ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

ডিএসইতে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের প্রভাব

সাঈদ শিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৪
ডিএসইতে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের প্রভাব

ঢাকা: ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের (মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথককরণ) সুফল পেতে শুরু করেছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। সদস্যদের পেছনে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরায় কমেছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যয়ের পরিমাণ।

একই সঙ্গে লেনদেনে কিছুটা গতি ফেরায় বেড়েছে আয়ও।
 
সম্প্রতি ডিএসইর বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
 
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (জুলাই ২০১৩ থেকে মার্চ ২০১৪) প্রথম নয় মাসে ডিএসইর পরিচালন আয় হয়েছে ৫৫ কোটি ৮৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় হয় ৪০ কোটি ৬৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে ব্যয় বাদ দিয়ে প্রকৃত পরিচালন আয় হয়েছে ১৫ কোটি ২০ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
 
অপরদিকে আগের অর্থবছরের (২০১২-১৩) প্রথম নয় মাসে আয় হয়েছিল ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ দুই হাজার টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় ছিল ৪২ কোটি ২৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ ব্যয় বাদ দিয়ে পরিচালন আয় হয় মাত্র পাঁচ কোটি ৩৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
 
এদিকে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ব্যয় বাদ দিয়ে ডিএসইর পরিচালন আয় দাঁড়িয়েছে পাঁচ কোটি ছয় লাখ ৮৭ হাজার টাকা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল এক কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় চলতি বছরে আয় বেড়েছে তিন কোটি ২৮ লাখ দুই হাজার টাকা। আয় বাড়ার হার ২৮৩ দশমিক ৪০ ভাগ।
 
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে মোট আয় হয় ১৮ কোটি ৬২ লাখ ৫২ হাজার টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় হয়েছে ১৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। আগের বছরে প্রথম তিন মাসে আয় ছিল ১৫ কোটি ৮৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় ছিল ১৪ কোটি আট লাখ ৮২ হাজার টাকা।
 
ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বপন কুমার বালা বিষয়টিকে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের সুফল হিসেবে উল্লেখ করে বাংলানিউজকে বলেন, আগে কিছু খাতে অপরিকল্পিতভাবে অর্থ ব্যয় করা হতো। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন হওয়ার পর সব খাতে ব্যয় পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। এখন অপ্রয়োজনীয় কোনো ব্যয় করা হয় না।
 
তিনি বলেন, পরিচালকদের বিভিন্ন সভার নামে বড় অঙ্কের টাকা খরচ হতো এটা ঠিক। তবে এছাড়াও আরও কিছু খাতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হতো। যা এখন বন্ধ হয়েছে। একই সঙ্গে আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়েছে। যা ডিএসইর আয় বাড়াতে আবদান রেখেছে।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জের আয় নির্ভর করে লেনদেনের ওপর। লেনদেন বাড়লে আয় বাড়বে। আবার লেনদেন কমলে আয় কমবে। আর যে কোনো প্রতিষ্ঠানের নেট পরিচালন আয় নির্ভর করে পরিচালন ব্যয় ও আয়ের ওপর। আয় বাড়লে এবং ব্যয় কমানো গেলে পরিচালন আয় বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
 
ডিএসইর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আগের পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের বিদেশ ভ্রমণসহ আমদ-প্রমোদে বিভিন্ন ধরনের সভার নামে মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় করতো। যা ডিএসইর ব্যয়ে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতো। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ ধরনের ব্যয় প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৪

** ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালন আয় ও ব্যয় তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।