ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

মি.ফান্ডের লভ্যাংশ

পুনঃবিনিয়োগে ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিট হোল্ডাররা

শেখ নাসির হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৪
পুনঃবিনিয়োগে ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিট হোল্ডাররা

ঢাকা: সমাপ্ত অর্থবছরে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইউনিট হোল্ডাররা। প্রায় ১২টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ পুনঃবিনিয়োগ করা হয়েছে।



এরইমধ্যে কয়েকটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট হোল্ডাররা এ বিষয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে(বিএসইসি) অভিযোগ করেছে। কারণ লভ্যাংশের পুনঃবিনিয়োগ তারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
 
ইউনিট হোল্ডারদের দাবি, লভ্যাংশ পুনঃবিনিয়োগের সিদ্ধান্তে আমাদের স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে না। এমনকি আমরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কারণ পুনঃবিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর নিট সম্পদ মূল্যের(এনএভি) ওপর ভিত্তি করে পুনঃবিনিয়োগ করছে।

অন্যদিকে, বাজারে ওই ইউনিটের দাম এনএভির অর্ধেক মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। তাই আমরা যদি নগদ লভ্যাংশ পেতাম তবে বাজার থেকে তারা দ্বিগুণ ইউনিট ক্রয় করতে পারতাম।

মুন্সি শফিউদ্দিন নামের এক বিনিয়োগকারী অভিযোগপত্রে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, ফার্স্ট জনতা ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের পর্ষদ ইউনিট হোল্ডারদের জন্য সাড়ে ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যা পুনঃবিনিয়োগ হয়ে ইউনিটে রূপান্তর হবে।

একই সময়ে এ ফান্ডের বর্তমান বাজার মূল্য রয়েছে ৫.৫০ থেকে ৬.৩০ টাকার কিছুটা বেশি এবং এনএভি ধরা হযেছে ১১.৩০ টাকা।

এখন কোনো বিনিয়োগকারী যদি ইউনিট প্রতি ১০ টাকা মূল্যের এ ফান্ডের ১০ ইউনিটের মালিক হন তবে তিনি ১৩ টাকার কিছুটা বেশি লভ্যাংশ পাবেন। আর পুনঃবিনিয়োগের (এনএভি’র ওপর ভিত্তি করে) কারণে তিনি লভ্যাংশ হিসেবে পাবেন মাত্র একটি ইউনিট।

কিন্তু তিনি যদি সম পরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয় তবে বাজার থেকে প্রায় দুই ইউনিট শেয়ার ক্রয় করা সম্ভব।
 
এ মি. ফান্ডের ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে রেস ম্যানেজমেন্ট পিসিএল।
 
এ বিষয়ে রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পিসিএল’র সিনিয়র অফিসার মো. গোলাম আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বিএসইসি আমাদের এনএভিকে ভিত্তি ধরে পুনঃবিনিয়োগের নির্দেশনা দিয়েছে। আর জন্যই ইউনিট হোল্ডারদের বেশি লভ্যাংশ দেওয়া হয়। যদি নগদ  লভ্যাংশ দেওয়া হতো তবে হিসাব করার পর তাদের লভ্যাংশের পরিমান এত বেশি হতো না, আরও কমে যেত।
 
তিনি আরও বলেন, আমরা বিএসইসি ও ডিএসই’র পুনঃবিনিয়োগের সকল নিয়মকানুন মেনেই এগুলো করছি। কোনো ইউনিট হোল্ডার যদি এ বিষয়ে অভিযোগ করে থাকে তবে তিনি বিষয়টি ভালভাবে না বুঝেই অভিযোগ করছেন।
 
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির এক কর্মকর্তা জানান, মূলত মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ট্রাস্টি এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোর কাজ ইউনিট হোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষা করা। সঠিকভাবে লভ্যাংশ প্রদান ও পুনঃবিনিয়োগ হচ্ছে কি-না সেটাও তাদের দেখার বিষয় কিন্তু তা সঠিকভাবে পালিত হচ্ছে না বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
 
ডিএসই’র তথ্য অনুযায়ী পুঁজিবাজারে মোট ৪১টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে গত ৩০ জুন ২০১৪ সময়ে সমাপ্ত অর্থবছরে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৩৭টি ফান্ড। এর মধ্যে ১২টি ফান্ড পুনঃবিনিয়োগ শর্তে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
 
পুনঃবিনিয়োগ হিসেবে লভ্যাংশ দেওয়া ১২টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে রয়েছে- এইমস ফাস্ট মি. ফান্ডের ৫০ শতাংশ, গ্রামীণ মি. ফান্ডের ৩০ শতাংশ, গ্রামীণ-১ মি. ফান্ডের ১৫ শতাংশ, ফাস্ট জনতা মি. ফান্ডের সাড়ে ১২ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক ফাস্ট মি. ফান্ড ১২ শতাংশ, পপুলার লাইফ ফাস্ট মি. ফান্ডের ১২ শতাংশ।
 
এছাড়া ১০ শতাংশ করে লভ্যাংশ দিয়েছে- এবি ব্যাংক ফাস্ট মি. ফান্ড, ইবিএল এনআরবি মি. ফান্ড, ফাস্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম মি. ফান্ড, পিএইচপি ফাস্ট মি. ফান্ড, ট্রাস্ট ব্যাংক ফাস্ট মি. ফান্ড। অন্যদিকে, আইএফআইসি ব্যাংক ফাস্ট মি. ফান্ড সমাপ্ত অর্থবছরে মাত্র ৯ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।