ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

আঙ্গুর আর পিচ ফলের দেশে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৭
আঙ্গুর আর পিচ ফলের দেশে রাস্তার দু’পাশে দিগন্ত বিস্তৃত আঙুর ক্ষেত। ছবি: মাহবুব মাসুম

ইয়ামানাসি (জাপান) থেকে: সত্যি দেখার মত একটা জেলা জাপানের ইয়ামানাসি। চারিদিকে সাজানো-গোছানো পাহাড় আর পর্বতমালা। সবকিছুই যেন নিজের মত করে প্রযুক্তি দিয়ে সাজিয়ে নিয়েছে এরা।

টোকিও থেকে বাসে বা ট্রেনে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পথ। কখনো পাহাড় কখনো পর্বতের নিচ দিয়ে, আবার কখনো পাহাড়ের ভাজেঁ ভাজেঁ বিশাল বিশাল রাস্তা পাড়ি দিতে হয়।

জাপানে গ্রাম আর শহর সব একই রকম। একই সুযোগ সুবিধা। গাড়ির দেশে রাস্তারও অভাব নেই। কত শত বছরে এসব তৈরি করেছে কে জানে! আসলে জাপানে যা দেখি তাতেই অবাক হই।

ইয়ামানাসি জেলার বিস্তৃত মাঠ আর পাহাড়ের ভাজেঁ ভাজেঁ শুধু আঙ্গুর আর পিচ ফলের চাষ। যতদূর চোখ যায় শুধু আঙ্গুর আর পিচ ফলের বাগান। নানা পদের নানা রকমের নানা স্বাদের আঙ্গুর। বাহারি পিচ ফল।  ছবি: মাহবুব মাসুম

আর পিচ ফল দেখতে অনেকটা আপেলের মতো। কিন্তু এটি আপেলের চেয়ে নরম, মিষ্টি ও রসালো। স্বাদ আর গন্ধও দারুণ।

জাপানের সব এলাকায় কম বেশি আঙ্গুর চাষ হয়। এখানে পুরো জেলাটাই যেন আঙ্গুর ফলের রাজ্য। রাস্তার দু’পাশে আঙ্গুর ফলের গাছগুলো মনে হয় রাস্তা গ্রাস করে ফেলবে! আঙ্গুরের থোকাগুলো অনেক বড় বড়। দেখতেও অসাধারণ। গাছগুলোতে এতো আঙ্গুর ধরে যে কৃষকরা চারভাগের একভাগ আঙ্গুর কেটে ফেলে দেয়, যাতে গাছে থাকা আঙ্গুর আরো হৃষ্ট-পুষ্ট হয়।

ছেঁটে ফেলে দেওয়া আঙ্গুরের বেশ কয়েকটি থোকা আমি বাসায় নিয়ে এসেছিলাম। এখনো পূর্ণতা পায়নি। টস টসে কাঁচা।

জাপানে ১২ মাসই আঙ্গুর চাষ হয়। তবে এখন আঙ্গুরের প্রকৃত মৌসুম। এসব আঙ্গুর আরো প্রায় এক থেকে দেড়মাস পর বাজারজাত করা শুরু হবে। কিছু আঙ্গুর চলে যাবে সুপার শপগুলোতে। কিছু আঙ্গুর দিয়ে তৈরি হবে কিসমিস। কিছু দিয়ে তৈরি হবে জেলি-জ্যাম। আর বাকি টন কে টন আঙ্গুর চলে যাবে বড় বড় নামি-দামি কোম্পানিতে। যেখানে তৈরি হবে ওয়াইন। আঙুর বাগানে লেখক।

আঙ্গুর পুষ্টিকর ফল। সুস্বাদু হওয়ায় এ ফলটি সবাই পছন্দ করে। এতে ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘এ’ আছে অধিক মাত্রায়। এছাড়াও অল্প পরিমাণে পাওয়া যায় Thiamin, Riboflavin,Niacin, ভিটামিন B6, ভিটামিন ই, Folate এবং Pantothenic অ্যাসিড। শরীরের খনিজ উপাদানের চাহিদা মেটাতে এতে আছে- পটাসিয়াম ,ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস। এছাড়া অন্যান্য খনিজ পদার্থ যেমন কপার, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম এবং দস্তা অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়।

আঙ্গুর বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। এতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। হাঁপানি, মাইগ্রেন এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় এটি অত্যন্ত কার্যকর। এছাড়াও এর হাজারো গুণ রয়েছে।

মাহবুব মাসুম: প্রবাসী সাংবাদিক, masum86cu@yahoo.com

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।