ্রগতি সম্পর্কেও অবহিত করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারবে বলে আইএইএ-এর সম্মেলনে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কাজের অগ্রগিত জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় গত ১৪ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ১৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এর আগে জাতিসংঘের আনবিক শক্তি সংক্রান্ত সংস্থা আইএইএ-এর পক্ষ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পর্যবেক্ষণ করছে। এ ধরনের একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ায় বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে আইএইএ।

সংস্থাটির মহাপরিচালক ইউকিয়া আমানো এর প্রশংসা করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক।
স্থপতি ইয়াফেস ওসমান জানান, আইএইএ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট নিয়ন্ত্রণের সিমুলেটর কন্ট্রোল প্যানেল তৈরি ও প্রশিক্ষণে অর্থ দেবে। রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে এই সিমুলেটর কন্ট্রোল প্যানেল বসিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

‘সিমুলেটর প্যানেল তৈরি ও এর সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ কাজ কীভাবে পরিচালিত হয় সে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে,’ যোগ করেন তিনি।  
সম্মেলনে অংশ নেওয়ার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, সম্মেলনে রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তি সংস্থা রোসাটন-এর প্রধান কিয়াং কে এর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এ সময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
 
‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্য নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্য রাশিয়া নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে আমাদের। যদিও এ ব্যাপারে আগেও একই কথা হয়েছিল। তবে বিষয়টি এখন চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত  হয়েছে,’ বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ-রাশিয়ার মধ্যে পৃথক একটি চুক্তিও হবে।

প্রকল্প কী ধরনের সহযোগিতা নেওয়া হতে পারে? এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন টেকনিক্যাল সহযোগিতা নেওয়া দরকার। এসব কাজে যারা যুক্ত থাকবেন তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের বিষয়েও কথা হয়েছে। এরইমধ্যে ৫০ কর্মকর্তা মস্কোতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

সম্মেলনে ভারতীয় পারমাণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানালেন, এবিষয়ে ভারতেও কিছু ছোট ছোট টেকনিক্যাল বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কারণ ভারত রাশিয়ার সহযোগিতায় এবং রশিয়ার প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করেছে। দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। চুক্তি হয়েছে আরও ১০টি প্রকল্পের বিষয়ে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে দু’টো চুক্তি হয়েছে। চুক্তি দু’টোর আওতায় ৬৩ ধরনের ফিজিবিলিটি টেস্ট (সম্ভাব্যতা যাচাই), মূল কাজের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ, প্রি-কনস্ট্রাকশন, গুদাম নির্মাণ ও রাশিয়ান টেকনিশিয়ানদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। অক্টোবর বা নভেম্বরে আরও দুইটি চুক্তি হবে।

প্রকল্পের মাস্টার প্লান অনুযায়ী নিউক্লিয়ার পাওয়ার থেকে শতকরা ১০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।
 
রাশিয়ার প্রযুক্তি, অর্থায়ন ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। ২০২২ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে এই কেন্দ্র। প্রকল্পে ২ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
এসকে/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।