ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তারার ফুল

বাংলানিউজের মুখোমুখি গৌতম ঘোষ

‘রান্নাঘরটা বাংলাদেশে, শোবার ঘর ভারতে!’

জনি হক, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৬
‘রান্নাঘরটা বাংলাদেশে, শোবার ঘর ভারতে!’ গৌতম ঘোষ/ছবি : নূর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

‘দেশভাগ হয়ে গেলো। দুই দল মানুষ দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেলো।

একদল হিন্দু, একদল মুসলমান। বাঙালি কেউ রইলো না’- ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার গৌতম ঘোষের নতুন ছবি ‘শঙ্খচিল’-এর সংলাপ এগুলো। সংলাপই বলে দিচ্ছে এর পরতে পরতে আছে দেশভাগের ছায়া। এই প্লটটা এলো কীভাবে? চলুন জানি।

একদিন বাংলাদেশি একটি মোবাইল নম্বর থেকে গৌতম ঘোষ ফোন করলেন প্রযোজক হাবিবুর রহমান খানকে। তিনি তো অবাক। গৌতম ঘোষ বাংলাদেশে আসবেন আর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এর প্রখ্যাত এই প্রযোজক জানবেন না তা হয় কি করে! তার প্রযোজনায় ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ও ‘মনের মানুষ’ ছবি দুটি পরিচালনা করেছেন গৌতম ঘোষ। তিনি ফোন করে জানালেন, সীমান্তে বেড়াতে এসেছেন! প্রযোজকের তো আর সেটা বিশ্বাস হয় না। তিনি নিশ্চিত, এখানে অন্য কোনো ফন্দি আছে! কথা দিলেন কলকাতায় গিয়ে জানাবেন।

কয়েকদিন পর গৌতম ঘোষ কলকাতায় যেতে বললেন। হাবিবুর রহমান খান গেলেন। তাকে গৌতম জানান, গল্প পেয়েছেন! সেটা শুনে প্রযোজক জানালেন, তার ভীষণ শখ ছিলো দেশভাগ নিয়ে কাজ করার। এটা পুরোপুরি দেশভাগ বিষয়ক গল্প না হলেও পেছনে এর ছায়া আছে, তাই তিনি খুব খুশি।

‘শঙ্খচিল’-এ স্কুল শিক্ষক চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। যৌথ প্রযোজকও তিনি। তার স্ত্রীর ভূমিকায় কুসুম সিকদার আর তাদের মেয়ের চরিত্রে আছেন সাঁঝবাতি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক চরিত্রে কাজ করেছেন মামুনুর রশীদ। আগামী ১৫ এপ্রিল দুই বাংলায় মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। তার আগে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে গেলেন গৌতম ঘোষ। এর ফাঁকে বাংলানিউজের মুখোমুখি হন তিনি।

বাংলানিউজ : আপনি ফরিদপুরের লোক। অনেক বছর আগে ‘পদ্মা নদীর মাঝি’র মাধ্যমে পূর্বপুরুষের দেশে এসে প্রথমবার কাজ করেছিলেন। আপনার বাবার মুখে তখন কি শুনলেন?
গৌতম ঘোষ : ওই ছবিটি বানানোর কথা যখন আমি ঘোষণা করি এবং আমার বাড়িতে বলি, ততোদিনে আমি নাম করে ফেলেছি, আমার বাবা বললেন যে, ‘এতোদিনে একটা কামের কাম করতেছস!’ সে যে তার কি আনন্দ! এ আমি বলে বোঝাতে পারবো না। ওই ছবিটা ছিলো একটা যাত্রা, একটা ক্ল্যাসিক। সেখানে বঙ্গজাতি, তার সঙ্গে নায়ক বা নায়িকা হিসেবে পদ্মা নদী, তার যে পরিবর্তন, তার সঙ্গে মানব জীবনের পরিবর্তন, নদীর দু’পাড়ে যারা বাস করে তাদের জীবনের পরিবর্তন, অনুভূতির পরিবর্তন, ঋতুর সঙ্গে অনুভূতির পরিবর্তন; এসব তুলে ধরেছিলাম সেই বিরাট ক্যানভাসে সাহিত্য নির্ভর চলচ্চিত্রে।

বাংলানিউজ : তারপর তো অনেকদিন বাংলাদেশে ছবি করেননি...
গৌতম ঘোষ : হ্যাঁ। ‘মনের মানুষ’-এর জন্য আবার এসেছিলাম। এটার প্রয়োজন ছিলো। তখন মনে হয়েছিলো, এখন লালনকে চাই। এই অসহিঞ্চু পৃথিবীতে সর্বত্র- যেখানে ধর্মীয় অসহিঞ্চুতা, রাজনৈতিক অসহিঞ্চুতা এবং সংস্কৃতির অসহিঞ্চুতা, সেখানে আমাদের লালনকে খুব দরকার মনে করেছি। লালন আমাদের সবার। দুই বাংলার শিল্পী, কলাকুশলী কাজ করেছেন এ ছবিতে। সে অভিজ্ঞতা অসাধারণ।

বাংলানিউজ : প্রযোজক হাবিবুর রহমান খানের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
গৌতম ঘোষ : তিনি পাগল মানুষ! ‘মনের মানুষ’-এর সময় তাকে একবার একজন জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘আপনার ছবির বাজেট কতো?’ তিনি বললেন, ‘আমার তো বাজেট নেই! পরিচালক যা চাইবে, সেটাই আমার বাজেট। ’ তার বিশ্বাস ছিলো, আমি কোনো অপচয় করবো না, ছবির জন্য যেটা লাগে সেটাই আমি করবো। সেটাই আমাদের ধর্ম। চলচ্চিত্র পর্দায় খরচটা যেন দেখা যায়। ছবিটা ভালো বানানোর জন্য খরচটা যেন ওখানেই হয়। ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘মনের মানুষ’-এর পর এবার ‘শঙ্খচিল’-এর কাজ করলাম আমরা। এভাবে আমি জড়িয়ে আছি বাংলাদেশের সঙ্গে।

বাংলানিউজ : ‘শঙ্খচিল’ বানাতে আবার এলেন এই বাংলায়। নিশ্চয়ই ভালো লাগছে?
গৌতম ঘোষ : বাংলাদেশে আমাদের পূর্বপুরুষের বাসভূমি। আমি আবার পূর্বপুরুষদের দেশে এসে ছবি বানাতে পেরে ধন্য। এখানে এলে একটা অসম্ভব অনুভূতি সবসময় কাজ করে। শৈশবে বুঝতে পারতাম, একটা জাতি ভাগ হয়ে আছে। অতো অল্প বয়সে সব বুঝতে না পারলেও একটা অনুভূতি কাজ করতো। আমি ছোট্ট একটা উদাহরণ দেই। আজ থেকে ৩০ বছর আগে ফরিদপুরে আমাকে সম্মান জানানো হয়েছিলো, তখনও একথাগুলোই বলেছিলাম।

ছোটবেলায় যখন ঈদের ছুটিতে বা পূজোর ছুটিতে কিংবা ক্রিসমাসের ছুটিতে আমার স্কুলের বন্ধুবান্ধবরা বলতো- ‘আমরা ছুটিতে দেশের বাড়িতে যাচ্ছি’। তখন আমি মায়ের কাছে প্রশ্ন রাখতাম, ‘মা, ওরা তো দেশের বাড়িতে যায়, আমরা কি যেতে পারি না দেশের বাড়িতে?’ বাবা বলতেন, ‘ও তুই বুঝবি না। দেশের বাড়ি একটা আছে। কিন্তু ওখানে এখন যাওয়া যায় না!’

এই কথাটা আমার কানে বাজতো। ভাবতাম কেনো? কী? পরবর্তীতে যখন বয়স হলো, শিক্ষা-দীক্ষা লাভ করেছি, ইতিহাস পড়েছি। তখন বুঝতে পারলাম, আমাদের বঙ্গজাতিকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিলো। এই ভাগ করার পেছনে কার কতো সম্মতি ছিলো তা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। সে এক ইতিহাস। সেটা ঘটে গেছে।

বাংলানিউজ : বঙ্গভঙ্গই তাহলে ‘শঙ্খচিল’ নির্মাণে আপনার অনুপ্রেরণা?
গৌতম ঘোষ : আমার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে তাড়িত হয়েছিলো বঙ্গভঙ্গের বেদনা। ঋত্বিক ঘটক তার বিভিন্ন ছবির মধ্যে এ বেদনার কথা বলেছেন। দেখুন, আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি। বাংলা আমাদের সংস্কৃতি। বাঙালিরা ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়ে। কেউ থাকেন বাংলাদেশে, কেউ থাকেন ভারতে, কেউ থাকেন আমেরিকায়, কেউ থাকেন ইংল্যান্ডে, কেউ থাকেন মধ্যপ্রাচ্যে। এটা বিরাট জাতি। সেই জাতি তো একটাই, তার ভাষা একটা, তার সংস্কৃতি একটা। ভিন্ন ধর্মমত হতে পারে। পৃথিবীর সর্বত্র তা আছে, বিভিন্ন ধর্মের মানুষ আছে, এ নিয়ে একান্ত বিশ্বাস। তা সত্ত্বেও যে সংস্কৃতি, একটা বৃহৎ বঙ্গ সংস্কৃতি তা আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে।

ফলে ভাগ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা কোথায় একটা মনের মধ্যে থেকে গিয়েছিলো। আমি এতোবার বাংলাদেশে এসেছি, কাজ করেছি, প্রতি মুহূর্তেই মনে হয়, সত্যি তো কি হলো, কেনো হয়েছিলো? এই প্রশ্নটা চিরকাল থেকে যাবে। তবে ইতিহাসে যেটা ঘটে যায় সেটা ঘটে গেছে। তবে ইতিহাসকে আমরা প্রশ্ন করি, তার কারণ ভবিষ্যতে তার কাছ থেকে কিছু শিক্ষা গ্রহণ করা যায় কি-না। সেজন্য আমরা ইতিহাস পড়ি, ইতিহাস নিয়ে প্রশ্ন করি। আর ইতিহাস হচ্ছে এমন একটা জিনিস, অতীতে যেটা ঘটে গেছে বা উদাহরণ রয়েছে। বর্তমান বলতে কিছু নেই। এই যে আমি কথা বলছি, এটা অতীত হয়ে গেলো। বর্তমান হলো অতীত এবং ভবিষ্যতের একটা সামান্য কম। ফলে অতীত থেকে আমরা শিখে খানিকটা ভবিষ্যতের দিকে এগোতে পারি। শিক্ষা গ্রহণ করি।

বাংলানিউজ : ‘শঙ্খচিল’-এর গল্পটা কেমন?
গৌতম ঘোষ : এই ছবিটা হচ্ছে এখনকার গল্প। এই সময়ের গল্প। এ ছবিটা কিন্তু দেশভাগ নিয়ে নয়। দেশভাগের স্মৃতি এর পেছনে রয়েছে। ছবিটা এখনকার একটা পরিবারের গল্প। একটা শিক্ষিত পরিবার। তারা সীমান্তে বসবাস করে। তাদের আনন্দ-বেদনা, তাদের হাসি-কান্না সবকিছু নিয়েই ‘শঙ্খচিল’। সীমান্ত অঞ্চলে বিজিবি ও বিএসএফ-এর কাছে কিছু ঘটনা শুনি, কিছু সত্যি গল্প শুনি, সব সত্য ঘটনা। সে ঘটনাগুলো আমাকে তাড়িত করে। আমার মনে হয়েছে, এ গল্পটা কেউ জানে না। এটা এখনকার গল্প।

বাংলানিউজ : সীমান্তে ছবিটির কাজ করতে গিয়ে অদ্ভুত কি দেখলেন?
গৌতম ঘোষ : আমরা ছবিটার শুটিং করেছি এমন একটি গ্রামে, যেখানে একটা বাড়ি বাংলাদেশে, তার পাশের বাড়িটা ভারতে! আবার আরেক কোণের বাড়িটা বাংলাদেশে, রান্নাঘরটা বাংলাদেশে, শোবার ঘর ভারতে! এ এক অদ্ভুত পরিস্থিতি! এ পৃথিবীর কোনো সীমান্তে বোধহয় এ ধরনের সীমান্ত তৈরি হয়নি। তাই এর ভিত্তি এখনও আমাদের কাছে অস্পষ্ট। এখনও গবেষকরা এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। পানির সীমান্তের কথা বললে নদী তো পাল্টায়, সীমান্তও পাল্টায়, সীমান্তও ঘোরাফেরা করে! এক অদ্ভুত পরিস্থিতি।

বাংলানিউজ : ‘শঙ্খচিল’ নামটি কি জীবনানন্দ দাশের কবিতা থেকে নিয়েছেন?
গৌতম ঘোষ : শঙ্খচিল আমাদের বাংলা কবিতায় বারবার এসেছে। বিশেষ করে জীবনানন্দ দাশের কবিতায় বহুবার শঙ্খচিল পেয়েছি। শঙ্খচিল আমাদের একটা পাখি। খুব শিকারি পাখি। সে আমাদের বাংলার আকাশে ঘুরে বেড়ায়। তার কোনো সীমানা নেই। তার সীমাহীন সীমান্ত। শঙ্খচিল নামটা আমরা দিয়েছি এজন্য, যাকে ঘিরে গল্পটা, যে চরিত্রের নাম রূপসা, সে যেন শঙ্খচিলের মতো উড়তে চায়। মন থেকে সে উড়তে চায়। অনেক ঊর্ধ্বে চলে যেতে চায়। কিন্তু কোনো সময় পারে, কোনো সময় পারে না। শঙ্খচিল এখানে একটা প্রতীকী নাম।  

বাংলানিউজ : এ প্রতীকীর মাধ্যমে কী বার্তা দিতে চেয়েছেন?
গৌতম ঘোষ : আমার মনে হয়, এটা প্রত্যেক বাঙালির অনুভূতি, আমরা মুক্ত হতে চাই। আমাদের রাজনৈতিক সীমানা, তাতে দুটি দেশ আলাদা। কিন্তু আমরা মুক্ত চিন্তা করতে চাই। একটা বৃহৎ বঙ্গ সংস্কৃতি, সেটা সবদিক থেকেই আমাদের বাঙালিকে বাড়তে সহায়তা করবে। সেটা শুধু শিল্প-সংস্কৃতিতে নয়, এমনকি ব্যবসা বা অন্যান্য ব্যাপারেও। আমরা দুই দেশের বাঙালি এখনও খানিকটা কুয়োর ব্যাঙ! আমরা বাংলা ছবিকে আন্তর্জাতিক বাজারের কাছে নিয়ে যেতে পারিনি। কিন্তু পারবো। চেষ্টা করলে পারবো।

বাংলানিউজ : ভারতে এখন সর্বত্র তামিল-তেলেগু ছবির ভীষণ প্রভাব লক্ষণীয়। অথচ এ ভাষাভাষীর লোক বাঙালির চেয়ে অনেক কম।
গৌতম ঘোষ : এটা ঠিক বলেছেন, ভারতবর্ষে তামিল, তেলেগু ভাষাভাষীর লোকজন বাঙালির চেয়ে অনেক কম। কিন্তু তাদের ছবি এখন আন্তর্জাতিকভাবে এখন হিন্দি ছবির সঙ্গে মুক্তি পায়, সারাবিশ্বে। অথচ আমরা পারছি না। কিন্তু আমাদের পারতে হবে। আমরা লড়াই করে যাচ্ছি অনেকদিন ধরে। এখনও করবো। কিন্তু আমাদের তো বয়স বাড়ছে। নতুন প্রজন্ম, বাংলাদেশের অনেক প্রতিভাবান ফিল্মমেকার, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রয়েছেন, আমি বেশকিছু ছবি দেখেছি, তাদের মধ্যে সম্ভাবনা রয়েছে, খুব ভালো ছবি হওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের এগিয়ে আসতে হবে।

যাদের ব্যবসায়িক বুদ্ধি রয়েছে, যারা মার্কেটিং করতে পারে, তাদের এগোতে হবে আমাদের ছবিকে আন্তর্জাতিক জায়গায় নিয়ে যেতে। তাহলে কি হবে, আমাদের আর বাজেটের হাত বাঁধা থাকবে না। আমরা একটু হাত খুলে কাজ করতে পারবো। আমরা এখন কঠিন লড়াই করে কাজ করি, তার কারণ বেশি খরচ করলে তা ওঠানো অসম্ভব ব্যাপার হবে। সিনেমা হলগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ, আপনারা জানেন এখানে অনেক হল বন্ধ হয়ে গেছে, পশ্চিমবঙ্গেও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আমরা সবাই মিলে যদি উঠেপড়ে লাগি, কোমর বেঁধে লাগি, বাংলা ছবিকে আন্তর্জাতিক জায়গায় নিয়ে যেতে পারবো। ‘শঙ্খচিল’ সেই প্রতীক।

বাংলাদেশ সময় : ২১১২ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৬
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ