ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

লন্ডন থেকে স্কটল্যান্ড, প্রেমটা জমেই গেলো

খায়রুল বাসার নির্ঝর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
লন্ডন থেকে স্কটল্যান্ড, প্রেমটা জমেই গেলো নুসরাত ফারিয়া / ছবি: নূর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাস্তায় চলতে চলতে প্রেম হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা আজকাল খুব ঘটছে, না? রিয়েল-রিল, দুই জীবনেই। সামাজিক সাইটগুলো ঘাঁটতে গিয়ে প্রেমের এমন ‘সত্যি’ কাহিনী চোখে পড়ছে হরহামেশা।

অবশ্য রোম্যান্সের এই ধরণটা নতুন নয়। বরাবরই ছিলো। বাস-ট্রেন-উড়োজাহাজের টিকেটটা কাটার সময় প্রায় প্রত্যেক ‘সিঙ্গেল’ বাঙালিরই একটু কল্পনা করে নিতে ভালো লাগে, ‘যদি পাশের সিটটা হয় কোনো সুন্দরী তন্বীর!’ সে অন্য ব্যাপার। ‘অন্য’ হলেও, এ লেখাটার সঙ্গে যে একেবারেই সম্পর্ক নেই, তা কিন্তু নয়।

যে ছবিটি নিয়ে সম্প্রতি এতো আলোচনা-সমালোচনা, সেই ‘আশিকী’র গল্পই এমন। লন্ডন থেকে স্কটল্যান্ড, চলতে চলতে নায়ক-নায়িকার প্রেম। পথ একটু এগোয়, প্রেম একটু গাঢ় হয়। সমর্থনের জন্য নুসরাত ফারিয়াকে যখন বলা হলো, ‘এ রকমই তো?’ হালকা আপত্তি তুলে বসলেন ওই ‘চলতে চলতে’টুকু নিয়ে। ফোনালাপ বিধায় বোঝা গেলো না, আপত্তি কতোখানি প্রবল! মাথা নেড়ে করলেন, নাকি হাত নেড়ে! শোনা গেলো, ‘ও রকম না যে, চলতে চলতে স্টোরি। প্রেমটা আগে থেকে হয়ে যায়। কিন্তু প্রকাশ পায় ওই পথে নেমে। ’

মানে ভেতরে ভেতরে যতোই প্রেম থাক, ‘কতোটা ভালোবাসি’ বোঝানোর জন্য একটা লংড্রাইভের দরকার পড়েই। তা না হলে ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ হানিমুনে দৌড়ায় কেনো!

হিরোইন হলে জ্যাকেট পাবে না!
হিরোইন হলেই যে না চাইতেই কফির কাপটা, বার্গারটা, চিকেনটা সামনে চলে আসবে; সবসময় তো তা নয়। একটা মাইনাস পয়েন্টও আছে। বিশেষ করে যখন স্কটল্যান্ডের আবহাওয়া। দিনে চামড়া-জ্বলা গরম, রাতে হাড়কাঁপানো শীত। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল থেকে যারা যায়, মানিয়ে নেওয়া বেশ মুশকিল হয়। ফারিয়ারও হয়েছিলো। মাইনাস ডিগ্রি সেলসিয়াসে শুটিং বলে, নায়িকাকে একটা জ্যাকেট পরিয়ে দেওয়া হবে; গল্পে প্রয়োজন না থাকলে, সেটা হয়ই না। কাজ করতে গিয়ে বেশ ধকল পোহাতে হয়েছে। হাসতে হাসতে মজা করে দুরবস্থার কথাটা বলে দিলেন ফারিয়া, ‘কোনো মা-বাপ নেই আবহাওয়ার। কখন কী হচ্ছে, কিছুই জানা যাচ্ছে না। সে কারণে খুব আতঙ্কিত হয়ে গিয়েছিলাম। হিরোইন হওয়ার মাইনাস পয়েন্ট হচ্ছে এটা যে, তুমি চাইলেই তোমাকে জ্যাকেট দেবে না। ব্যাপারটা এ রকম, একে তো পা ভাঙা, তার ওপর উঠোনও বাঁকা!’

আব্দুল আজিজ আঙ্কেল, নাকি ভাই?
গল্পে গল্পে ফারিয়া বলে ফেললেন, ‘জাজ মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক আছে। ’ এ ‘পারিবারিক সম্পর্ক’টা আব্দুল আজিজের মেয়ে মোহ’র সূত্রে। ফারিয়ার খুব কাছের বন্ধু মোহ। ফলে ‘কি বলে ডাকা হবে’ টাইপের একটা গণ্ডগোল কিন্তু এসেই যায়। আব্দুল আজিজকে ফারিয়া কী বলেন? ভাই নাকি আঙ্কেল? প্রশ্ন শুনে ফারিয়া হাসলেন। বললেন, ‘আসলেই একটা কনফিউশনে পড়ে গিয়েছিলাম, মোহর আব্বুকে আমি ভাই বলবো নাকি আংকেল!’ এরপর পুরো কথোপকথন জুড়ে যতোবার আজিজ নামটি এসেছে, ফারিয়া ‘ভাই’ শব্দটি যোগ করে দিয়েছেন। ফলে বুঝেই নিতে হয়, ভাই-আঙ্কেল সংক্রান্ত কনফিউশন এখন দূর!

‘আশিকী’ নিয়ে কিছু বিতর্ক, ফারিয়ার উত্তর
ছবিটি নিয়ে ফারিয়ার ভাগে যতোখানি প্রশংসা-উচ্ছ্বাস-প্রত্যাশা জমা হয়েছে, ঠিক ততোখানিই সমালোচনা দৌড়েছে ‘আশিকী’র পিছু পিছু। বাংলাদেশে যখন ছবিটির প্রচারণা হচ্ছে, পরিচালক হিসেবে দেখানো হচ্ছে দু’জনকে- আব্দুল আজিজ ও অশোক পাতি। কিন্তু কলকাতায় আবার পরিচালকের তালিকায় আব্দুল আজিজ নামটা নেই। শুধু অশোক পাতি। একইভাবে বিতর্ক ‘মেয়েদের মন বোঝা’ গানটা নিয়ে। গান একই। দু’জায়গায় শিল্পী ভিন্ন দু’জন। বাংলাদেশে যে গানটির যে সংস্করণ প্রমোট করা হচ্ছে, সেটা গেয়েছেন স্যাভি ও কনা। কিন্তু কলকাতার সংস্করণে কনা আউট, গেয়েছেন শালমালি খোলগাড়ে। ফারিয়ার কানেও গেছে এসব।

প্রশ্ন করা হলো, স্পটে আপনাকে নির্দেশনা দিয়েছেন কে? আব্দুল আজিজ নাকি অশোক পাতি? উদ্দেশ্য তিনি ধরতে পারলেন। বললেন, ‘যৌথ প্রযোজনার ছবি। অনেককিছুই যৌথভাবে হওয়া উচিত। কলকাতা তাদের পলিসিতে এগোচ্ছে, আমরা আমাদের পলিসিতে যাবো। দিনের শেষে, কারও না কারও ঘাড়ে পা দিয়ে তো টেকনোলজিক্যালি আপগ্রেড হতেই হবে। আর সেটা যদি পাশ্ববর্তী দেশ হয়, আমার মনে হয় না এতে খারাপ কিছু আছে। ...ডিরেকশনের পার্টটা, ওরকম হয়নি, হয়তো কোনো একটা পার্ট আজিজ ভাই বলেছেন। কোনোটা অশোক পাতি বুঝিয়ে দিয়েছেন। ’

মাহির বিকল্প ফারিয়া?
ফারিয়াকে যখন ‘প্রেমী ও প্রেমী’তে নেওয়া হলো (‘আশিকী’র আগের নাম), তখন থেকেই কানাঘুষাটা চলে আসছে। বিভিন্ন আড্ডায় লোকজন বলছেন। অনেকে বিশ্বাসও করছেন। জাজ মাল্টিমিডিয়ার আগের সব ছবিতেই তো মাহিয়া মাহির একচ্ছত্র আধিপত্য ছিলো। তিনিই ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির অঘোষিত একক নায়িকা। মাসকয়েক আগে মাহি-জাজ সংক্রান্ত যে কাণ্ড ঘটলো, সেটা সবাই জানে। প্রসঙ্গটা পুরনোও। কিন্তু ‘আশিকী’তে ফারিয়ার অভিনয়কে কেন্দ্র করে, ওই পুরনো প্রসঙ্গই তরতাজা হয়ে সামনে আসছে বারবার। অনেকে বলছেন, মাহি এখনও থাকলে ফারিয়ার নায়িকা হয়ে ওঠা কঠিনই ছিলো। অনেকে তো এ হিসেব করতেও নেমে পড়েছেন যে, মাহির বিকল্প হিসেবে ফারিয়া কতোখানি সফল হতে পারবেন!

প্রসঙ্গ তুলে দিয়ে আমরা চুপচাপ বসে রইলাম। বাকিটা ফারিয়াই বলে গেলেন, ‘আমি আসলে এসব ক্যাচালে... (একটু থেমে) আমি এখানে এসেছি কাজ করার জন্য। কিছু ভালো কাজ করার জন্য। কারও বিকল্প হিসেবে আসিনি। কারণ, তিনি যখন কাজ করছিলেন, তখনও আমি কাজই করছিলাম। এমন না যে, শোবিজে আমি নতুন একটা মেয়ে, আমাকে পরিচিত করে দিয়েছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। তা কিন্তু না। তারা আমাকে নতুন একটা প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। নতুন একটা ক্যারেক্টার দিয়েছে। আমি কিন্তু আমার জায়গায়...। ’

শেষ করার আগে বললেন, ‘আমার মনে হয় সে-ও (মাহি) এরকম চিন্তা করে না। আমিও এ রকম চিন্তা করি না। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
কেবিএন/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ