ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

ফাঁকা বাড়ির বিদ্যুৎ বিল সাড়ে ১১ লাখ টাকা! 

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২
ফাঁকা বাড়ির বিদ্যুৎ বিল সাড়ে ১১ লাখ টাকা! 

পাবনা: পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের একটি আবাসিক ভবনের মিটারে ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল আসার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ভবনে কেউ বসবাস না করলেও বিদ্যুৎ বিল এসেছে জরিমানাসহ ১১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮৭ টাকা! 

আর ব্যবহার হয়েছে ৯০ হাজার ১৫০ ইউনিট।

বিল প্রস্তুত কারক আসমা ও এ জিএম অর্থ এর স্বাক্ষর রয়েছে বিলে।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে ঘটনাটি নিয়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।  

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চাটমোহরের পৌর এলাকা অধীর কুমার সরকারের বাড়ি এসে বিলটি দিয়ে যাওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এমন ভূতুড়ে বিল দেওয়ার প্রতিবাদ করলে রাতেই আরেকটি বিল দিয়ে যাওয়া হয়।  

অধীর কুমার সরকার অনেক আগেই মারা গেছেন। তার সন্তানরা থাকেন ভারতে। বাড়িতে কেউ থাকেন না। এক প্রতিবেশী বাড়ির দেখাশোনা করেন।  

স্থানীয়রা জানান, গত ছয় মাস ধরে কোনো সদস্যই থাকেন না ওই বাড়িতে। এ রকম ভৌতিক বিল দেওয়া পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ-১ সমিতির অফিসের জন্য নতুন কোনো বিষয় না। এমন ঘটনা ঘটলেও পবিস-১ প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে। জোর করেই দোষ চাপানো হয় গ্রাহকের ঘাড়ে। এ অফিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, অদক্ষ অপারেটর দ্বারা বিদ্যুৎ বিল তৈরির ফলে বিদ্যুৎ বিলের কপিতে গ্রাহকের নাম, বাবার নাম, মোবাইল নম্বর ভুলে ভরা। তারা মিটার রিডিং না করে অফিসে বসেই বিদ্যুৎ বিল তৈরি করেন। এ জি এম অর্থর এ বিল ক্রসচেক করার স্বাক্ষর থাকলেও তিনি কিছুই করেন না। এছাড়া মিটারে কম বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখিয়ে বছর শেষে হাতিয়ে নেওয়া হয় অতিরিক্ত টাকা। ফলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় তিন লাখ গ্রাহক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার গিয়ে অধীর কুমার সরকারের জিরো পয়েন্ট বাড়ির ৪৭৬৬ নং হিসাবের সেপ্টেম্বর-২২ মাসের বিদ্যুৎ বিল দায়িত্বরত লোকের কাছে দেন। এ সময় বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ দেখে আঁতকে ওঠেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে মিটার রিডারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি দেখছি বলে বিলের কপিটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেটি দেওয়া হয়নি। পরে রাতেই আবার নতুন করে প্রিন্ট দেওয়া হয় বিল। তার আগে এ জি এম অর্থকে দিয়ে জোর করে আগের বিল নিয়ে নতুন বিল চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন মিটার রিডার। সংশোধনের পর বিল এসেছে ৮৬৬ টাকা।  

এ ব্যাপারে বিল প্রস্তুতকারী আসমা খাতুন ভুল স্বীকার করে বাংলানিউজকে জানান, মানুষই তো ভুল করে। কাজ করতে গেলে একটু ভুল হতেই পারে।   

পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ- ১ এর জেনারেল ম্যানেজার আকমল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, আমাদের চার লাখ গ্রাহক রয়েছে।  
কখনো কেউ অভিযোগ করেনি। আর একটা আবাসিক বাড়িতে তো এত টাকা বিল হয় না। তবে ভুলটা আমাদের। আমরা স্বীকার করছি। ইচ্ছা করে তো কেউ ভুল করে না।  

তিনি আরও বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা মাত্র ৮৬৬ টাকা বিল তৈরি করে পুনরায় বিলটি দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই বাড়িতে এখন যিনি থাকেন, তিনি রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।