ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

লেনদেন সংকটে পুঁজিবাজার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৬
লেনদেন সংকটে পুঁজিবাজার

ঢাকা: টানা চার কার্যদিবস সূচক বাড়ালেও লেনদেনের গতি পাচ্ছে না দেশের দুই পুঁজিবাজার। আগের সপ্তাহের তিন কার্যদিবসের মতো চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (০৩ এপ্রিল) দিনভর সূচকের ওঠানামার মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে।

 

দিন শেষে সূচক, বাজার মূলধন ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লেও কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে লেনদেনে কোনোভাবেই ৩শ’ কোটির কোটা অতিক্রম করতে পারছে না বাজার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের মার্কেট সার্পোটের কারণে বাজারে সূচক বাড়ছে। তবে সাধারণ ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা না ফেরায় এখনো পুঁজিবাজারে লেনদেনের সংকট বিরাজ করছে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজিব উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, মার্কেটের প্রতি কেউ আস্থা রাখতে পারছেন না। বিনিয়োগকারীরা চাইছেন হাতে থাকা শেয়ার ভালো দামে বিক্রি করে দিতে। কিন্তু নতুন করে কেউ বিনিয়োগ করছেন না। তাই লেনদেন বাড়ছে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রয়োজন নতুন ফান্ড। বাজারে নতুন করে যতো ফান্ড আসবে বিনিয়োগকারীদের বাজারের প্রতি আস্থা ততো বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ মনে করেন, মন্দা বাজারে প্রয়োজনের তুলনায় আইপিওতে (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) অনেক বেশি কোম্পানির অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। যার বেশিরভাগ আবার দূর্বল মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি। ফলে সেকেন্ডারি মার্কেটে এসব কোম্পানি আসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তাই নতুন করে বিনিয়োগ করতে কেউ সাহস পাচ্ছেন না।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশের প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২১ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৩৭৯ পয়েন্টে, শরীয়াহ সূচক ডিএসইএস ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫৮ পয়েন্ট এবং ডিএস৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৬৫০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ডিএসইতে ৩১৪ কোম্পানির ১১ কোটি ৭৫ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৪টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের হাত বদল হয়েছে। যা টাকার অংকে লেনদেনের পরিমাণ ৩৭৩ কোটি ৯৮ লাখ ৪২ হাজার ২৮৬ টাকা। আগের দিনের চেয়ে ৩৮ কোটি  ৯৭ লাখ টাকা কম। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৮টির, কমেছে  ১০০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬টি কোম্পানির শেয়ার।

লেনদেনের ভিত্তিতে রোববার ডিএসইতে শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানি হলো- লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, কেডিএস এক্সেসরিজ, অরিয়ন ইনফিউশন, পাওয়ার গ্রিড, ইউনাইটেড পাওয়ার, গোল্ডেন হারভেস্ট, বিএসআরএম লিমিটেড, ড্রাগন সোয়েটার, আমান ফিডস ও সিএমসি কামাল।

দাম বাড়ার শীর্ষে প্রধান দশ কোম্পানি হলো- আরামিট সিমেন্ট, আমরা টেকনোলজি, পপুলার লাইফ, অগ্নি সিস্টেম, বারাকা পাওয়ার, ডেফোডিল কম্পিউটার, পাওয়ার গ্রিড, আইটিসি, ফার কেমিক্যালস ও আইসিবি ৩য় এনআরবি।

দেশের অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে ৮ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সিএসই৫০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে ৯৭২ পয়েন্টে, সিএসই৩০ সূচক ৪৬ পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ৮৩ পয়েন্টে এবং সিএএসপিআই ৭৫ পয়েন্ট বেড়ে ১৩ হাজার ৪৮৩ পয়েন্টে এবং সিএসআই ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৯২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
 
এ বাজারে ২৩৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২৬টির, কমেছে ৭৭টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টি কোম্পানির শেয়ার। টাকার অংকে লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৬
এমআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।