ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

চোখে লেগে থাকা প্রেমের দৃশ্য

সোমেশ্বর অলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
চোখে লেগে থাকা প্রেমের দৃশ্য চম্পা, ওমর সানি, বাপ্পারাজ ও ফেরদৌস

সিনেমাপ্রেমী মানুষ মাত্রই প্রিয় ছবির সংলাপ আওড়াতে পছন্দ করেন। প্রেমের সংলাপ হলে তো কথাই নেই! সেই কথা, সেই দৃশ্য সবসময় লেগে থাকে ভক্তদের চোখে।

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ফিরে দেখা যাক কিছু প্রেমের দৃশ্য ও সংলাপ। খোদ তারকাদের প্রিয় প্রেমের সংলাপগুলো কেমন? চম্পা, ওমর সানি, বাপ্পারাজ ও ফেরদৌস- জনপ্রিয় এই অভিনয়শিল্পীরা বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন নিজেদের আওড়ানো প্রিয় প্রেমের সংলাপ নিয়ে।

বাপ্পারাজ
প্রেম-বিরহের ছবি হিসেবে ‘ভুলো না আমায়’ অনেকেরই প্রিয়। আমারও ভীষণ পছন্দের ছবি এটি। এখানে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলাম আমি, শাবনূর ও অমিত হাসান। ছবিটির বেশকিছু দৃশ্য এখনও আমার চোখে ভাসে। অবশ্যই প্রেমের দৃশ্য।

ছবিটিতে একটি দৃশ্য আছে পার্কে। শাবনূরকে ভালোবাসার কথা বলতে যাবো আমি। গিয়ে দেখি অমিত হাসানকে সে আপন করে নিয়েছে। আমি তখন হাউমাউ করে কাঁদছি। এই দৃশ্যটা অনেকের মনে গেঁথে আছে।

আরেকটা দৃশ্যে শাবনূর আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘তুই আমারে ভালোবাসস? আমারে বিয়া করবি?’ আমি বলি, ‘হ বাসি বাসি। বিয়া করমু না কেন?’ এই দৃশ্যটাও সুন্দর।

‘ভুলো না আমায়’ ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন ওয়াকিল আহমেদ। ছবির গানগুলোও আমার খুব প্রিয়। ‘আমি তো একদিন চলে যাবো/বেঁধে রাখা যাবে না/অনেক দূরে হারিয়ে যাবো কোথায় খুঁজে পাবে না…’ গানটিতে অংশ নিয়েছিলাম আমরা তিনজন। এই গানের কথা ও দৃশ্যগুলো বেশ মনে পড়ে।

* বাপ্পারাজের ‘ভুলো না আমায়’ ছবির অংশবিশেষ :


চম্পা
‘পৃথিবীর যতো সুখ আমি তোমারই ছোঁয়াতে খুঁজে পেয়েছি/মনে হয় তোমাকেই আমি জনম জনম ধরে চেয়েছি’- কালজয়ী এই প্রেমের গানে ঠোঁট মিলিয়েছি আমি। আমার সহশিল্পী ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। ছবির নাম ‘সহযাত্রী’। পরিচালক আজহারুল ইসলাম খান। প্রিয় প্রেমের দৃশ্যের মধ্যে এই গানটির কথা খুব মনে পড়ছে এখন। এ ছাড়া ‘ভেজা চোখ’, ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘শেষ খেলা’ কিংবা ‘অন্ধ প্রেম’ ছবিতে আমার পছন্দের বেশকিছু প্রেমের দৃশ্য আছে, যা এখনও চোখে লেগে আছে।

‘অন্ধ প্রেম’ ছবিতে ‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিলো গায়ে’ গানটি বিরহের গানের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে। মান্নার সঙ্গে এ ছবিতে সুন্দর সুন্দর কিছু রোমান্টিক দৃশ্য রয়েছে আমার। এর মধ্যে একটি দৃশ্যে আমরা দু’জন দু’জনকে ভাত খাইয়ে দিয়েছি।

‘শেষ খেলা’ ছবিতেও বেশকিছু রোমান্টিক দৃশ্য আছে। এর মধ্যে ‘সুন্দর সন্ধ্যায়’ গানটিতে আমি, রাজীব আর মান্না কিছু সুন্দর মুহূর্ত একসঙ্গে কাটিয়েছি। গানটি মানুষের মুখে মুখে ফেরে এখনও।

‘কাশেম মালার প্রেম’ ছবিটির কথা না বললেই হয়। পরিবার থেকে মালার (আমার) বিয়ে ঠিক করা হয়। আমি ভালোবাসি কাশেমকে (মান্না)। বধূ সেজে হাজির হই কাশেমের সামনে। এই দৃশ্যটা আমার বেশ প্রিয়। একটি গাছে হেলান দিয়ে আমি কাশেমের সঙ্গে সংলাপ বিনিময় করি। এখনও মনে আছে কথাগুলো। ‘…আমি এই বিবাহ কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। …আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না কাশেম। ছোটকাল থেকে আমি তোমাকে ভালোবেসে আসছি। এই ভালোবাসা আমি কিছুতেই ভুলে যেতে পারবো না। ’ কাশেম এ সময় ধনী-গরীবের মিলন হয়না বলে সংলাপ দেয়।

প্রতি উত্তরে মালা বলে, ‘তাহলে ছোটবেলা থেকে কেনো আমার কাছে এসেছো? কেনো আমার ভালোবাসা গ্রহণ করেছো? কেনো আমার মনে ভালোবাসার আগুন জ্বালিয়েছো? বলো, জবাব দাও…তুমি যদি আমাকে বিবাহ করতে না পারো…১৫ বছর আগের আমার জীবন ফিরিয়ে দাও…’। এরপর কাশেম বলে, যে চোখ দিয়ে এতোদিন তাকে দেখেছি সেই চোখ অন্ধ করে দেওয়ার জন্য। মালা কাশেমের দেওয়া ছুঁড়ি দিয়ে চোখ তুলতে যায়। আবেগে কাশেমের বুকে লুটিয়ে পড়ে মালা…।
 
* চম্পার প্রিয় প্রেমের গান ‘পৃথিবীর যত সুখ’ :


ওমর সানি
অনেক রোমান্টিক ছবিতে অভিনয় করেছি। আমার সহশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম মৌসুমী। প্রেমের ছবির নায়ক হওয়ার সুবাদে প্রেমময় সংলাপ করেছি প্রচুর। একাধিক ছবির একাধিক দৃশ্যের কথা বলবো না। একটি দৃশ্যের কথাই বলতে চাই। আমার মনে হয়, ভক্তরাও এই দৃশ্যটি মনে রেখেছেন।

এজে মিন্টু পরিচালিত জনপ্রিয় ছবি ‘প্রথম প্রেম’। মৌসুমীর সঙ্গে বেশকিছু রোমান্টিক দৃশ্য ছিলো এতে। মৌসুমী আমাকে বলেছিলো, ভালোবাসার প্রমাণ হিসেবে পাহাড় থেকে ফুল এনে ওকে দিতে হবে। আমি ফুল আনতে যাই, একসময় আমাকে আর দেখতে পায় না সে। ওর মনে হচ্ছিলো আমি হয়তো পড়ে গিয়ে মরে গেছি। কিন্তু একটু পরই ঠিকই ওর হাতে ফুল তুলে দিই। এই দৃশ্যটি আমার সবসময়ের প্রিয়। চোখে লেগে থাকার মতোই একটি দৃশ্য এটি। ছবিটির গানগুলো এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। আমিও প্রায়ই গুণগুণ করি।

* ওমর সানি অভিনীত গান ‘প্রথম প্রেম’:  


ফেরদৌস
শুধু দেশের ছবি নিয়ে বলতে হবে? নিজের দেশ কিংবা নিজের অভিনীত দৃশ্যের কথা বলার আগে বিখ্যাত কিছু প্রিয় প্রেমের দৃশ্যের কথা বলতে চাই। আমার খুব ভালো লাগে ‘সপ্তপদী’ ছবিটি। উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেনের বেশকিছু রোমান্টিক ‍দৃ্শ্য চোখে ভাসে। অনেকদিন পর তাদের যখন দেখা হয়। উত্তমের মুখে তখন দাড়ি। সুচিত্রা তখন অসুস্থ। সুচিত্রা বলছেন, ‘ডক্টর চিকিৎসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ’ উত্তম যখন মুখ ফিরে তাকান। বিস্মিত সুচিত্রা ‘নো নো’ বলে চলে যান। এরপর ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজে ‘এই পথ যদি না শেষ হয়…’। এই দৃশ্যটা আমার দেখা সেরা।

আর বলবো ‘টাইটানিক’-এর একটি দৃশ্যের কথা। একটি কাঠের টুকরায় ভাসছে নায়িকা। নায়ক ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে, আহা…! রাজ্জাক-ববিতা জুটির ‘অনন্ত প্রেম’ ছবির গান ‘ও চোখে চোখ পড়েছে যখনই’ দুর্দান্ত।

এমন উৎকৃষ্ট তিনটি প্রেমের দৃশ্যের পর নিজের অভিনীত ছবি নিয়ে বলা আসলেই মুশকিল। তবু নিজের কথা যেহেতু বলতে হবে, তাই বলি। ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র কথা অবশ্যই উল্লেখ করবো। শুধু আমার নয়, সিনেমার শেষে এসে নায়িকার সঙ্গে প্রথম দেখার বিষয়টি অনেকেরই পছন্দের। ‘খায়রুন সুন্দরী’তে মৌসুমীর সঙ্গে কিছু দৃশ্য আছে, এগুলোও ভালো লাগে। যেমন- একটা ঘরে শুয়ে আছে মৌসুমী। আমি এসে ওকে চুড়ি দিয়ে যাই।

শাবনূরের সঙ্গেও কিছু সুন্দর রোমান্টিক ‍দৃশ্য আছে বিভিন্ন ছবিতে। এর মধ্যে ‘ফুলের মতো বউ’ ছবিতে একটা দৃশ্যে বাগানের মধ্যে আমরা কথা বলেই যাচ্ছি, বলেই যাচ্ছি। এটাও ভালো লাগার দৃশ্য। রোমান্টিক গানের মধ্যে ‘সাগরেরর মতো গভীর’, ‘কলঙ্ক হয় হোক আজ রাতে’, ‘নদীর নাম ময়ূরাক্ষী, ‘স্বপ্ন দেখি আমি স্বপ্ন দেখি’ সবসময় ভালো লাগে।  

* ফেরদৌসের প্রিয় রোমান্টিক গান ‘নদীর নাম ময়ূরাক্ষী’:

 বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
এসও/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ