ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

কক্সবাজার বিচে রাতে জ্বলে না বাতি

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৬
কক্সবাজার বিচে রাতে জ্বলে না বাতি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার থেকে: ক্রমেই বাড়ছে সমুদ্রের গর্জন। বড় বড় ঢেউগুলো যেন তেড়ে-ফুঁড়ে আসছে।

একের পর এক ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে।

দিনের শেষে সূর্য ডুবতে না ডুবতেই ঘনিয়ে ‍আসতে শুরু করে আধার। ক্রমে তা বাড়তে থাকে। কিন্তু সৈকতজুড়ে সারিবদ্ধভাবে বসানো বৈদ্যুতিক ফ্লাট লাইট থাকার পরও জ্বলে না বাতি।

ফলে আলোর ব্যবস্থা থাকলেও সন্ধ্যা হতেই সৈকতজুড়ে নেমে আসে এক ধরনের ভুতুড়ে অন্ধকার।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যার পর ফ্লাড লাইটগুলো ঠিকই জ্বালানো হয়। তবে অধিকাংশ বাতিগুলো নষ্ট হয়ে থাকায় সৈকতের অন্ধকার দূর হয় না। যেসব বাতিগুলো  জ্বলে তাতে পুরো সৈকত আলোকিত হয় না।

এদিকে, সারি সারি ফ্লাট লাইটের ব্যবস্থা থাকলেও তা অকেজো হয়ে পড়ায় নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়ে ঝুঁকি। এভাবে সৈকত অন্ধকারময় থাকলে তা পর্যটকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠবে বলে মত সৈকতে ঘুরেতে আসা মানুষের।
 
সন্ধ্যার পর সৈকত ঘুরে দেখা যায়, ঘুটঘুটে অন্ধকার। যারা দলবদ্ধভাবে ঘুরছেন তাদের তেমন সমস্যা হচ্ছে না। তবে যারা একা বা দুইজন থাকছেন তারা নিরাপদে বিচের এদিক-ওদিক যেতে পারছেন না।
 
লাবনী পয়েন্টের বিচে ঢোকার মুখে কথা হয় ভারত থেকে আসা মনবিনা রায়ের সঙ্গে। কক্সবাজারে এসেছেন প্রথমবারের মতো। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, রাতে বিচে কোনো ফ্লাড লাইটের সুবিধা নাই। আমি এখানে প্রথমবার আসছি। সন্ধ্যার পর বিচে একটু বসব, একটু হাঁটব, আমার নিরাপত্তা কোথায়? এখানে পুরো অন্ধকার।
 
যশোর থেকে এসেছেন গোপাল নন্দন। সঙ্গে এসেছেন তার স্ত্রী স্নিগ্ধা। দুজনই বসে আছেন বিচ ছাতার নিচে। নন্দন বলেন, সন্ধ্যার পর বিচ অনেকটা ভুতুড়ে পরিবেশ হয়ে যায়। যেখানে আলো জ্বলছে সেখানে আমরা থাকছি। অন্য জায়গাগুলোতে আলো জ্বলছে না তাই সেখানে যেতে চাচ্ছি না। ওইসব জায়গা নিরাপদ মনে করছি না।
 
আরো ঘুরে দেখা যায়, বিচের লাবনী পয়েন্টের সামনে কিছু ফ্লাড লাইট জ্বলছে। তবে ঝাউ বাগানের দিকে কোনো বাতি নেই। এছাড়া লাবনী পয়েন্ট ও সুগন্ধা বিচের মাঝামাঝি জায়গাতেও জ্বলতে দেখা যায়নি কোনো বাতি।
 
এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী সুপার রায়হান কাজেমী বাংলানিউজকে বলেন, লাবনী পয়েন্ট, সুগন্ধা ও কলাতলী বিচে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার কাজে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত থাকে। বিচে বাতির ব্যবস্থা আছে, সেগুলো জ্বলে। কিন্তু বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে আছে। নষ্ট বাতিগুলো মেরামত করতে বার বার বলা হলেও সি-বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি আমাদের কথা আমলে নিচ্ছে না।
 
তিনি বলেন, যদি বিচ আলোকিত থাকে তবে পর্যটকদের ঘুরতে সুবিধা হয়। অন্যদিকে আমাদেরও কাজ করতে সুবিধা হয়।
 
কেউ বিপদে পড়লে খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। আলো থাকলে দ্রুত তাদের কাছে যাওযা যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
 
তিনি জানান, সৈকতে তিন শিফটে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। সকাল ৮ থেকে দুপুর ২টা, দুপুর ২ট থেকে রাত ১০টা ও রাত ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত। এক শিফটে থাকেন মোট ৫ জন। প্রতি শিফটে দায়িত্বে থাকে ৩টি টিম।

ট্যুরিস্ট পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের সদস্যরা ২৮ জন ছিনতাইকারী, ৫ জন ইভটিজার, ১৪২ জন গণউপদ্রবকারী ও অনৈতিক পেশার দায়ে ২১ জনকে আটক করেছে।

এছাড়া ২০টি পঁচা মাছের দোকান উচ্ছেদ, ১৫টি অবৈধ কিটকট উচ্ছেদ, ৫৭ জন শিশু উদ্ধার, ৪১টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ, একটি ল্যাপটপ, ৪টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে তারা।
    


বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৬
এসজেএ/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ