ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

রাত আমার খুব প্রিয় : নিশা

কামরুজ্জামান মিলু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৪
রাত আমার খুব প্রিয় : নিশা নিশা/ ছবি : নূর /বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সাধারণ অর্থে নিশা মানে রাত্রি, যাকে নিশি বা নিশীথ বলেও ডাকা হয়। এজন্য রাতের নির্জনতা তার ভীষণ প্রিয়।

কিন্তু রাত তো আঁধার? নিশার উত্তর, ‘রাত হচ্ছে শান্তির। চারদিক চুপচাপ থাকে এ সময়ে। আমার এটাই ভালো লাগে। আর নামটি আমার মায়ের দেওয়া। তাই সব মিলে রাত আমার খুব প্রিয়। ’



নিশার পুরো নাম মেহ্রীন ইসলাম নিশা। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাবা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীকে হারানোর পর থেকেই রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা জেবুন্নেসা জাহানের কাছে বেড়ে উঠেছেন তিনি। তবে বিনোদন অঙ্গনে মেয়ের কাজ করা নিয়ে পরিবার থেকে শুরুতে আপত্তি ছিল। তবে নিশার কাজ শুরু করার ইচ্ছে ছিল। তবে মনে মনে একটি বড় প্ল্যাটফর্ম খুঁজছিলেন। আর সেটা পেয়েও যান ২০১১ সালে।



তখন তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ওয়েস্টে ইংরেজি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্রী। ২০১১ সালে ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে দ্বিতীয় রানারআপ হয়ে বিজ্ঞাপন ও নাটক দিয়ে কাজ শুরু করেন। প্রথমেই প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের লেখা নাটক ‘স্বপ্ন এবং স্বপ্নভঙ্গ’ নাটকে অভিনয়ের সুযোগ পান। শাওনের পরিচালনায় এ নাটকে তার সহশিল্পী ছিলেন সংগীতশিল্পী আগুন।

এ বিষয়ে নিশা বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি শুরুতেই হুমায়ূন স্যারের লেখা নাটকে কাজ করেছি। এটা আমার জন্য একটা বড় পাওয়া। এরপর আমি এলিট পেইন্ট, লাক্স, জুঁই নারিকেল তেল, প্রাণ ডাল-এর বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়ার সৌভাগ্য হয়। আর প্রচার হওয়া এসব কাজ নিয়ে ভালো সাড়া পেয়েছি। ’



বর্তমানে নিশা অভিনীত ‘নোয়াশাল’, ‘পরিবার করি কল্পনা’, ‘চোরকাঁটা, ‘মায়ার খেলা’ ধারাবাহিক নাটকগুলো বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। এর আগে ‘চুপকথা’, ‘কাগজের বাড়ি’, ‘অন্দরমহল’, ‘মার ছক্কা’, ‘লঙ্গরখানা’ ধারাবাহিক নাটকগলোতে অভিনয় করে বেশকিছু ভালো নির্মাতার সঙ্গে কাজের সুযোগ হয় তার।

নিশার ভাষ্য, ‘আমার অভিনীত খন্ডনাটকের মধ্যে আশিকুর রহমানের ‘ফুলপরী রাজপুত্র আমৃত্তির গল্প’, গোলাম মুক্তাদিরের ‘কালো ব্যাগ ও এক রাত্রের গল্প’, তৌকীর আহমেদের ‘অপ্রকৃতিস্থ’ ও বদরুল আনাম সৌদের ‘মায়া’ নাটক নিয়ে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি। ’

পরিবার থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার চিত্রটা এখন পাল্টেছে। নিশাকে সবাই ভালো কাজের জন্য পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করছেন। তবে তার কাজ করার ধরণ অন্য অভিনেত্রীদের চেয়ে ভিন্ন। মনের মতো গল্প ও চরিত্র না পেলে কাজই করতে চান না তিনি। আর এজন্যই হয়তো তার কাজের সংখ্যা কম বলে মনে করেন নিশা।

নিশা বলেন, ‘কাজের জন্য খুব একটা যোগাযোগ রক্ষা করে চলি না। আমি আমার মতো কাজ করি। প্রতিটি কাজে আমার চরিত্র বুঝে তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি। কারণ দর্শকের সামনে যে কাজ করব, দর্শক সেভাবেই আমাকে গ্রহণ করবে। আর বেছে বেছে করার কারণে আমার হাতে কাজও কম থাকে। ’

কাজ কম নাকি বেশি তা নিয়ে চিন্তিত নন নিশা। তবে পরিবার ও বন্ধুরা তাকে মাঝে মাঝে ভীষণ ভয় পায়! কারণ নিশা নিজের রাগ পুষে রাখতে পারে না। রাগ মাথায় উঠলে নিজেকে কীভাবে সামলান? এ প্রশ্নের উত্তরে তার সোজা উত্তর, ‘সামলাতে চেষ্টা করি। তবে রাগ ঠান্ডা হতে আমার বেশি সময় লাগে না। আমি খুবই নরম মনের মেয়ে। ’

আগামী রোজার ঈদের বেশকিছু কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন নিশা। এরই মধ্যে বেশকিছু নাটকের শুটিং শেষও করেছেন। এই তালিকায় আছে সালাউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় ছয় পর্বের নাটক ‘জুয়াবাজি’, জুয়েল শরীফের ‘দুই জনমে এক মানুষ’ এবং জাহিদ হাসানের পরিচালনায় নাম চুড়ান্ত না হওয়া একটি একক নাটক।

সবশেষে জানা যাক তার বিয়ে ও চলচ্চিত্রে কাজ করার ইচ্ছে নিয়ে। তার জবাব, ‘আমার বয়ফ্রেন্ড নেই, আর সহসা বিয়েরও কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে চলচ্চিত্রে কাজ করার ইচ্ছে আছে, কথাও চলছে। ভালো গল্পের পছন্দমাফিক চরিত্রে বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করতে চাই। ’

পরিবারে তিন ভাই বোনের মাঝে সবার বড় নিশা। তাই দায়িত্বও বেশি। বর্তমানে অনার্স ফাইনাল বর্ষে পড়াশোনা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে কাজের পাশাপাশি ইংরেজি বিভাগে খন্ডকালীন শিক্ষকতা করার ইচ্ছে আছে তার। অভিনয়ে যেমন দর্শকদের আনন্দ দেন, তেমনি পড়াশোনা করিয়ে নিজেও আনন্দ খুঁজে পেতে চান নিশা। তার লক্ষ্যপূরণ হোক, শুভকামনা রইলো।  

বাংলাদেশ সময় : ১০৩০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ