ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

খেলা

ফিক্সিংয়ের অভিশাপ টেনিসেও, সন্দেহভাজন গ্র্যান্ড স্ল্যাম বিজয়ীরাও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
ফিক্সিংয়ের অভিশাপ টেনিসেও, সন্দেহভাজন গ্র্যান্ড স্ল্যাম বিজয়ীরাও

ঢাকা: এবার ম্যাচ ফিক্সিং বা গড়াপেটার অভিযোগ উঠলো ‘অভিজাতদের রাজকীয় খেলা’ বলে পরিচিত টেনিসেও। আর এতে খোদ গ্র্যান্ড স্ল্যাম বিজয়ীসহ অন্তত ১৬ জন সন্দেহভাজন।

গত দশকের বিভিন্ন সময়ে এ গড়াপেটা করেছেন সময়ের সেরা সেরা টেনিস খেলোয়াড়রা।

রোববার (১৭ জানুয়ারি) এ অভিযোগ ছড়িয়েছে বিশ্ব ক্রীড়া সংবাদমাধ্যমে। বিবিসিসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, বিশ্ব টেনিসে ম্যাচ যে গড়াপেটা হয়েছে, সেই দুর্নীতির গোপন নথিপত্রও তাদের কাছে রয়েছে।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) মেলবোর্নে মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরু হওয়ার ঘণ্টাকয়েক আগে এই বিস্ফোরক খবর ছড়ালো। আরও বড় বিস্ফোরক খবর হলো, যে ১৬ জন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, তাদের মধ্যে আটজনই অংশ নিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে।

বিবিসির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, গত দশকে টেনিসের শীর্ষ পঞ্চাশে থাকা অন্তত ১৬ জন খেলোয়াড় ম্যাচ গড়াপেটা করেছেন। এরমধ্যে কেউ পুনরাবৃত্তিও করেছেন। সন্দেহভাজনদের মধ্যে খোদ গ্র্যান্ড স্ল্যাম বিজয়ীও আছেন, যারা এখনও খেলে যাচ্ছেন।

বিবিসি ও ক্রীড়া সংবাদমাধ্যম বাজফিডের দাবি, তাদের কাছে ২০০৭ সালে শুরু হওয়া ম্যাচ গড়াপেটা তদন্তের সব নথিপত্র রয়েছে। ওই তদন্ত শুরু করেছিল পুরুষদের খেলার পরিচালনা বোর্ড অ্যাসোসিয়েশন অব টেনিস প্রফেশনাল (এটিপি)।

সংবাদমাধ্যম দু’টি বলছে, রাশিয়া, ইতালি ও সিসিলির বাজিকররা ম্যাচ গড়াপেটায় হাজারো ডলার ঢেলেছে বলে ওই তদন্তে খোলাসা হয়ে পড়েছে। যে ম্যাচগুলো গড়াপেটা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে তিনটি হয়েছে সবচেয়ে সম্মানজনক ও পুরনো টুর্নামেন্ট উইম্বলডনেও।

বাজফিডের দাবি, খেলোয়াড়দের তাদের হোটেল কক্ষে ‘বুক’ করা হয়। প্রত্যেকটি গড়াপেটায় তাদের অর্ধ লাখ ডলার বা তারও বেশি দেওয়া হয়।

বিবিসি জানায়, ওই তদন্তের ভিত্তিতে ২০০৮ সালে এটিপির প্রতিনিধিরা ২৮ খেলোয়াড়ের জড়িত থাকার অভিযোগ পূর্ণ তদন্তে সুপারিশ করেন। কিন্তু পরে সে সুপারিশ কানেই তোলা হয়নি।

২০০৯ সালে টেনিসে দুর্নীতিবিরোধী কিছু বিধান জারি হয়। কিন্তু সেখানে বিগত দুর্নীতির বিষয়গুলো অনুসরণের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়।

রোববারের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, যে ১৬ জন গত দশকে ম্যাচ গড়াপেটা করেছেন, তাদের মধ্যে আবার আটজনই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অংশ নিচ্ছেন।

তবে, এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে টেনিস কর্তৃপক্ষ। এটিপির প্রধান ক্রিস কারমোদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। এখন এ ধরনের জালিয়াতির সুযোগ নেই। আমি নিশ্চিত করতে পারি, টেনিসকে এতো হালক‍াভাবে দেখা হয় না।

টেনিস ঠিকভাবে পরিচালত হচ্ছে না বলে যে অভিযোগ উঠেছে সেটাকে ‘হাস্যকর’ বলেও উড়িয়ে দেন তিনি।

তিনি এভাবে উড়িয়ে দিলেও অভিযোগের ‘ভিত’ দিচ্ছেন ২০০৭ সালে শুরু হওয়া তদন্তের কর্মকর্তা মার্ক ফিলিপস। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা অপরাধী মূলত ১০ জনের একটি দল। এরাই দুর্নীতিকে টেনিসের শেকড়ে ছড়িয়েছে।

এসব বিষয়ে টেনিসের দুর্নীতি দমন সংস্থা টিআইইউ’র পরিচালক নিগেল উইলারটন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সব ধরনের নথিপত্র বিশ্লেষণ ও নিরীক্ষা করা হয়েছে।

তবে, সে বিশ্লেষণ ও নিরীক্ষার ফলাফল তা জানাননি তিনি।

দুর্নীতির বিষয়টি তদন্তাধীন হওয়ায় সন্দেহভাজন কোনো খেলোয়াড় বা বাজিকরের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি কোনো সংবাদমাধ্যম।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬/আপডেট ১১৫৬ ঘণ্টা
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।