ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

দেবীর মতো শানু

কামরুজ্জামান মিলু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৪
দেবীর মতো শানু ছবি : নূর /বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

হুমায়ূন আহমেদের ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ ছবিতে কাজ করার কথা ছিল শানারৈ দেবী শানুর। কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি।

বড় পর্দায় তার মুখখানা দেখার প্রদীপটা জ্বলতে জ্বলতেও জ্বলেনি। তবে এ নিয়ে আফসোস নেই জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর।

অভিনয়ের প্রতি ভালো লাগা ছিল। তাই সিলেটের এমসি কলেজ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় মেধা তালিকায় জাতীয় পর্যায়ে নবম স্থান অর্জনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগে পড়ার ইচ্ছে ছিল শানুর। পরিবারের অনুমতি পাননি। এ নিয়েও তার কোনো আফসোস নেই।

জনপ্রিয়তার সুখপাখি ঠিকই ধরা দিয়েছে শানুর হাতে। শুরুটা বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্রের তালিকাভুক্ত শিল্পী হওয়ার মধ্য দিয়ে। ২০০৪ সালে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত শাকুর মজিদের ‘বৈরাতী’তে অভিনয় করেন তিনি। এতে তার সহশিল্পী ছিলেন মাহফুজ আহমেদ। এই টেলিছবিতে অভিনয়ের জন্য ‘ঝিলিক-চ্যানেল আই ঈদ অনুষ্ঠান পুরস্কাওে সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী হন তিনি। এরপরই ‘লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতায় বিজয় মুকুট জেতেন। সেটা ২০০৫ সালের কথা।

এরপর কেটেছে প্রায় ৯ বছর। কাজের মান যাচাই-বাছাইয়ের পাশাপাশি পড়াশোনাও শেষ করেছেন। বিয়ে করে সংসারজীবন শুরু করেন। তিনি এখন এক সন্তানের মা। সংসার ও সন্তানের কথা ভেবে অভিনয় থেকে দূরত্বকে বেছে নিয়েছিলেন শানু।

২০০৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর জেভিয়ার শান্তনু বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে জড়ান শানু। তার ভাষ্য, ‘এখন আমার সময় কাটে একমাত্র সন্তান জেনাস ঋত বিশ্বাসের সঙ্গে। ওর বয়স প্রায় সাড়ে তিন বছর। ’

শানুকে আবার অভিনয়ে উৎসাহ দিয়েছেন জেভিয়ার। সাড়ে তিন বছর পর সাগর জাহানের ‘আরমান ভাই বিরাট টেনশন’ নাটকের মাধ্যমে আবার অভিনয়ে ফিরেছেন তিনি। গেলো রোজার ঈদের নাটকেও অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে ছিল রাজীবুল ইসলাম রাজীবের ‘ঘুম ঘুম খেলা’ আর শুভ্র আহমেদের ‘রাহু’ নাটক দুটি। তারও আগে আশীষ রায়ের প্রতিদিনের ধারাবাহিক ‘প্রতিপক্ষ’তে দেখা গেছে তাকে।

শানু অভিনীত দর্শকপ্রিয় নাটকের তালিকায় রয়েছে ইমদাদুল হক মিলনের ‘পলাশ ফুলের গন্ধ’, হুমায়ূন আহমেদের ‘কবি’, সালাহউদ্দিন লাভলুর ‘সাকিন সারিসুরি’, রেজানুর রহমানের ‘আহ ফুটবল বাহ্ ফুটবল’, সাগর জাহানের ‘আরমান ভাই বিরাট টেনশনে’, শিমুল সরকারের ‘চোরকাব্য’, রিপন নবীর ‘আপনঘর’, অরণ্য আনোয়ারের ‘কবিরাজ গোলাপ শাহ’ ও ‘কর্তাকাহিনী’ প্রভৃতি।

পাহাড়ী অঞ্চলে জন্ম নেওয়া শানু ছোটবেলা থেকেই নাচ, গান, আবৃত্তি, বিতর্ক, অভিনয়-সহ সংস্কৃতির নানা শাখায় বিচরণ করেছেন। তার বাবা একে শেরাম আর মা চন্দ্রাদেবী মণিপুরী দু’জনই ছিলেন সংস্কৃতিমনা। তাদের উৎসাহেই নিজেকে এতদূর নিয়ে আসতে পেরেছেন বলে জানান শানু। দুই ভাইবোনের মধ্যে শানু বড়।

বর্তমানে শানু অভিনীত দেবাশীষ বড়ুয়া দীপের ‘হাওয়াই মিঠাই’, মানিক মানবিকের ‘কাম টু দ্য পয়েন্ট’ ধারাবাহিক নাটক দুটি প্রচার হচ্ছে। শানু বললেন, ‘আমি কখনও একটানা কাজ করিনি। একটু বেছে কাজ করা আমার অভ্যাস। আর মাঝে মা হওয়ার কারণে একটু মুটিয়ে গিয়েছিলাম। তবে ওজন কমিয়ে আবার অভিনয়ে ফিরেছি। ’

ছোটপর্দায় অভিনয় করলেও বড় পর্দায় দেখা যায়নি শানুর মুখ। এ প্রসঙ্গে সবশেষে তিনি বললেন, ‘ছবিতে কাজ করার ইচ্ছে আছে। তবে গল্পটা ভালো হতে হবে। আর আমি অল্পতেই সন্তুষ্ট। নাচের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি অভিনয় আর সন্তানকে নিয়ে থাকতে চাই। ’

বাংলাদেশ সময় :  ২০০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ