ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

নিউইয়র্কে জাঁকালো আয়োজনে দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব শুরু

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৩
নিউইয়র্কে জাঁকালো আয়োজনে দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব শুরু

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাঁকালো আয়োজনে দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব শুরু হয়েছে।  

স্থানীয় সময় শনিবার (৬ মে) নিউইয়র্কের জামাইকার পারফরমিং আর্টস সেণ্টারে দুই দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত সঙ্গীতজ্ঞ ড. রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।

উৎসবে পদ্মভূষণপ্রাপ্ত নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি ভিডিও বার্তায় তার বক্তব্য দেন।  

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম এবং ভারতের কনসাল জেনারেল রণধীর জয়সয়্যাল।  

যুক্তরাষ্ট্রে বঙ্গ সম্মেলনখ্যাত ভারতীয় বাঙালিদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বঙ্গ সংস্কৃতি সংঘ বা কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল-সিএবি এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠান বাংলা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সহযোগী সংগঠন হিসেবে এতে যুক্ত হয়।  

আয়োজকদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এসব তথ্য জানিয়েছে।

অনুষ্ঠানের বিভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থিত ছিলেন একুশ পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক ড. জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ও মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাষাবিজ্ঞানী ড. পবিত্র সরকার, ভারতীয় লেখক আলোলিকা মুখোপাধ্যায়, ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকার, প্রাবন্ধিক ও বক্তা চন্দ্রিল ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের স্বনামখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।  

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশধর, শিল্প-ইতিহাসবিদ, খ্যাতিমান গ্যালারিস্ট সুন্দরম ঠাকুরও উৎসবে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও ভারত, বাংলাদেশ, ব্রিটেন, জার্মানী, কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২৫টি অঙ্গরাজ্য থেকে কবি, লেখক, সাহিত্যিক, শিল্পী, কলাকুশলী ও রবীন্দ্র অনুরাগীরা অংশ নেন। বাংলাদেশি, ভারতীয়দের অন্তত ১৫টি সংগঠন উৎসবে অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে ভিন্ন ভাষাভাষী বিদেশি সংগঠনও পারফর্ম করেন।

নোবেলজয়ী প্রথম বাঙালি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দর্শন, চিন্তা-ভাবনা, আদর্শ অভিবাসী জীবনে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যই মূল লক্ষ্য বলে জানান আয়োজকরা। প্রথম দিনের রবীন্দ্র উৎসবে অনেক কিছুই ছিল ব্যতিক্রমী আয়োজন, যা উৎসবকে ভিন্নমাত্রা এনে দেয়।

প্রথম দিনের উৎসবে বাংলাদেশি আমেরিকান শিল্পীরা রবি ঠাকুরকে শৈল্পিকভাবে তুলে ধরেন তাদের চারুশিল্পের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজস্ব আঁকা ছবিও প্রদর্শনী হয়। উৎসব প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয় রবি ঠাকুরের একটি ভাস্কর্য। নতুন প্রজন্মের কাছে রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ তর্কে-বিতর্কে এবং বিদেশিদের চোখে রবীন্দ্রনাথ শীর্ষক তিনটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম দিনের উৎসবে সুমন মুখোপাধ্যায়ের চলচ্চিত্র ‘শেষের কবিতা’ এবং ‘তাসের দেশ’ ও ‘রক্ত করবী’, ‘ভানু সিংহের পদাবলী’ গীতি নৃত্যনাট্য নৃত্যনাট্য পরিবেশিত হয়। স্ত্রীর পত্র ও মিছে কোলাহল নামে দুটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন নিউ ইয়র্কের শ্রী চিন্ময় সেন্টারের ৩০ জন বিদেশি শিল্পী।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর সৃষ্টি, শ্রেষ্ঠ চরিত্রগুলো নিয়ে প্রীতি বিতর্ক, রবি ঠাকুরের জীবনে নারীর ভূমিকা শীর্ষক দুটি অনুষ্ঠান ‘ওরা সন্ধ্যার মেঘমালা’ এবং ‘কার মিলন চাও বিরহী’ পরিবেশিত হবে।

শনিবার (৬ মে) দুপুরে সাহিত্য একাডেমির সহযোগিতায় রবীন্দ্র সাহিত্য সম্মেলনের উদবোধন করেন জোতিপ্রকাশ দত্ত। প্রধান অতিথি ছিলেন ড. নুরুন নবী। মৃদুল আহমেদের উপস্থাপনায় ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন সোনিয়া কাদের, এবিএম সালেহ উদ্দিন, পলি শাহিনা, আবু সাঈদ রতন, লায়লা ফারজানা ও শেলী জামান খান।

রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান ও চিন্তাহম নিয়ে আলোচনা করেন ড আশরাফ আহমেদ। সঙ্গীত ও কথামালায় রবীন্দ্রনাথের বাউল গানের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন মাহমুদ হোসেন দুলু, গীতাঞ্জলী ও নোবেল নিয়ে আলোচনা করেন সউদ চৌধুরী, আব্দুল্ললাহ জাহিদ আলোচনা করেন আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ। মনিজা রহমানের উপস্থাপনায় রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র নিয়ে আলোচনা করেন মঞ্জুর আহমেদ।

মনজুর কাদেরের পরিচালনায় কবিতা পাঠে অংশ নেন-শামস আল মমীন, কাজী আতিক, রানু ফেরদৌস, ফারহানা ইলিয়াস তুলি, নীরা কাদরী, এইচবি রিতা, রওশন হাসান, খালেদ শরফুদ্দিন, শামস চৌধুরী রুশো, ইশতিয়াক আহমেদ রুপু, নোয়ার সেলিম, সুরীত বড়ুয়া, বেঞ্জির শিকদার, সালেহীন সাজু, লুৎফা হক ও তাহমিনা খান, ফারহানা হোসেন, ভায়লা সালিনা, সোহানা নাজনীন, সবিতা দাস, মিয়া আস্কির, সুলতানা ফিরদৌসী, রুপা খানম ও তামান্না আহমেদ।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের শুরুতেই তিন দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হলেও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত সবার শেষে পরিবেশন করায় উপস্থিত দর্শকদের মাঝে দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন অনেকেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।