ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাণিজ্যমেলা

বাণিজ্যমেলায় হকারের দৌরাত্ম্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৯
বাণিজ্যমেলায় হকারের দৌরাত্ম্য পণ্য বিক্রি করছে হকাররা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বাণিজ্যমেলায় অনুমতির তোয়াক্কা না করে বেড়েই চলেছে হকারের দৌরাত্ম্য। বিড়ি-সিগারেট, পানি, ফুসকা, চিপস বা খেলনা সামগ্রী নিয়ে বড় বড় প্যাভিলিয়ন বা স্টলের সামনে বসে পড়ছেন তারা। তিন গুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন পণ্য। এতে একদিকে স্টলের পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে অপরদিকে ম্লান হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার পরিবেশ।

অন্যদিকে যত্রতত্রভাবে হকার প্রবেশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থী ও স্টল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি মেলা কমিটি না চাইলে এভাবে হকার আসতে পারে না।

তবে হকার প্রবেশ বন্ধ করতে প্রতিদিনই আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছে মহানগর মেট্রোপলিন পুলিশ (ডিএমপি)।
 
শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মেলার ভিআইপি গেট দিয়ে প্রবেশ করলে হাতে ডান দিকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) অফিস ও পুলিশ কন্ট্রোল রুম। এর একটু সামনে এগোলে চোখে পড়বে হকারদের বেচা-বিক্রি। বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে তারা হাজির হয়েছে মেলার ভেতরে। অথচ তাদের মেলাস্থলে মালামাল নিয়ে প্রবেশের কোনো অনুমতি নেই। মেলার মেইন ফটকের আশপাশে একাধিক স্থানে চোখে পড়বে হকার।  

তাদের কেউ খেলনা বা খাবার বিক্রি করছেন। এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মেলার বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে বসেছেন তারা। তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় এভাবে হকার প্রবেশ করা মানে মেলার পরিবেশ নষ্ট করা বলে মনে করছেন আগত দর্শনার্থীরা।

খালেদা আক্তার নামে এক দর্শনার্থী বলেন, কোনো আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে এভাবে হকার আসতে পারে না। এখানে বিশ্বের অনেক ক্রেতা-দর্শনার্থীরা আসছেন। তাদের সামনে এভাবে মেলার পরিবেশ ম্লান করার মানে হয় না।

একই কথা জানালেন রবিন নামে অপর দর্শনার্থী। তিনি বলেন, আমাদের হকার দেখতে হবে আবার ইমেজও রাখতে হবে। হকাররা মেলার বাইরে থাকতে পারেন কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করা মানে অন্যদের ক্ষতি করা।

সোহেল নামে এক হকার বলেন, আমরা মেলার গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে ভেতরে আসি। এরপর এখানে বিক্রি শেষ করে চলে যাই।

তবে আন্তর্জাতিক মেলায় হকার প্রবেশ নিয়ে দায়সাড়া কথা বলেন মেলা কমিটির উপ পরিচালক জাকির হোসেন।  

তিনি বলেন, মেলায় অনেক সংস্থা জড়িত। আমরা মেলার আয়োজন করি সব বিষয় দেখা আমাদের কাজ না। তবে আমরাও চেষ্টা করি যাতে হকার না আসে।

পণ্য বিক্রি করছেন এক হকার।  ছবি: শাকিল আহমেদপ্রায় প্রতিদিনই মেলায় অবৈধভাবে প্রবেশের কারণে গ্রেফতার হচ্ছেন হকাররা। এরপরও কেনো কিভাবে প্রবেশ করে জানতে চাইলে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে দায়িত্বরত ইন্সপেক্টর আহাদ বলেন, আমরা প্রতিদিন হকারদের আটক করছি। তাদের প্রবেশ করতে বাধা দেই।  

তিনি আরো বলেন, সকালে যখন মেলার স্টলের লোকজন মালামাল নিয়ে প্রবেশ করে তখন হকাররাও ওই স্টলের নাম করে হয়তো ভেতরে চলে আসে। তবে মেলার পরিবেশ রক্ষায় আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। দুপুর পর্যন্ত তিন জন হকারকে আটক করা হয়েছে।
 
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনু্যায়ী, মাসব্যাপী এ মেলার পর্দা নামবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। মেলার গেট ও বিভিন্ন স্টল প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মেলায় প্রবেশের জন্য প্রাপ্ত বয়স্কদের টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। এবারই প্রথম মেলার টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।  
মেলায় প্যাভিলিয়ন, মিনি-প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের মোট সংখ্যা ৬০৫টি। এর মধ্যে রয়েছে প্যাভিলিয়ন ১১০টি, মিনি-প্যাভিলিয়ন ৮৩টি ও রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য স্টল ৪১২টি।  

এবার বাংলাদেশ ছাড়াও ২৫টি দেশের ৫২টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে। দেশগুলো হলো থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান।

** ছুটির দিনে জমে উঠেছে বাণিজ্যমেলা

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৯
ইএআর/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।