ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

এক রাইজা কত্তো কিছু!

খায়রুল বাসার নির্ঝর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৫
এক রাইজা কত্তো কিছু! রাইজা/ ছবি: নূর/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আশপাশে ছড়ানো ছিটানো পেন্সিল, রাবার, জলরঙ। চোখের মণি ঘুরছে কাগজের ওপর।

হাত ঘুরছে। দ্রুত কাজ করছে মস্তিষ্ক। মাথার মধ্যে একটা অস্পষ্ট স্কেচ আঁকা ছিলো, একটা ডিজাইন। সেটাই আস্তে-ধীরে কাগজের ওপর মূর্ত হচ্ছে। এরপর রাইজা ডুবে যাচ্ছেন মেজারমেন্টে, ট্রেসিংয়ে। এই পুরো প্রক্রিয়ার ভেতর কোথাও, এক বিন্দুও, মডেল রাইজার চিহ্নমাত্র নেই। এখানে তিনি ডিজাইনার। ইচ্ছেমতো, রুচি অনুযায়ী, অভিজ্ঞতার মিশেল দিয়ে পোশাকের ডিজাইন করে ফেলেন।

যারা রাইজাকে চেনে, জানে মডেল হিসেবেই। ডিজাইনার পরিচয়টা নতুন নাকি? রাইজা সায় দিলেন, অর্থাৎ নতুনই। ‘দেখলাম, ডিজাইনটা করতে আমার ভালো লাগছে। প্রথমে নিজের জন্য করতাম। পরে পরিচিত আরও অনেকের জন্যও করে দিলাম’- রাইজার বয়ান। প্রশ্ন আসে, ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে এসে মডেলিং কতোখানি কাজে দেয়? তার সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘দেয়। ’

রাইজা অবশ্য এটুকু বলে থেমে যাওয়ার মেয়ে নন। প্রচুর কথা বলতে ভালোবাসেন। কেউ কোনো প্রশ্ন করে আবছা উত্তর পাবে, ভাসা ভাসা ধারণা নিয়ে ফিরে যাবে; একদমই ভালো লাগে না তার। কথা ছুঁড়ে চলেন, যুক্তি, উদাহরণ; যতোক্ষণ প্রশ্নকর্তার চোখ থেকে ধোঁয়াশাটা সরে না যাচ্ছে! কথা চলে, ‘র‌্যাম্পে হেঁটেছি তো অনেকদিন। করেছি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফটোশুটও। পোশাক সেখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ডিজাইন করতে এসে অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগে। তাছাড়া আমাদের নিজেদের ব্যবসাও...। ’

বাকিটুকু পরে বলা হবে। ওটা অন্য অধ্যায়। অন্য পরিচয়। গুলিয়ে ফেলার আগে জরুরি নোট, এ পর্যন্ত রাইজার দু’টো কাজের খবর পাওয়া গেলো। মডেলিং ও ফ্যাশন ডিজাইনার। যে কথা হচ্ছিলো এবং মাঝপথে থামিয়েও দেওয়া হয়েছিলো, ‘নিজেদের ব্যবসাও...’। হ্যাঁ, নিজের শো-রুমও আছে রাইজার। অ্যাঞ্জেলিক, ওয়্যারড্রব অ্যান্ড বুটিক।

এ বছরের প্রথম দিকে শুরু করেছেন। এখানে রাইজা পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী মানুষ। চাহিদা, অর্ডার, সরবরাহ, বিক্রি- এসবের হিসেব-নিকেশ সারাক্ষণ মাথায় রাখতে হয়। তবে ব্যাপারটা অবশ্য তার ক্ষেত্রে নতুন নয়। পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অনেক আগে থেকেই। ওখানেও এসব চিন্তা-ভাবনা অল্প-বিস্তর করতে হতো তাকে, এখনও হয়। তবে ‘অ্যাঞ্জেলিক’ তো রাইজার একেবারে নিজের। ফ্রিডম যেমন আছে, চাপও আছে।

‘ফ্রিডম’ ব্যাপারটা রাইজার ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রবল। চার বছর আগে মডেলিং শুরু করেছিলেন, র‌্যাম্পে; অল্পক’দিনের মধ্যে ছেড়েও দিয়েছিলেন। কারণ ওই ফ্রিডমের তালগোল তো ছিলোই, তার ভাষায় ‘তারা অতিমাত্রায় স্টেজের’ ধরণের অনুযোগও ছিলো। বলছিলেন, ‘ওদের সঙ্গে আমার ধাঁচটা মেলে না। ওরা অতিমাত্রায় স্টেজের। রিয়েল হার্টের না। খুব বেশি কার্টেসি ম্যানারও পেলাম না। সব মিলিয়ে র‌্যাম্পটা আমার কাছে অর্থবহ মনে হলো না। ’

এরপর রাইজা কিছু বিজ্ঞাপনচিত্র করে, কিছু নাটকে অভিনয় করে রূপালি পর্দা পর্যন্ত পৌঁছেছেন। ইয়াসির আরাফাত জুয়েলের ‘দ্য ফেক’-এ অভিনয় করেছেন। তার যতোখানি কাজ ছিলো, দৃশ্যধারণ; শেষ। এখন? রাইজার কথা দিয়েই শেষ করা যাক, ‘তাড়াহুড়া নেই। যা করবো-করছি, আস্তে ধীরে। খরগোশ আর কচ্ছপের মধ্যে আমার ওই কচ্ছপের ভূমিকাটাই পছন্দ। খানিকটা হাঁটবো, জিরাবো, আরাম করে পৌঁছে যাবো গন্তব্যে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৫
কেবিএন/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ