ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

‘বিদ্যুৎ পেলে নেপালে সার কারখানা স্থাপন নিয়ে আলোচনা করব’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
‘বিদ্যুৎ পেলে নেপালে সার কারখানা স্থাপন নিয়ে আলোচনা করব’ কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক

ঢাকা: কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, সস্তায় বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে নেপালে সার কারখানা স্থাপনের বিষয়ে নীতিনির্ধারণী মহলে আলোচনা করা হবে। বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নেপালে সার কারখানা স্থাপনের একটি প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রীর নিজ দফতরে নেপালের বিদ্যুৎ, পানি ও কৃষিমন্ত্রী পম্পা ভূসালের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, পানির ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেক সস্তা ও নিরাপদ। নেপাল যদি বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দেয়, তাহলে আমরা অনেক কম দামে বিদ্যুৎ পেতে পারি। একই সঙ্গে সে দেশে যদি সার কারখানা স্থাপন করা যায়, তাহলে সে দেশের বিদ্যুৎ দিয়ে সার উৎপাদন করে দেশে আনা যাবে। এতে সারের দাম অনেক কম পড়বে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, নেপাল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছেন। নেপালের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গভীর। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক, ব্যবসা- বাণিজ্য, সামাজিক রীতি সংস্কৃতিতে আমাদের অনেক মিল রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে। আমাদের দু’টি দেশই কৃষি প্রধান দেশ। অর্থনীতির একটি বিরাট অংশ জুড়ে কৃষি জড়িত। নেপালেরও প্রধান খাদ্য আমাদের মতো ভাত-ডাল।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, নেপালের ৯০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা আছে। তারমধ্যে ৪০ হাজার উৎপন্ন করতে পারছে। তারা মূলত ভারতকেই বেশি বিদ্যুৎ দেয়। আমরা বলেছি আমাদেরও বিদ্যুৎ দাও। তারা বলেছে আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নেপালে সার তৈরির কারখানা করো। যদি সস্তায় বিদ্যুৎ পাওয়া যায় তাহলে আমরা চিন্তা করতে পারি। কারণ সার তৈরিতে অনেক বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। আমি এ প্রস্তাবটি নিয়ে নীতিনির্ধারণী মহলে আলোচনা করবো।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা কাতার সৌদিআরব থেকে সার আমদানি করি, নেপালে কারখানা করা গেলে অনেক সুবিধা হবে। তারা প্রস্তাবটি দিয়েছে। এছাড়া আমরা পাহাড়ি কৃষির অভিজ্ঞতা তাদের কাছে চেয়েছি। আমরা বাদাম, কফি চাষ বাংলাদেশে প্রবর্তন করতে যাচ্ছি। অনেক গুরুত্ব দিচ্ছি ও অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। সেক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো।

বাংলাদেশ কি তাহলে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ কিনতে চায় এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি কারখানা করি নেপাল সস্তায় বিদ্যুৎ দিলে বিদ্যুতের দাম কমবে। তারা সে দেশে সার কারখানা তৈরিতে বিদ্যুৎ দিতে চায়। পাশাপাশি আমাদের দেশেও বিদ্যুৎ দিতে চায়।

কৃষিখাতে অনেক সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিক্ষেত্রে আমাদের সাফল্য রয়েছে। যেমন আমরা ধানের নতুন নতুন জাত আবিষ্কার করেছি। বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছি। আমাদের কৃষি অনেক উন্নত তাই নেপাল আমাদের কাছ থেকে সহযোগিতা চায়। এজন্য আমাদের বিজ্ঞানীরা নেপাল যেতে পারেন। তাদের বিজ্ঞানীরা বাংলাদেশে আসতে পারেন। উন্নত জাতের বীজ তাদের দিয়ে আমরা সহযোগিতা করবো।

তিনি বলেন, কৃষির উন্নয়নের ক্ষেত্রে তারা আমাদের থেকে পিছিয়ে আছে বলবো না। আমাদের কৃষি ক্ষেত্রে অনেক সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে। সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি সেটি হলো, অনেক নদী নেপাল ও ভারত থেকে আমাদের দেশে এসেছে। আমরা এ মুহূর্তে মাটির নিচের পানি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু মাটির নিচের পানির স্থর নিচে নেমে যাচ্ছে। সেজন্য আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি মাটির উপরিভাগের পানি ব্যবহারে। পানির প্রবাহ বেশি না থাকলে এটা আবার করা যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
জিসিজি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।