ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২য় ইউনিটে রিঅ্যাক্টর স্থাপন 

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২য় ইউনিটে রিঅ্যাক্টর স্থাপন 

রূপপুর (ঈশ্বরদী, পাবনা) থেকে: নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) দ্বিতীয় ইউনিটে রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লিপাত্র) স্থাপন করা হয়েছে৷ এর মধ্য দিয়ে এ প্রকল্পের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এগিয়ে গেল৷

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের উদ্বোধন করেন৷ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি ছিলেন৷ 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান৷ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ প্রকল্পের নির্মাণ সংস্থা রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ৷

রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুমতি চান আলেক্সি লিখাচেভ৷

প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দেওয়ার পর রিঅ্যাক্টর ভবনে সেটি স্থাপন করা হয়৷ এ সময় রিঅ্যাক্টর ভবনে ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর৷ ক্রেনের মাধ্যমে রিঅ্যাক্টরটি নির্দিষ্ট স্থানে বসানো হয়৷ এরপর জয়বংলা স্লোগান ধ্বনিত হয় সবার কণ্ঠে৷

এ রিঅ্যাক্টর স্থাপনের সার্বিক প্রস্তুতি এর আগেই সম্পন্ন করা হয়৷ রিঅ্যাক্টর স্থাপন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ এটা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য মাইলফলক অগ্রগতি। কারণ রিঅ্যাক্টর ভেসেলকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হার্ট বলা হয়।

এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর প্রথম ইউনিটে রিঅ্যাক্টর স্থাপন করা হয়৷ দেশের প্রথম এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরুর পরই বাংলাদেশ বিশ্ব পরমাণু ক্লাবের ৩১তম সদস্য হয়৷ পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে আন্তর্জাতিক পারমাণু শক্তি সংস্থা (রআইএইএ) অনুমোদনে নিয়ে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়৷

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর ইউনিয়নে রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, আর্থিক ও প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সার্বিক সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও ব্যয় বহুল প্রকল্প৷ শেখ হাসিনার সরকারের অগ্রাধীকার প্রকল্পের মধ্যে এটি অন্যতম। এ প্রকল্পে স্থাপন করা হলো রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বশেষ প্রযুক্তি থ্রি জি (প্লাস) ভিভিইআর ১২০০ মডেলের রিঅ্যাক্টর৷ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) প্রকৌশল শাখা অ্যাটমোস্ত্রয় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে৷ প্রতিটি ইউনিটে ১২০০ মেগাওয়াট করে মোট ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এ প্রকল্পে৷ এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির স্থায়িত্ব হবে ৬০ বছর৷ এরপর এটির মেয়াদ ২০ বছর বাড়িয়ে ৮০ বছর করা যাবে৷ পুনরায় এক্সটেশন করে আরও ২০ বছর বাড়ানোর ব্যবস্থা করা যাবে৷ সব মিলিয়ে দুই ধাপে ২০ বছর করে বাড়িয়ে মোট ১০০ বছর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে থাকতে পারবে৷ এ প্রকল্পের লাইফ টাইম (পুরো সময়) জ্বালানি ইউরেনিয়াম সরবরাহ করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সরবরাহ কোম্পানি টিভিইএল৷ আগামী বছর অক্টোবরের মধ্যে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আসা শুরু হবে৷ জ্বালানি আনার দুই মাসের মধ্যে লোডিং করতে হবে৷

বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
এসকে/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।