ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

রাশিয়া থেকে আসছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের রিঅ্যাক্টর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২১
রাশিয়া থেকে আসছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের রিঅ্যাক্টর

ঢাকা: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্লান্ট পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাশিয়া। নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের ভিভিইআর ১২০০ চুল্লির জন্যে চুল্লিপাত্র এবং প্রথম দুইটি স্টিম জেনারেটর পাঠাবে।

 

রাশিয়ার জেএসসি এইএম টেকনোলজির ভল্গোদনস্ক শাখা (রোসাটমের যন্ত্র প্রস্তুতকারী শাখা এটোমএনার্গোম্যাস) প্রকল্পের এ মূল যন্ত্রাংশ তৈরি করেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন-রোসাটমের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, রিঅ্যাক্টরটি নির্মাণ প্রক্রিয়ায় ৭৬৮টি অপারেশন এবং ১৪৩টি কন্ট্রোলিং পয়েন্টসহ এটিকে নির্মাণ করতে মোট সময় লাগে ২ বছর। এই প্লান্টের বিশেষজ্ঞগণ উপরের ইউনিটের স্ট্যান্ডার্ড কভার যুক্ত হাইড্রলিক টেস্টসহ চুল্লি পাত্রটির সকল ধরনের পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষা চলাকালীন সময় চুল্লিটির অভ্যন্তরে ২৪.৫ এমপিএ চাপ সৃষ্টি করা হয় যা অপারেটিং চাপের চেয়েও ১.৪ গুন বেশি।  

যন্ত্রাংশ প্রস্তুতির শেষ ধাপ হলো অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশের পরীক্ষামূলকভাবে সাজানো। নকশা অনুযায়ী কোর ব্যারেল, কোর বাফেল এবং প্রতিরক্ষামূলক টিউব ইউনিটকে চুল্লি পাত্রের অভ্যন্তরে স্থাপন করা হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধিসহ এই প্লান্টের বিশেষজ্ঞরা যন্ত্রাংশের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এর মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত এই যন্ত্রাংশের জ্যামিতিক পরিমাপ, নকশা অনুযায়ী সারি এবং গুনগত মান নিশ্চিত করা হয়।

রিঅ্যাক্টর ও স্টিম জেনারেটর প্রত্যেকটির ওজন ৩৪০ টন ও এদের দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ১২ মিটার ও ১৪ মিটার। এগুলোকে প্রথমে প্লান্টের বিশেষ বার্থে নেওয়া হবে এবং সেখান থেকে যন্ত্রাংশগুলোকে জাহাজে করে জলপথে নভোরোসিস্কে নেওয়া হবে। সেখান থেকে এগুলো ১৪ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে ।

জেএসসি এইএম টেকনোলোজির ডিরেক্টর জেনারেল ইগোর কটভ এই জাহাজীকরনের বিষয়ে মতামত দিতে গিয়ে বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, এই কাজে আমাদের বাংলাদেশি সহযোগীদের যেকোনো জিজ্ঞাসা এবং অনুরোধের বিষয়ে আমরা অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের মূল যন্ত্রাংশগুলো ঠিক সময়মত পাঠানো হচ্ছে, যা সম্ভব হয়েছে আমাদের কার্যকর মিথস্ক্রিয়া ও আমাদের উপরে ভরসা রাখার জন্য, এ কারণে এই চালান বাংলাদেশের জন্যে একটি ধন্যবাদ। এখন পর্যন্ত, এটি এই আয়তনের শেষ চালান। এটি পারমানবিক শিল্পে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের প্রথম পদক্ষেপ এবং আমি বিশ্বাস করি আমাদের এই সহযোগীতা যেকোনো প্রকারে বজায় থাকবে।

রিঅ্যাক্টর প্লান্ট প্রস্তুতি অত্যন্ত উচ্চ প্রযুক্তির একটি কাজ যার দক্ষতা বিশ্বে গুটিকয়েক দেশের আছে। জেএসসি এইম টেকনোলোজি রাশিয়ার একমাত্র কোম্পনি যা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্টিম জেনারেটিং প্লান্টের সম্পূর্ণ অংশ তৈরি করে। অ্যাটোমম্যাস বছরে সর্বোচ্চ ৪ সেট যন্ত্রাংশ প্রস্তুত করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২১
এসকে/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।