পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান, অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসাবে ১৭ মার্চ, ২০২২ তারিখে কাবো ভার্দে (কেপ ভার্দে)-এর সাঁও ভিসেন্তে দ্বীপের মিন্ডেলো নগরীতে আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে দেশটির রাষ্ট্রপতি জোসে মারিয়া পেরেইরা নেভেসের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়পত্র পেশের পর সে দেশের রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের মধ্যে একটি সৌজন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান কাবো ভার্দে-এর রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। এ সময় তিনি দু’দেশের বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে গতিশীল করার ওপর গুরুত্বারোপ করে নিয়মিত বিরতিতে দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক আয়োজনের ধারনাটি উপস্থাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান দু’দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেন, কাবো ভার্দে বাংলাদেশ থেকে সুলভ মূল্যে উন্নতমানের পণ্য যেমন তৈরি পোশাক, ঔষধ সামগ্রী, ইলেক্ট্রনিকস, সফটওয়্যার এবং এমনকি জাহাজ আমদানি করতে পারে। এসময় রাষ্ট্রদূত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে বলেন, উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ সাফল্য অর্জন করেছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন এবং অভিবাসনের মতো বৈশ্বিক ইস্যুতে বিভিন্ন বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলোতে দু’দেশের একযোগে কাজ করার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন। রাষ্ট্রদূত জোরপূর্বক ব্যস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাবো ভার্দের অব্যাহত সমর্থন প্রত্যাশা করেন।
রাষ্ট্রপতি জোসে মারিয়া পেরেইরা নেভেস উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ প্রসারিতকরণ, বিশেষকরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণকে তাদের উন্নয়নের নতুন স্তরে উন্নীত হবার জন্য অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রপতি জলবায়ু পরিবর্তন এবং অভিবাসন এর মতো বৈশ্বিক ইস্যুতে একসাথে কাজ করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন এবং জাতিসংঘের কাঠামোতে রোহিঙ্গা বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দেন। তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং জনগণের প্রতি তার শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন। পরিশেষে, তিনি রাষ্ট্রদূতকে তার কর্মকালে সর্বোচ্চ সহযোগিতা ও সমর্থনের আশ্বাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান সেদেশের মুদ্রণ এবং ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন।
এর আগে ১৬ মার্চ ২০২২ তারিখে, রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান কাবো ভার্দের পররাষ্ট্র, সহযোগিতা ও আঞ্চলিক একীভবন বিষয়ক মন্ত্রী রুই আলবার্তো দে ফিগুইয়ারদো সোয়ারেসের কাছে তার পরিচয়পত্রের অনুলিপি পেশ করেন এবং দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে দু’দেশের মাঝে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারকরণ এবং উভয় দেশে অবৈতনিক কনসাল নিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও রাষ্ট্রদূত UNHRC এবং ICAO - তে বাংলাদেশের প্রার্থীতার বিষয়ে কাবো ভার্দের সমর্থনও প্রত্যাশা করেন।