ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

মানিকগঞ্জে শহর ও গ্রামে বৈষম্যের লোডশেডিং

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২২
মানিকগঞ্জে শহর ও গ্রামে বৈষম্যের লোডশেডিং

মানিকগঞ্জ: জেলায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিং চলছে সবখানে। কিন্তু শহর আর গ্রামে এ নিয়ে চলছে বৈষম্য।

জানা গেছে, জেলায় প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১৪৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হলেও সরবরাহ ১০০ থেকে ১১১।  এ কারণেই চলছে লোডশেডিং।  

শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিং বেশি হলেও এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ভিন্ন মত।

জানা যায়, মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মানিকগঞ্জ জোনাল অফিসের অধীনে ২১টি সাব স্টেশন রয়েছে। আর এই স্টেশনগুলোর মাধ্যমে ৩ লাখ ৬৭ হাজারের কিছু বেশি গ্রাহক রয়েছে জেলায়। গত ৩ জুলাই রাত ৯টার দিকে ১৪৮ মেগাওয়াটের বিপরীতে ছিল ১২৩, ৪ জুলাই রাত ৯টার সময় চাহিদার চেয়ে ৩৩ মেগাওয়াট এবং ৫ জুলাই ৩৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম ছিল। দিনের বেলায় লোডশেডিং কম হলেও রাতে তা বেড়ে যায় কয়েকগুন। দিনের বেলায় শহরে লোডশেডিং নেই বললেই চলে কিন্তু গ্রামের চিত্র ভিন্ন। রাতদিন গ্রামীণ জনপদের অবস্থা একই। এই বৈষম্য নিয়ে সমালোচনা চলছে। শহরে সরকারি অফিস আদালত থাকায় লোডশেডিং কম। কিন্তু অবহেলিত গ্রামীণ জনপদের বেলায় ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ মিলছে ১৬ ঘণ্টা। এক্ষেত্রে গ্রামের মানুষকে অবহেলা করা হচ্ছে বলেও মত প্রকাশ করেছেন অনেকেই।  

ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া এলাকার দেওয়ান সফিক বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই বিদ্যুৎ আসে আর যায়, প্রথমে ভাবছিলাম হয়তো এই সমস্যা শুধু আমার এলাকায়। এখন তো দেখি সারা উপজেলায় এই চিত্র। তবে জেলা ও উপজেলা শহরে কিন্তু তেমন একটা বিদ্যুৎ যায় না।  

ওই এলাকার কলেজ পড়ুয়া ছাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, সারাদিন তো কেটে যায় নানা ব্যস্ততার মাঝে, সন্ধ্যার দিকে একটু পড়তে বসবো, ওই সময়টাতে বিদ্যুৎ থাকে না। কোনো কারণে যদি বিদ্যুৎ অফিসের হট লাইনে ফোন দেই, তখন তারা কোনো ধরনের কথা না শুনেই খারাপ আচরণ করে ফোন রেখে দেয়।  

সাটুরিয়া উপজেলার আওয়াল নামে এক যুবক বলেন, দিনের বেলায় তিন থেকে চার বার লোডশেডিং হয়। প্রতিটি লোডশেডিং প্রায় আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার বেশি সময়ও থাকে। রাতে দিনের চেয়ে আরও বেশি লোডশেডিংয়ের শিকার হতে হয়। আমরা যারা গ্রামে বসবাস করি, আমাদের অনেক আত্মীয় শহরে বসবাস করে তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা অবাক হয়ে যায়, এত লম্বা লোডশেডিংয়ের কথা শুনে। শহরের অনেক অফিস পাড়ায় অযথা লাইট ফ্যান চলে সেখানে সাশ্রয়ী না হয়ে যত লোডশেডিং গ্রামে।

মানিকগঞ্জ পল্লী বিদুৎ সমিতি, মানিকগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় যে পরিমাণ চাহিদা সেই তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম। আর এ কারণে সব জায়গাতে লোডশেডিং হচ্ছে। ঢাকার সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জ এই তিনটি গ্রেড থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে চলতে হয় আমাদের। তবে এখন লোডশেডিং সারা দেশেই হচ্ছে। দিনের বেলায় শহরের তেমন লোডশেডিং হয় না কারণ সরকারি অফিস চলমান থাকে। আর ওই সময়টাতে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং হয়। মানুষ যাতে সঠিক সেবা পায় সে জন্য শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হচ্ছে আমাদের।  

শহর ও গ্রামীণ জনপদে বৈষম্য অনুসারে কি লোডশেডিং হয়, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। তবে গ্রামে দিনের চেয়ে সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ বেশি প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
 
বাংলদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।