খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে সরকারি অধিকাংশ দপ্তরের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া বছরের পর বছর। গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি মাসে ব্যবহৃত ইউনিটের বিপরীতে বিল পরিশোধের নিয়ম থাকলেও তা মানার যেন বালাই নেই পাহাড়ি এই জেলায়।
সম্প্রতি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বকেয়া বিল পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তৎপরতা বাড়িয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সরকারি খাতের টাকা পরিশোধে আশ্বাস দিচ্ছেন বকেয়ার তালিকায় থাকা দপ্তরের বিভাগীয় প্রধানরা।
খাগড়াছড়ি জেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল বকেয়া খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের ৭০ লাখ টাকা, রামগড় পৌরসভার ৪৫ লাখ টাকা, সদর উপজেলা পরিষদের ১০ লাখ টাকা, গণপূর্ত বিভাগের ১২ লাখ টাকা, রামগড় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৬ লাখ টাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৪ লাখ টাকা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের নামে ৩ লাখ টাকাসহ সরকারি পর্যায়ে বকেয়া ২ কোটি টাকার কাছাকাছি।
বকেয়া পরিশোধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কাছে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। আর্থিক বরাদ্দ পেলে ও অধীনস্থ দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় সভার মাধ্যমে পরিশোধের কথা বলছেন অনেক বিভাগীয় প্রধান।
খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বনবিভাগের সরকারি কোন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া নেই। যা আছে তা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক বিল। ইতোমধ্যে তাদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
বকেয়া থাকার কথা স্বীকার করে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ বিল রাজস্ব খাত থেকে দেওয়া হয়। আমাদের কিছু বিদ্যুৎ বিল আছে ঠিকই। যা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে পরিশোধের ব্যবস্থা করব।
স্থানীয় রাজস্ব আয়ে যাবতীয় ব্যয় মেটাতে হয় পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের। রামগড় পৌরসভার আয় না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যা। তবে বকেয়া পৌর কর আদায় করে দ্রুত বিল পরিশোধ করার উদ্যোগের কথা বলছেন পৌরমেয়র। অন্যদিকে বিদ্যুৎখাতে বকেয়ার বিষয়টি অজানা জানিয়ে খবর নেওয়ার আশ্বাস পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যানের।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, এতদিন বিষয়টি নজরে আসেনি। এখন যেহেতু জেনেছি আমি পরিশোধের ব্যবস্থা করব। বোর্ডের কোষাগার থেকে সহসা দেওয়া হবে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার বৈঠকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ও আদায় নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর মাঠে তৎপরতা বাড়িয়েছে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ। বিল পরিশোধে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি আইন প্রয়োগের কথা বলছেন বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।
বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার বলেন, জেলা প্রশাসনের সম্মেলন সভায় এই বিষয় উত্থাপন করে সরকারি বিল পরিশোধের জন্য জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়িতে ১৩টি উপ কেন্দ্রে গ্রাহকের সংখ্যা ৭৭ হাজার ৫৪৭টি। দৈনিক বিদ্যুৎয়ের চাহিদা ৩৭ মেগা ওয়াট।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২২
এডি/এএটি