ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

‘লজ্জা পাবেন না, হাততালি দিন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
‘লজ্জা পাবেন না, হাততালি দিন’ পাপন/ছবি: নূর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

‘এথনিসিটি পাপন লাইভ ইন ঢাকা’ কনসার্টের বড় প্রাপ্তি এই বাক্যটি, ‘লজ্জা পাবেন না, হাততালি দিন’। হিন্দিতে এই হাস্যরসমাখা শব্দগুলো উচ্চারণ করেছেন ভারতের উদীয়মান গায়ক পাপন।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিনি গান শোনালেন ঢাকার শ্রোতাদের।

কেমন হলো এই আয়োজন?  উপস্থিত দর্শকদের অনেকেই জনসমাগম কম দেখে মন্তব্য করেছেন, কারিনার অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যাওয়ায় অনেকেই ভরসা পাননি এখানে আসার। এর মন্দ প্রভাব হতে পারে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, পাপনের গান টাকা খরচ করে শোনার কিছু নেই। কয়েক মাস আগে ফোক ফেস্টে ফ্রি শুনে অনেকে তার প্রশংসা করেছিলো ঠিকই । এটাকে পুঁজি করে পাপনকে কেন্দ্র করে বড় আয়োজন সফল করা সহজ কথা নয়।

পাপনের নিঃসন্দেহে দারুণ গান করেন। ভিন্ন ধরনের গায়কী আর লোকজ গানে তিনি পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। ঢাকায়ও তার ভক্ত কম নয়। কিন্তু দিনটি সব মিলিয়ে পাপনের পক্ষে ছিলো না। বিলম্বে অনুষ্ঠান শুরু করে ঠিক জমাতেও পারেননি কেনো যেন। হাতেগোনা দর্শক কতোখানি ‘উপভোগ’ করলেন সেটাও বোঝা গেলো না।

সাড়ে ৯টার আগে জিন্সের শার্ট পরা পাপন এলেন মঞ্চে। তার গাওয়া বিপুল জনপ্রিয় আসাম অঞ্চলের গান ‘দিনে দিনে’ দিয়েই শুরু করলেন। ইউটিউবের কল্যাণে শোনা ‘দিনে দিনে’র সেই নিখুঁত কণ্ঠটি যেন সবাই খুঁজতে শুরু করলেন। তাই ছক্কা হাঁকালেও, কুড়িয়ে পেলেন চার। দর্শকের হাততালি সেই কথাই বললো যেন!

হিন্দি-ইংরেজি-বাংলা মিশিয়ে রসিকতাও চললো গানের ফাঁকে ফাঁকে। ‘দিনে দিনে’ গানটির আধ্যাত্মিক অর্থ তুলে ধরলেন সবার সামনে।
কথায় কথায় জানালেন, দ্বিতীয়বারের মতো এলেন এ দেশে। ফোক ফেস্টিভ্যালে গাইতে পেরে তিনি আনন্দ পেয়েছিলেন। এবারও তেমন আনন্দ থেকে বঞ্চিত হতে চান না।

সিগনাল ইভেন্টসের আমন্ত্রণে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটির নবরাত্রি হলে পাপন একে একে গাইলেন তার কিছু জনপ্রিয় গান। এর মধ্যে ‘বরফি’ ছবির ‘কিউ’ গানটি পরিবেশনের সময় সানগ্লাসটা নতুন করে পড়ে শুরু করেন পরিবেশনা। ছবির নায়ক রণবীর কাপুরের মতো কিছুটা নেচেও দেখালেন তিনি। দোলাচলের গানটি বেশ উপভোগ্য ছিলো।

হিন্দি ও বাংলা ভাষার মিশেলে ‘ও মেয়ে চল’ গানটি তেমন কেউ শোনেননি এর আগে। দর্শকদের কণ্ঠ মেলানো টের পাওয়া গেলো না। তবে ‘আজ খুব মেঘ করুক’ গানটিতে সবাই নড়েচড়ে বসেছেন। উত্তেজনা ছিলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন যে গানের মাধ্যমে, সেই ‘মোহ মোহ কে দাগে’ (দাম লাগা কে হ্যায়সা) পরিবেশনার বেলায়। ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর ‘তু জো মিলা’ গান শেষ করে পাপন ছুঁড়লেন শিরোনামের কথাগুলো। তার কথা রাখতে জোরেসোরে হাততালি দিলেন সবাই।

২০০৭ সালে সংগীতে আবির্ভাব পাপনের। শিখেছেন ক্ল্যাসিক্যাল সংগীতও। বাবা ছিলেন সংগীতের মানুষ। তার কাছে গানের হাতেখড়ি। এসব জানাতে জানাতে ‘হেমন্ত সংগীত’ জুড়লেন তিনি। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত সেই গান ‘এই মেঘলা দিনে একলা’ নতুন সংগীতায়োজনে পরিবেশন করলেন। অনুরোধে গাইলেন আরেকটি ক্ল্যাসিক নাম্বার। ‘আমি যে জলসা ঘরে’তে পাপন বোঝালেন নিজের গায়কীর শক্তি। সব মিলিয়ে শোনালেন দেড় ডজনের বেশি গান।

পাপন আসার আগে আসর জমিয়েছেন শাওন গানওয়ালা। তিনি তরুণ গায়ক। এখানে গেয়েছেন তার ব্যান্ড ‘য ফলা’র সঙ্গে। ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ ছবির ‘দিন চলে যায়’ গান গেয়ে পরিচিতি পেলেও এই মঞ্চে সেটি গাননি তিনি। লোকজ জনপ্রিয় গানগুলোই ছিলো তার পরিবেশনার তালিকায়। লালন, নজরুলসংগীত, রাধারমণ ও প্রচলিত প্রায় দু’ডজন গান টানা গেয়েছেন তরুণ এই গায়ক।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
এসও/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ