ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

সুনিধির সুরে মাতাল এক সুন্দর সন্ধ্যায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৫
সুনিধির সুরে মাতাল এক সুন্দর সন্ধ্যায় সুনিধি চৌহান / ছবি: নূর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

দিন-রাত সারাক্ষণ যেখানেই যাওয়া হচ্ছে, যে হিন্দি সিনেমার গানগুলো বাজে টিভিতে-রেডিওতে-মোবাইলে-পাড়ার মোড়ের মাইকে; জনপ্রিয়তার হিসেবে গানগুলোর বেশিরভাগেরই মালিকানা সুনিধি চৌহানের। সেই সুনিধি ঢাকায় আসবেন।

চোখের সামনে দাঁড়িয়ে একেবারে সরাসরি গাইবেন ওই গানগুলোই, যেগুলো বিড়বিড় করে ঠোঁট অভ্যস্ত। উত্তেজনা থাকারই কথা। মুগ্ধতাও থাকবে। হাততালি, সিটি বাজানো, অহেতুক চিৎকার, তাল-বেতাল নাচ; এর সবই ছিলো। কিন্তু বাড়তি হিসেবে প্রথমেই ঢুকে পড়েছিলো ‘বিস্ময়’।

সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হওয়ার কথা কনসার্ট ‘উইন্টার ব্লাস্ট’। বিকেলের একটু পর থেকেই বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে দর্শকের আনাগোনা, গাড়ির ভীড়। অপেক্ষা পেরিয়ে সুনিধি মঞ্চে এলেন যখন গান গাইতে গাইতে, একটা চাপা গুঞ্জন পুরো নবরাত্রি হলরুম জুড়ে ছড়িয়ে গেলো, ‘এতো শুকালো কীভাবে!’

সুনিধি-লাইভের পুরো স্বাদ নিতে আগেই যারা ইউটিউব ঘেঁটে তার পুরনো কিছু কনসার্ট দেখে এসেছিলেন, তাদের চোখে তো বিস্ময় আরও বেশি। সত্যিই অনেক শুকিয়েছেন তিনি। এই সুনিধি সুর তো অবশ্যই, পুরো কনসার্টে রূপও ছড়িয়ে গেছেন। রাত ন’টা তখন। নবরাত্রি হল দর্শকে পরিপূর্ণ। উপস্থাপক এলেন। তারপর স্বাভাবিকভাবেই ঘোষণা করলেন ‘দ্য গ্ল্যামারাস, ওয়ান অ্যান্ড অনলি..’, বাকি কথাটুকু হারিয়ে গেলো হাততালিতে-উচ্ছ্বাসের আড়ালে। মঞ্চের বিরাট পর্দায় একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যরে ভিডিও শুরু হলো। তাতে সুনিধি নানান রূপের-রঙের।

শেষ হতেই, অন্ধকারের মধ্যে, সুনিধির কণ্ঠ ছড়িয়ে পড়ে। উচ্ছ্বাস উত্তাল হয়। হাজার জোড়া চোখে ঘোর। সবাই একজনকেই খুঁজছে। কিন্তু তখনও, মঞ্চের হালকা আলোয় যতোটুকু আবিষ্কৃত হয়, যন্ত্রশিল্পীরা ছাড়া মঞ্চে কেউ নেই। সুনিধিও নেই। শুধু তার কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে। এভাবেই দমবন্ধ মুহূর্ত কিছুক্ষণ। তারপর হঠাৎই ডানদিক থেকে খানিকটা দৌড়ের মতো করে সুনিধি মঞ্চের মাঝখানটায় এসে দাঁড়ান। হাতে মাইক্রোফোন। মুখে হাসি। কালো পোশাকে আকর্ষণীয়া শিল্পী। দু’একটা কথা বলেন।

বলেন, ‘আজ কোনো লজ্জা-শরমের বালাই হবে না। আজ সবাই জোরে চিৎকার করবো। শুধু গান হবে। আনন্দ হবে। ’ এ কথা শোনার পর কি আর কেউ শুধু ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে চুপচাপ বসে থাকে? সিটির বেগ আরও বাড়ে। দুলে দুলে নেচে নেচে ওঠা আরও প্রবল হয়। সুনিধি তো জানতেনই, বাংলাদেশের মানুষ তার গান কতোটা ভালোবেসে শোনে। জানতেন বলেই, শুরুতে, এসেই, আগুনে ঘি ছড়িয়ে দিলেন।

শুরু হলো ‘ধুম মাচালে’ দিয়ে। গানের ফাঁকে ফাঁকে কিছু কথাবার্তা। আর আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পারফরমেন্সে মাত্র ক’মিনিটের জন্য একবার বিরতি সুনিধির। বাকি সময় মঞ্চের এপ্রান্তে-ওপ্রান্তে ঘুরে, নেচে, লাফিয়ে, চুপচাপ দাঁড়িয়ে গেয়ে চললেন ‘হালকাট জাওয়ানি’, ‘ডান্স পে চান্স মারলে’, ‘আলি আলি’, ‘বিড়ি জ্বলাইলে’, ‘কামলি’, ‘গানা বাজা দে’; এরপর আর হিসেব রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। সুনিধি গেয়ে চলেন, স্থানে স্থানে দশ-বারোজন করে দাঁড়িয়ে-গোল হয়ে উদ্দাম নাচে মাতে। হেমন্তের রাত গভীর হয়।

মাঝে সুনিধি দর্শকসারি থেকে একজনকে ডেকেও নিয়েছিলেন তার সঙ্গে নাচার জন্য। ৬ নভেম্বর এ কনসার্টটি আয়োজন করেছিলো ইনসেপশন মিডিয়া ও ক্লাব ইলিভেন। সুনিধি ছাড়া ভারত থেকে আরও একজন এসেছিলেন- ইন্ডিয়ান আইডলের রাকেশ মাইনি। আর ছিলেন হাবিব।

বাংলাদেশ সময়: ০৪০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৫
কেবিএন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ