ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সিলেটে দেশের প্রথম পাতাল বিদ্যুৎ লাইন

নাসির উদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
সিলেটে দেশের প্রথম পাতাল বিদ্যুৎ লাইন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: বিশ্বের আধুনিক সব শহরের মতো সিলেটেও হচ্ছে পাতাল বিদ্যুৎ লাইন। পরীক্ষামূলক পাতাল বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

‘সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প’র আওতায় এ কাজ বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
 
এ প্রকল্পের অধীনে সিলেট উপ-শহরকে পাতাল বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি চার লাখ টাকা। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নতুন বছরের প্রথম দিকে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে তারা আশাবাদী।

এ প্রকল্পের আওতায় ৩৩ ও ১১ কেভি ক্যাবল লাইন, ৪০০ ভোল্টের নতুন ক্যাবল লাইন স্থাপন এবং ৩৩ ও ১১ কেভির ১৫টি উপ-বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনসহ পুরোনো লাইনকে নতুন লাইনে উন্নীত ও সংস্কার কাজ করা হবে। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৮শ ৬৭ কোটি টাকা।

তিন বছর মেয়াদে প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রীসভার বৈঠকে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করেছে। একনেকের সভায় পাস হলেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

প্রকল্প সচিব ও সিলেট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বিষয়টি জানিয়েছেন।  

তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মূল কাজ ধরা হয়েছে উপ-শহরকে পাতাল বিদ্যুৎ লাইনের আওতায় নিয়ে আসা। দেশে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে পাতাল বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের এ কাজটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পাতাল বিদ্যুৎ লাইন বসাতে হলে পরিকল্পিত শহরের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে উপ-শহর পরিকল্পনামাফিক হওয়াতে পরীক্ষামূলক কাজটি সেখানেই করা হবে।

নজরুল ইসলাম বলেন, ওভারহেড লাইনে সিস্টেম লস থাকে। বজ্রপাতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। তাছাড়া লাইনে গাছের ডালপালা জড়িয়ে বিদ্যুৎ সমস্যা দেখা দেয়। পাতাল বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন হলে এসব সমস্যা থাকবে না। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব।

বিশ্বের আধুনিক শহরগুলোতে পাতাল বিদ্যুৎ লাইন হওয়াতে তাদের বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় না বলে জানান তিনি।

উপ-শহর পানিতে ডুবে থাকে ও বৃষ্টি হলে উপ-শহরে পানি ওঠে, এতে পাতাল বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের পর সমস্যা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- ভারী প্লাস্টিকে মোড়ানো এসব লাইন পানিতে ডুবলেও সমস্যা হবে না।

তিনি আরও বলেন, উপ-শহরের সাড়ে সাত কিলোমিটারের ১১ কেভি লাইন মাটির নিচে স্থাপন করতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা এবং ৪০০ ভোল্টের ২৮ কিলোমিটার লাইনকে পাতাল লাইনে স্থাপন করতে নয় কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
 
প্রকল্পের আহ্বায়ক সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী রতন কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, পুরো বিশ্বে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে। বর্তমান সরকারও দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন চান। সে হিসেবে সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সিলেট নগরীর মানুষ আধুনিক শহরের মতো বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
 
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের কাজ শুরু হলে গ্রাহকদের ধৈর্য সহকারে সহযোগিতা করতে হবে। লাইন সচল রেখে এসব কাজ করা যাবে না। তাই লাইন সাময়িক বন্ধ হলে কাজের স্বার্থে গ্রাহকদের একটু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।    

বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
এনইউ/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।