ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

ন্যান্সির ড্রয়িংরুমে বসে শোনা গল্প

খায়রুল বাসার নির্ঝর, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫
ন্যান্সির ড্রয়িংরুমে বসে শোনা গল্প ন্যান্সি/ ছবি: নূর/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ড্রয়িংরুমে একটাও ছবি নেই। নান্দনিক ফাঁকা দেয়াল, এলো আকৃতিতে বসানো দু’টো সোফা, গান শোনার জন্য মাঝারি আকৃতির সাউন্ডবক্স আর ডিভিডি।

রামপুরা ডিআইটি প্রজেক্ট। আশেপাশের উঁচু উঁচু অট্টালিকার ভিড়ে যে তিনতলার বাড়িটিকে নিতান্ত অসহায় লাগে, মনে হয় ওটার নাভিশ্বাস উঠেছে যেন- ওই বাড়িতে থাকেন ন্যান্সি। তবে এমন অনুভূতি বাইরে থেকেই। কলাপসিবল গেট সরিয়ে একবার ভেতরে ঢুকে গেলেই ঘিরে ধরে অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। যেন শহরের সব শান্তি এসে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে ওখানে!

এখানে ন্যান্সির ফ্ল্যাট, একটা সুরেলা কোকিল থাকে এখানে, এই রাস্তা দিয়ে ন্যান্সি হেঁটে যান- আশেপাশের বাড়িগুলোর বাসিন্দাদের ভেতরে এমন উত্তেজনা আছে। যদিও ন্যান্সি দোহাই দিচ্ছেন নাগরিক যান্ত্রিকতার। লাজুক ভঙ্গিতে তিনি বলছেন, ‘অতোটা নেই আসলে। সবাই নিজের কাজে ব্যস্ত। আশপাশে তাকানোর এতো সময় কোথায়!’

কিন্তু গলির মাথার দোকানটাতে ঠিকই অবেলায় বাজে ‘এতদিন কোথায় ছিলে’, ‘পৃথিবীর যত সুখ’ অথবা আরও মন কেমন করা অনেক গান। একদল ছেলে বিকেলবেলায় হুল্লোড় করতে করতে চলে যায় বাড়ির সামনে দিয়ে। ওদের হাতে থাকে স্মার্টফোন, বাজে ন্যান্সির গান।

ন্যান্সির দুই মেয়ে রোদেলা ও নায়লা মাঝে মধ্যে খেলতে নামে নিচে। বাড়ির পাশে একটা ছোট ফাঁকা জায়গা আছে, ওখানেই বিকেলবেলা বাচ্চারা ছোটাছুটি খেলে। এসব ক্ষেত্রে বাচ্চারা খুব ‘দলবদ্ধ’ নীতি মেনে চলে। দলে যারা থাকে, প্রতিদিন যারা একইসঙ্গে খেলে- তাদের বাইরে আগন্তুককে কোনোভাবেই পাত্তা-টাত্তা দেয় না তারা। একদিনের ঘটনা। রোদেলা গেছে খেলতে। সে তো আর দলের না, তাই ওর সঙ্গে খেলতে চায় না কেউ। আরও পরে, জানা হলো সে ন্যান্সির মেয়ে। ব্যস, কয়েকজন দৌড়ে এসে রোদেলার হাত ধরে নিয়ে গেলো খেলবে বলে!

অথবা ময়মনসিংহের ঘটনাই বলা হোক। ন্যান্সি যখন সেখানে যান, আশেপাশের লোকরা কীভাবে যেন ঠিকই খবর পেয়ে যায়। ফলে বাড়িতে ভিড় জমে। তাকে একনজর দেখতে চায় সবাই। কথা শুনতে চায়। রসিয়ে রসিয়ে শুনিয়েও যায় অনেক গল্প। ন্যান্সি তো শান্ত-শিষ্ট স্বভাবের মেয়ে। চুপচাপ থাকেন প্রায় সময়ই। প্রশংসায় শুধু মিষ্টি করে নিঃশব্দে হাসেন।

এমন মাকে বড় মেয়ে রোদেলা খুব ভয় পায়- ন্যান্সিই জানালেন এ কথা। হয়তো সেটা ভয় নয় ঠিক, শ্রদ্ধা। অ্যালবামে, টিভিতে, পত্রিকার পাতায় মায়ের মুখ। মায়ের গান। জনপ্রিয়তা। ন্যান্সির প্রতি রোদেলার শ্রদ্ধা বাড়িয়েছে। আর নায়লা তো এখনও অনেক ছোট। সবার কোলে চড়ে বেড়ায়। চারপাশে কী ঘটছে, এসবে খুব বেশি পাত্তা দেওয়ার সময় নেই তার!

ন্যান্সি, স্বামী, রোদেলা-নায়লা- পুরো পরিবারজুড়ে হাসিখুশি আবহ গত কয়েকদিন ধরে। ন্যান্সির নতুন অ্যালবাম বেরিয়েছে। একক অ্যালবাম। নাম ‘দুষ্টু ছেলে’। এর গানগুলো করার সময় তিনি যেন পুরনো যা কিছু, ভুলে গিয়ে নিজের ভেতরেই নতুন ন্যান্সি সৃষ্টির চেষ্টায় ছিলেন সর্বক্ষণ! সুরে হালকা রক ধাঁচ, সংগীতেও। সংগীতার ব্যানারে প্রকাশিত ‘দুষ্টু ছেলে’ এখন বাজারে।

বাংলাদেশ সময় : ১৭২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ