ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

ভোলায় খনন হচ্ছে আরও ৩টি গ্যাস কূপ

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২১
ভোলায় খনন হচ্ছে আরও ৩টি গ্যাস কূপ

ভোলা: বিপুল পরিমাণ গ্যাসের সন্ধান মিলেছে ভোলায়। এ গ্যাসের ওপর নির্ভর করেই একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে।

এতে একদিকে যেমন জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে অন্যদিকে বিপুল সংখ্যক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হবে।

খুব শিগগিরই জেলায় আরও তিনটি কূপের খননকাজ শুরু হবে। ইলিশা-১, ভোলা নর্থ-২ এবং টবগি-১ নামের এ তিনটি কূপের খনন শুরু হবে আগামী বছরের শুরুতে।

এর আগে বাপেক্সের একটি অনুসন্ধান দল ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ করে জেলার আলাদা তিনটি স্থানে গ্যাসের সন্ধান পায়। এসব কূপের খনন শুরু হলে জেলায় সর্বমোট কূপের সংখ্যা দাঁড়াবে নয়টিতে।

বাপেক্স জানিয়েছে, জেলার বোরহানউদ্দিনের শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের চারটি কূপ ছাড়াও শাহবাজপুর ইস্ট এবং ভোলা নর্থ নামে আরও একটি গ্যাস ক্ষেত্রের দুটি কূপে মোট গ্যাসের মজুদের পরিমাণ প্রায় ১.৩ টিসিএস (ট্রিলিয়ন কিউবিট ফিট)।  

এর মধ্যে নতুন আবিষ্কৃত শাহবাজপুর ইস্ট কূপে মজুদ রয়েছে ৭শ বিসিএফ এবং ভোলা নর্থ গ্যাস ক্ষেত্রে রয়েছে প্রায় ১ টিসিএফ ঘনফুট গ্যাস।

বাপেক্সের উপ-ব্যবস্থাপক সৌমিত্র পাল চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বাপেক্সের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপে ইলিশা, দক্ষিণ চরপাতা এবং টবগীতে গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে।  তবে সেখানে কি পরিমাণ গ্যাস রয়েছে তা প্রাথমিকভাবে বলা যাচ্ছে না। রাশিয়ান কোম্পানি গ্যাস ফ্রোম নতুন তিনটি কূপের খননকাজ করবে। জেলায় ইতোমধ্যে ছয়টি কূপ খনন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই আরও তিনটি খনন করা হবে।

সূত্র জানিয়েছে, জেলায় প্রাকৃতিক গ্যাসের যে মজুদ রয়েছে তা ভবিষ্যতে মোট মজুদের প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে। এজন্যই বলা চলে গ্যাসে ভাসছে ভোলা।   

বাপেক্স জানিয়েছে, বর্তমানে ভোলাতে যে পরিমাণ গ্যাস মজুদ রয়েছে তার মধ্যে প্রতিদিন উত্তোলন হচ্ছে ৬৫ বিলিয়ন ঘনফুট। যা চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, একটি কারখানা ও বেশ কিছু গৃহস্থালী কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বাপেক্সের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভোলার গ্যাস আপাতত বাইরের জেলায় যাচ্ছে না, তবে ভোলা-বরিশাল ব্রিজ হলে তখন হয়তো সরবরাহ করা হতে পারে।  

জানা গেছে, শাহবাজপুর ইস্ট নামে একটি কূপ এবং নর্থ গ্যাস ক্ষেত্রে গ্যাসের মজুদ থাকলেও সেখান থেকে আপাতত গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে না, তবে এসব কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। নতুন কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান বা বিদ্যুৎ কেন্দ্র না থাকায় গ্যাসের ব্যবহার কম হচ্ছে। এ জেলায় আরো বিপুল পরিমাণ গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

সাতটি উপজেলা, পাঁচটি পৌরসভা ১০টি থানা এবং ৬৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত দ্বীপজেলা ভোলার আয়তন প্রায় ৩ হাজার ৪০৪ বর্গমিটার। এখানে গ্রাম রয়েছে ৭৭৩টি। এ জেলার জনসংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। এ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে মেঘনা, তেঁতুলিয়া এবং ইলিশা নদী।

এছাড়াও ২৭ হাজার ৫২৩ হেক্টর এলাকা নিয়ে বনাঞ্চল রয়েছে।  

এদিকে ভোলার গ্যাস ব্যবহারের মধ্য দিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান হলে আগামী কয়েক বছর পর একটি উন্নয়নশীল জেলায় রূপান্তিত হবে ভোলা এমনটিই মনে করছেন ভোলাবাসী।

জানা যায়, ১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নে শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার হয়। সেখানে চারটি কূপ খনন হয়েছে। বর্তমানে ১, ২ ও ৩ নম্বর কুপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রে মজুদ রয়েছে প্রায় ১.৩ টিসিএফ ঘনফুট গ্যাস।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০২১

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।