বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকেই বাংলাদেশের মত সারা বিশ্বের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব। তারই পরিক্রমায় ধর্মীয় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জার্মানিতেও শুরু হলো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান।
দিনটিতে ধর্মীয় অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল ভিক্ষু সংঘের প্রাতরাশ, শান্তির শোভাযাত্রা এবং ধর্মসভা, শীল গ্রহণ, বিদর্শন ভাবনা অনুশীলন, পুণ্যদান ও বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের জন্য বিশেষ প্রার্থণা। বৌদ্ধদের এই চীবর দানের তাৎপর্য বিষয়ে বিহারাধ্যাক্ষ জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিক্ষুদের এই পরিধেয় বস্ত্র চীবর বুনন ও তৈরি করে তা ভিক্ষুসংঘকে দান করতে হয় বলে এটিকে বলা হয় কঠিন চীবর দান। এই মহতী ধর্মীয় দিনে সবার উদ্দেশ্যে মৈত্রীময় শুভেচ্ছাও জানান চীবর দান অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া পূজনীয় ভিক্ষুসংঘ।
ধর্ম দেশনায় চীবর দানের ফল বর্ননায় ভিক্ষুরা বলেন, আজকে আমাদের বিশেষ একটি দিন। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা এই চীবর তৈরি করে তা বর্ষাবাস শেষ করা ভিক্ষুদের উদ্দেশ্যে দান দিয়ে থাকেন। এই মহান দিনে সবাই যেভাবে পারষ্পারিক সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন তা অতুলনীয়। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।
আজ আমরা বার্লিনের বৌদ্ধ বিহারে অনেক দেশের ধর্মপ্রিয় বৌদ্ধরা এক হয়েছি দানোত্তম কঠিন চীবর দান উপলক্ষে। এই দিন বৌদ্ধদের জন্য পরম পূণ্য সঞ্চয়ের দিন। দান শীল ভাবনায় নিরত থেকে সকলে যেভাবে চীবর দানে অংশ নিল তা জন্ম জন্মান্তরের সকলের হীতের কারণ হবে। কঠিন চীবর দানের ফল অনেক। জন্ম জন্মান্তরে তার সুফল ভোগ করার সুযোগ আছে এই দানের ফলে। সকল বৌদ্ধদের জীবনে অন্তত একবার হলেও চীবর দানের মত মহতী কাজে অংশ গ্রহন করে থাকে।
বিকেলে মহাকারুনিক গৌতম বুদ্ধের প্রচারিত মৈত্রী, সাম্য ও অহিংস ধর্ম ও চীবর দান নিয়ে ধর্মীয় সভার আয়োজন করা হয়।
সন্ধ্যায় জগতের সকল সৃষ্টির কল্যাণে আয়োজন করা হয় সমবেত প্রার্থনার। আর এমন হাজার বছরের ধর্মীয় উৎসবে বাংলাদেশিদের সাথে যোগ দিতে পেরে খুশী চীন, জাপান, ভিয়েতনামসহ স্থানীয় জার্মান বৌদ্ধরাও। বার্লিন ছাড়াও দেশটির ১৬টি অঙ্গরাজ্যের সব বিহারেই পর্যায়ক্রেমে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায় দেশটির ভিক্ষুসংঘ।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক