ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

জুলাই ও আগস্টে বন্ধ আড়াই লাখ বিও হিসাব

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৬
জুলাই ও আগস্টে বন্ধ আড়াই লাখ বিও হিসাব

ঢাকা: নতুন অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পুঁজিবাজারে বন্ধ হলো আড়াই লাখ বেনিফিশিয়ারি ওর্নাস অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব)। বাজারে মন্দা, কারসাজি ও বিভিন্ন ধরনের চার্জের বোঝা বহন করতে না পেরে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিও হিসাবগুলো বন্ধ করে দিচ্ছেন।

ফলে পুঁজিবাজারকে নিয়ে অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য মতে, ৩০ জুন ২০১৬ সাল পর্যন্ত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা ছিলো ৩১ লাখ ৫৫ হাজার ৫৮৫টি। সেখান থেকে জুলাই ও আগস্ট এই দুই মাসে বিও হিসাব ২ লাখ ৪৩ হাজার ১২টি বন্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ লাখ ১২ হাজার ৫৭৩টিতে। এই হিসাবগুলোর বেশির ভাগই প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে আবেদনের জন্য ব্যবহার করেছে বিনিয়োগকারীরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদুল ফিতরের ছুটির পাশাপাশি গুলশান ও শোলাকিয়ার বোমা হামলায় পুঁজিবাজারের লেনদেনে একটু নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে না উঠতে কোরবানির ঈদ চলে আসায় নগদ টাকার প্রয়োজনে শেয়ার বিক্রি করে সম্প‍ূর্ণ টাকা বাজার থেকে উত্তোলন করে নিচ্ছেন। এ কারণে দেশের পুঁজিবাজারে নেতিবাচক ধারায় লেনদেন হয়েছে। ফলে একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে বিও হিসাবও। তবে এতে বিনিয়োগকারীদের বিচলিত ও আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জা আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ২০১০ সালের ধসের পর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে পুঁজিবাজারের কোনো উন্নতি না থাকায় ক্রমাগতভাবে বাজার বিমুখ হয়েছে বিনিয়োগকারীরা।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীকে পুঁজিবাজারে আনতে হলে বাজারে পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে।


চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বাংলানিউজকে জানান, দুই কারণে পুঁজিবাজার ছাড়েন বিনিয়োগকারীরা। এর মধ্যে প্রধান হলো- দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজারে মন্দা অব্যাহত থাকায় আস্থাহীন হয়ে পুঁজিবাজার বিমুখ হওয়া। অপরটি হলো- ব্যবসা মন্দায় খরচের বোঝা কমাতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিওর) আবেদনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়া।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বাংলানিউজকে বলেন, নানা কারণে এই বিও হিসাবগুলো বন্ধ হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে বিও হয়েছে। সুতরাং সবাই যে বাজার ছেড়েছেন তা ঢালাও ভাবে বলা যাবে না।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি বাংলানিউজকে বলেন, ধসের পর বাজার পজিটিভ না দেখায় বিনিয়োগকারীরা বাজার ছেড়েছেন। তাদের বাজারে আনতে হলে ফান্ড সার্পোট দরকার। সরকার যদি ইইএফ ফান্ড, এসএমই এবং কৃষি খাতের মতো কম খরচে অর্থাৎ ৫ শতাংশ সুদে বাজারের জন্য ফান্ড দেয় তাহলে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে। এ ছাড়াও দেশের আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি ও বিনিয়োগ যোগ্য পরিবেশ নিশ্চিতের দরকার বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৬
এমএফআই/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।