ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

মৌ ‘ওই রকম’ না!

খায়রুল বাসার নির্ঝর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৪
মৌ ‘ওই রকম’ না! মৌ দেবনাথ / ছবি : নূর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মুখ খানিকটা বাঁকিয়ে, মাথা ঝাঁকিয়ে, লাজুক ভঙ্গিতে মৌ বলে উঠলেন, ‘আমি ওই রকম না’। তাহলে কী রকম তিনি? শোনা হবে মৌ’র মুখ থেকেই।

আগে তার ভেতর-বাহিরের খবর জেনে আসা যাক, যতখানি সম্ভব। বিজ্ঞাপনে তিনি মৌ। চলচ্চিত্রেও। প্রাতিষ্ঠানিক সনদে মৌ দেবনাথ।  

 

‘প্রাতিষ্ঠানিক’ শব্দটা উঠতেই হুড়মুড় করে মস্তিষ্ক জুড়ে নেমে আসলো শৈশব-কৈশোর। কি অদ্ভুত সুন্দর ছিলো সেই দিনগুলো! প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাস-ভর্তি সমবয়সী, হাজিরা খাতায় গোছালো নাম- মৌ দেবনাথ। এখনও মৌ যখন দিনাজপুরের পথে পা বাড়ান, নষ্টালজিয়া ঘিরে ধরে তাকে। কৈশোরের সেই খোয়া ওঠা রাস্তা, একটা বটগাছ, পানাভর্তি পুকুর, একদল কাদামাখা শিশু, শৈশবের জং ধরা স্কুল- বাড়ি যেতে যেতে চোখে পড়ে এসব টুকরো টুকরো দৃশ্য। মৌকে কেমন যেন এলোমেলো করে দেয়।  

এমনটা যে শুধু দিনাজপুর গেলেই হয়, তা নয়। খুলনা, ভোলা, ঠাকুরগাঁও- কৈশোরে এসব এলাকা চষে বেড়াতে হয়েছে মৌকে। তিনি জানালেন, ‘এসএসসি পর্যন্ত। ’ বাবা সরকারি চাকুরিজীবী। সূত্র সেটাই। ঘনঘন স্কুল বদল। সুবিধা তো আছে তাতে, কত জেলায় ঘরবসতি! এ ক্ষেত্রে ‘সুবিধা’ শব্দটিতে আপত্তি মৌ’র। ‘নাহ্, এতবার স্কুল বদলানো কারণে আমার কোনো বাল্যবন্ধু নেই। ধরা যাক, নতুন কোনো স্কুলে ভর্তি হয়েছি। কারও সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠতে উঠতেই আবার বাবার বদলি। আবার স্কুল পরিবর্তন। ’ 

 

আলাপচারিতার বাঁক ঘুরিয়ে দু’বছর পেছনে। ২০১২ সাল। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু হয়েছে বেশিদিন হয়নি। মফস্বলের যাযাবর জীবন ততদিনে বেশ স্থির। ঢাকার বাসিন্দা তিনি। ইচ্ছে হলো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর। মডেলিংয়ের জন্য জমা দিলেন ছবি। নানান ফাই-ফরমাশ শেষ করে ক্যামেরাও দাঁড়ালো চোখের সামনে। তা-ও রবির বিজ্ঞাপনচিত্র, তা-ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী! মৌ বললেন, ‘ক্যামেরা দেখেই আমার হাত-পা কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেলো। এতদিনের সাহস, আত্মবিশ্বাস মুহূর্তেই উধাও হলো কোথায় যেন! তবু ঠিকঠাক পেরেছি। শট এনজি হয়নি। ’ 

মৌ এখন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ দিকে। গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রাঁধুনী- অনেক পণ্যের মডেল তিনি। কম সময়ে সাফল্য অনেক। সবচেয়ে বড় সফলতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘পিঁপড়াবিদ্যা’। ‘মডেল’ থেকে এখন মৌ ‘অভিনয়শিল্পী’- প্রাপ্তি এটাই। এটাই তার প্রথম অভিনয়, প্রথম ছবিও। ভাবা যায়? ‘পিঁপড়াবিদ্যা’র সাথীকে দেখে কিন্তু মোটেই ধারণায় আসে না, মেয়েটা প্রথম অভিনয় করছে। একথা তার কান পর্যন্ত পৌঁছে দিলে দেখা মিললো মৌ’র সেই নিজস্ব হাসির। গালের এক পাশে টোল ফেলে অদ্ভুত করে হাসেন মৌ। ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়েই কথা বলেন। মুখোমুখি বসে থাকা শ্রোতার ঠোঁটও প্রসারিত হয় তাতে।


প্রতিশ্রুতি ছিলো, মৌ ‘ওই রকম’ না। তিনি কী রকম সেটা বলবেন। প্রসঙ্গ ছিলো- টিভিতে, বড়পর্দায়, পত্রিকার পাতায়- এতো শতবার মুখ দেখানোর পর বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কটা আগের মতো আছে কি-না। নাকি এখন তিনি নিজেকে উঁচুস্তরের ভেবে চারপাশে খানিকটা তারকার বেড়াজাল নিয়ে চলাফেরা করছেন? মৌ শোনালেন সেই পরিচিত কথা, ‘পেশা আর ব্যক্তিজীবন কখনও এক করি না। সবার সঙ্গেই চলি। বন্ধু বন্ধুই। আমি মোটেই ওই রকম না যে, অহেতুক ভাব নেবো। ’

বাংলাদেশ সময় : ১৪৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ