ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

ঈদের ছুটির পর আবারো

প্রথম বছরেই ব্যর্থ ডিএসই

শেখ নাসির হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৪
প্রথম বছরেই ব্যর্থ ডিএসই

ঢাকা: ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথকীকরণের (ডিমিউচ্যুয়ালাইজড) প্রথম বছরেই কাঙ্ক্ষিত মুনাফার প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ।
 
ডিএসইর ব্যবসা পরিকল্পনা থেকে জানা যায়, সমাপ্ত অর্থবছরে ডিএসইর নিট মুনাফা প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৮.৫ শতাংশ।

কিন্তু মুনাফা প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে মাত্র ১৬.৮৭ শতাংশ। সুতরাং প্রথম বছরেই মুনাফার প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১.৬৩ শতাংশ কম হয়েছে।
 
২০১৩-১৪ সমাপ্ত অর্থবছরের অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ডিএসই’র নিট মুনাফা হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.৭৫ টাকা। বর্তমানে ডিএসইর মোট ১৮০ কোটি ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ৫০০টি শেয়ারের ওপর ভিত্তি করে এই ইপিএস গণনা করা হয়েছে।
 
গত অর্থবছরে (২০১২-২০১৩) ডিএসইর মুনাফা হয়েছিল ১১৫ কোটি ৫১ টাকা। তবে ওই সময়ে ডিএসই লিমিটেড কোম্পানি না হওয়ায় ইপিএস হিসাব করা হয়নি।
 
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা পরিকল্পনা থেকে আরও জানা যায়, আগামী সাত বছরের জন্য ডিএসইর রাজস্ব প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় গড়ে ২৪.৩ শতাংশ এবং মুনাফা প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় গড়ে ২৮.৫ শতাংশ।
 
এছাড়া ২০১৩-২০১৪ থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের মধ্যে ইপিএস বৃদ্ধির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় পর্যায়ক্রমে ০.০৮ টাকা থেকে ৩.৫৫ টাকা।
 
এ বিষয়ে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বপন কুমার বালা বাংলানিউজকে বলেন, এখনও নিরীক্ষিত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়নি। তবে ডিএসই কর্তৃপক্ষ মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ইতিমধ্যে ব্যয় কমিয়েছে। এজন্য আমরা কয়েক স্তরের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এমনকি আমরা মুনাফা বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের চেষ্টা করছি।
 
ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ব্যাংকগুলোতে সুদের হার কমে যাওয়ায় আমাদের মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারা অন্যতম কারণ। ফলে ব্যাংক থেকে স্থায়ী আমানতের বিপরীতে আমাদের আয় কমেছে।
 
এছাড়া ডিএসইর সদস্যদের ইন্স্যুরেন্স ও ব্রোকার হাউজগুলোতে সাবসিডি দেওয়ায় মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। আবার প্রথম বছরের প্রথম দিকে ডিএসই ডিমিউচ্যুয়ালাইজড না হওয়ায় মুনাফা কমেছে বলে জানান তিনি।
 
ডিমিউচ্যুয়ালাইজড স্কিম অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যাংকে ডিএসইর মোট ৮৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে। ব্যাংক সুদের হার ১২ থেকে ৯ শতাংশে নেমে যাওয়ায় এ খাত থেকে ডিএসইর মুনাফা প্রায় ৩০ কোটি টাকা কমেছে।  
 
ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের অন্য এক সদস্য জানান, প্রথম বছরে ডিমিউচ্যুয়ালাইজড ডিএসইর যে মুনাফা অর্জিত হয়েছে ততে শেয়ারহোল্ডারদের কাঙ্ক্ষিত মুনাফা দেওয়া সম্ভব হবে না। শুরুতে শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হতে পারে।
 
তবে ডিএসইর ব্যবসা পরিকল্পনায় উল্লেখ রয়েছে, মূলধন বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রয়োজনে ডিএসই পর্ষদ লভ্যাংশ কমানো বা বাড়ানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
 
ডিএসইর এক শেয়ারহোল্ডার জানান, প্রশাসন থেকে মালিকানা পৃথক হওয়ায় ডিএসই অলাভজনক থেকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রথম বছরে আমরা কমপক্ষে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ আশা করছি।
 
ডিমিউচ্যুয়ালাইজড পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিএসইর ২৫০ জন সদস্যের প্রত্যেককে ৭২ লাখ ১০ হাজার করে শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শেয়ারের অভিহিত মূল্য ধরা হয়েছে ১০ টাকা।
 
কোম্পানির পরিশোধিত মূল্য ধরা হয়েছে এক হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে ডিএসইর ২৫০ জন শেয়ারহোল্ডারকে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হলে মুনাফা করতে হবে ১৮০ কোটি টাকার কিছুটা বেশি। যেখানে প্রথম বছরে ডিএসইর মুনাফা হয়েছে মাত্র ১৩৫ কোটি টাকা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।