ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

কই রইলা রে বীথি!

কামরুজ্জামান মিলু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫
কই রইলা রে বীথি! বীথি রানী সরকার/ ছবি: নূর /বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কেউ কেউ শুরুতেই বাজিমাত করে দেন। বীথি রানী সরকারও আছেন সেই দলে।

গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপনচিত্রে ‘আমারে ছাড়িয়া বন্ধু কই রইলা রে’ গানের সঙ্গে তার অভিব্যক্তিগুলো সবার মন কাড়ে। এখনও সেই প্রশংসা আসে তার কানে। রংপুর শহর থেকে ঢাকায় এসে অল্প সময়ে তিনি পেয়ে গেছেন জনপ্রিয়তা।

গ্রামীণফোনের এই বিজ্ঞাপনচিত্র বীথির স্বপ্নপূরণ করেছে। তিনি একসময় স্বপ্ন দেখতেন নিজের ছবিতে ছেয়ে যাবে সারাদেশের বিলবোর্ড! তাই শখের বসে এক পেশাদার আলোকচিত্রীকে দিয়ে নিজের কিছু ছবি তোলেন। কিন্তু কোথাও থেকে ডাক না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। পরে জানা গেলো, ওই আলোকচিত্রী কোনো বিজ্ঞাপনী সংস্থায় তার ছবি পৌঁছাননি। জন্ম রংপুরে হলেও বাবার চাকরির সূত্রে বীথি পড়াশোনা করেছেন ঝিনাইদহ স্কুল অ্যান্ড কলেজে।  

২০১০ সালের কথা। ফটোসেশনের প্রায় পাঁচ বছর পর ঢাকায় আসেন তিনি। শান্ত মারিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং কোর্সে পড়াশোনা শুরু করেন। এর ফাঁকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থায় নিজেই ছবি পৌঁছাতে গিয়ে পরিচয় হয় নির্মাতা অমিতাভ রেজার সঙ্গে। ব্যস, কপাল খুলে যায় বীথির। ‘ওই দিনটির কথা কখনও ভুলব না। বনানীতে সেদিন ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর পর আমাকে নির্বাচন করা হয়। কারণ বিজ্ঞাপনের গল্পের সঙ্গে মিল রেখে এমন একটি মেয়ে খুঁজছিলেন নির্মাতা। ’

প্রতিদিন ছোটপর্দায় প্রচার আর সারাদেশে বিলবোর্ড টাঙানোর সুবাদে অল্প সময়ে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন বীথি। নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাবও আসতে শুরু করে। শিমুল সরকারের ‘ডাইরেক্টর’ ধারাবাহিক নাটকের মাধ্যমে টিভি নাটকে অভিষেক হয় তার। এরপর একে একে সাজ্জাদ হোসেন দোদুলের ‘সংঘাত’ (জিটিভি), রোকেয়া প্রাচীর ‘সেলাই পরিবার’ (আরটিভি) ও ‘তবুও মানুষ স্বপ্ন দেখে’ (প্রচারের অপেক্ষায়) ধারাবাহিক নাটকে নিয়মিত অভিনয় করছেন তিনি। ছোটপর্দার গন্ডি পেরিয়ে রূপালি পর্দায়ও পা রেখে ফেলেছেন বীথি। তার প্রথম ছবি দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত ‘হেডমাস্টার’ মুক্তি পেয়েছে। এখন তার হাতে আছে গোলাম মোস্তফা শিমুলের ‘হরিজুপিয়া’ ও ‘কারণ তোমায় ভালোবাসি’ ছবি দুটি। এগুলোতে তার সহশিল্পী সাব্বির আহমেদ ও শুভ।  

‘হরিজুপিয়া’ তৈরি হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী নিয়ে। এতে বীথির কোনো সংলাপ নেই! আর ‘কারণ তোমায় ভালোবাসি’ ছবিতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া মেয়ের চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। ‘নাচে-গানে ভরপুর চেনা বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয়ের অপেক্ষায় আছি। ’ 

নাটক-চলচ্চিত্রের বাইরে শিগগিরই আরএফএলের দুটি বিজ্ঞাপনচিত্রে দেখা যাবে বীথির মুখ। এগুলোর নির্দেশনা দিয়েছেন সৌমেন।  

অভিনয়ের বাইরে ফ্যাশন ডিজাইনিং বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বিপণন বিভাগে কিছুদিন চাকরি করেছেন বীথি। তবে তার লক্ষ্য ভালো অভিনেত্রী হওয়া। ‘শুরু থেকেই আমার মূল লক্ষ্য ছিলো অভিনয়। সেজন্য ধীরে ধীরে ভালো ভালো গল্প আছে এমন নাটকে কাজ করেছি। এরপর চলচ্চিত্রেও নাম লেখালাম। ’

বাংলানিউজ কার্যালয়ে আড্ডা দিতে এসেছিলেন বীথি। কিন্তু গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনের মতো লম্বা চুল এখন আর তার মাথায় দেখা গেলো না। কারণ গত বছর চুল কাটিয়ে ছোট করেছেন তিনি। এজন্য বন্ধুবান্ধবরা অভিযোগের সুরে বলেছেও, ‘চুল কেটেছো কেন?’ অথচ বিজ্ঞাপনে বীথির চুল দেখে ক্যাম্পাসের অনেক ছেলে প্রেমিকাকে লম্বা চুল রাখার অনুরোধ জানিয়েছিলো। ‘চরিত্রের প্রয়োজনে অভিনয়ের জন্য নিজের বড় চুল ছোট করতে হয়েছে আমাকে। তবে এ নিয়ে আফসোস নেই। ’

বাংলাদেশ সময় : ১৪১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ