ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

খেলা

সংবর্ধিত হলেন সাঈদ, রশিদ ও সাজেদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২৩
সংবর্ধিত হলেন সাঈদ, রশিদ ও সাজেদ

এশিয়ান হকি ফেডারেশনের (এএইচএফ) সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশের জন্য সম্মান ও গৌরব বয়ে এনেছেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ। গত মাসের ২২-২৩ তারিখ দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এএইচএফ-এর কংগ্রেস।

সেখানে সর্বোচ্চ ২৯ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন সাঈদ। এশিয়ান হকিতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পদপ্রাপ্তি। দেশের হকিতে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ এশিয়ান হকি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে অর্ডার অব মেরিট অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন সাঈদ।  

একই কংগ্রেসে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ শিকদার। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার এএইচএফ-এর সদস্য নির্বাচিত হলেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের আরেক সহ-সভাপতি বয়োজ্যেষ্ঠ সংগঠক সাজেদ এ এ আদেল এএইচএফ-এর উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দেশের হকিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোকিত করেছেন। সাঈদ, রশিদ, সাজেদ আদেলের এমন অর্জনে খুশি বাংলাদেশের হকি অঙ্গন। ৎ

আজ (৩ এপ্রিল) সোমবার মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সাঈদ, রশিদ এবং সাজেদ আদেলকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তিনজনকে ফুলেল শুভেচ্ছার পাশাপাশি ক্রেস্ট প্রদানও করা হয়। একইভাবে জাতীয় দলে সাবেক খেলোয়াড়, বিভিন্ন ক্লাব প্রতিনিধিগণ, বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের খেলোয়াড়-, কর্মকর্তারা সাঈদ, রশিদ এবং সাজেদ আদেলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পর স্বাধীনতার মাসেই বাংলাদেশ আরো একটি জায়গায় তার সর্বোচ্চ সম্মানটুকু পেল। আমি মনে করি সেই অর্জনে আমার নাম যুক্ত হওয়ার আমি যত না আনন্দিত; তার চেয়েও বেশি আনন্দিত আমার দেশকে আমি এশিয়ান হকি ফেডারেশনের কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্ব করেছি।  আমার দেশকে, আমার জাতীয় পতাককে এশিয়ার সর্বোচ্চস্থানে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে সর্বোচ্চ ভোটে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। এশিয়ান হকি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটিতে আমি সহ-সভাপতি ছাড়াও আমাদের রশিদ শিকদার ভাই সদস্য এবং আমাদের হকির বয়োজ্যেষ্ঠ সংগঠক সাজেদ এ এ আদেল ভাই উপদেষ্টা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। এই আনন্দ-অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের চেয়ে দায়িত্ব পালনের রেশটা অনেক বেশি। ’
সাঈদ আরো যোগ করেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন নিয়ে হকি ফেডারেশনকে পূনর্গঠন করেছিলেন; আমাদের রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট খেলোয়াড় গড়তে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের ফেডারেশনের দায়বদ্ধতা থাকবে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করে হকির কার্যক্রমকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে। আজকে হকি বিভিন্ন ইভেন্টের মাধ্যমে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। ইনডোর হকি হচ্ছে, সিক্স-এ-সাইড হচ্ছে- সেসব নিয়ে যদি আমরা কাজ করতে পারি, আমাদের যে ট্যালেন্ট আছে আমি মনে করি তাদের সঠিকভাবে পরিচর্চা করতে পারলে শুধু র‌্যাংকিংয়েই উন্নতি নয়। আমাদের যে স্বপ্ন বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা- সেটাও সম্ভব হবে।  

দেশের হকিতে এগিয়ে নিতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজের আহবান জানিয়ে মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘আমরা সত্তর দশকে ভারত, পাকিস্তানের মতো শক্ত প্রতিপক্ষের ঘাড়ে তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলেছি; আশির দশকে হকিকে শাসন করেছি; তেমনি আমরা যদি তৃণমূলে কাজ করে জাতীয় দলকে শক্তিশালীভাবে গড়ে তুলি তাহলে আমরা বিশ্বমঞ্চে আমাদের জাতীয় পতাকাতে সুউচ্চে তুলে ধরতে পারব। রাষ্ট্রের জন্য সম্মান বয়ে নিয়ে আসতে পারব। আমরা পরিকল্পনামাফিক কাজ করে আমাদের হকিকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাব। এজন্য আমি মিডিয়াসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। ’ 

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আব্দুর রশিদ শিকদার বলেন, ‘এই নিয়ে তিনবার আমি এশিয়ান হকির কার্যনির্বাহি কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। অন্যান্যবারের চেয়ে এবারের অনুভূতি একেবারে আলাদা। কারণ আমাদের হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ-এর সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়াটা এটাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। আমরা সহসভাপতি-সহ তিন জন কার্যনির্বাহি কমিটিতে আছি।

রশিদ শিকদার আরো যোগ করেন, ‘কাজ যখন মানুষ করে, কাজের স্বীকৃতি সে পায়। তার (সাঈদের) সহ- সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পেছনে মূল যে কারণ আমি বলবো সেটা হলো সে যখন হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন, তখন হকিতে যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছিল সেটা সকলেই দেখেছেন। ছেলেদের হকি, মহিলা হকি, কোচিং প্যানেল নিয়ে আমরা কাজ করেছি। আমরা সাফল্য তখনই পাবো যখন এশিয়ান হকি ফেডারেশন থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে আমরা দেশের হকিতে উন্নয়ন আনতে পারবো। ’

সাজেদ এ এ আদেল বলেন, ‘আমি দেশের পতাকাকে, দেশে কোটি মানুষকে বিশ্ব দরবারে রিপ্রেজেন্ট করছি- এটাই আমার বড় প্রাপ্তি। আমি এবং আমার সহকর্মীরা বাংলাদেশের হকিকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা ভালো খেলে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের হকিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সামনে আমাদের জুনিয়র হকি বিশ্বকাপ আছে। আমরা সেখানে ভালো খেলে নিজেদের প্রমাণ করতে চাই। ’

বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৩
এআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।