ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

ডিমের ভিতর ডিনার

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৬
ডিমের ভিতর ডিনার ছবি: শুভ্রনীল সাগর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পেঁচার দ্বীপ, কক্সবাজার থেকে ফিরে: প্রিয়জনের সঙ্গে বসে আস্ত বড় এক ডিমের হলুদ কুসুমে! চারপাশে সাগরের জোয়ারের পানি। দূরে বাঁধা মুনবোট।

বিশালতার মাঝে অস্তগামী রক্তাভ সূর্য। পাশের ঝাউবন থেকে ভেসে আসছে ঝিরি ঝিরি বাতাস। সন্ধ্যা হতেই আকাশে উঁকি কাচি চাঁদের। আলোর মশাল জ্বলছে একটু দূরে অন্ধকারে। কাচের চিমনি ঢাকা মোমবাতির নিভু আলোয় মুগ্ধতার পরিবেশ। একটু পরেই আসবে ডিনার ডিশ।

কক্সবাজার সদর থেকে ইনানী বিচ অভিমুখে ১৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাস্তার ডানে মারমেইড বিচ রিসোর্ট। ঢুকে ফুলেল অভ্যর্থনা নিয়ে পশ্চিম দিকে মিনিট দুয়েক হাঁটলেই দেখা মেলে সমুদ্রসৈকত। এ পাশটা আবার দ্বীপের মতো। জোয়ারে দ্বীপই বনে যায়।

কাঠের পুল ধরে মিনিট পাঁচেক এগোলে বাঁয়ে ঝাউবনের দ্বীপ। ডানে আড়াই ফুটের কাঠের পাটাতনের উপর বসানো মস্ত বড় দুই ডিম। মারমেইড যাকে বলছে এগ প্ল্যান্ট বা ডিম গাছ। মূলত হানিমুন কাপলদের জন্য রোম্যান্টিক ভাবনা থেকে এসেছে এগ প্ল্যান্টের ধারণা। তবে পরিবার নিয়ে কিংবা কোনো ছোট পারিবারিক অনুষ্ঠানের সব আয়োজনও করা যাবে অগ্রিম রিজার্ভেশনের ভিত্তিতে।

অবকাশ যাপন, পর্যটকদের নির্মল আনন্দ দিতে ও ভ্রমণকে একটি লাইফস্টাইলে হিসেবে দেখতেই যত সব নতুন, স্বতন্ত্র আয়োজন মারমেইডের।

মারমেইডের বোর্ডাররা শুধু রিজার্ভেশনের ভিত্তিতেই ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন এগ প্ল্যান্ট। দূর থেকে মনে হয় আস্ত দুটি ডিমের একটি খাঁড়া ও অপরটি শুইয়ে রাখা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে ভিতরের হলুদ কুসুম। সূর্যের তেজ কমে যখন রক্তাভ হয়, সেই গোধূলি লগ্ন থেকে ভিন্ন রূপ পায় এগ প্ল্যান্ট। কাঠামেটি রড সিমেন্টের হলেও শিল্পী রনি ‍আহমেদ একে করে তুলেছেন রিয়েলিস্টিক।

কাপল বা যে কেউ চাইলে পুরো দিন কাটাতে পারেন এখানে। তবে এখানে বসে হানিমুন করতে যাওয়া কাপলরা ক্যান্ডেল লাইট ডিনার সারতেই বেশি পছন্দ করেন। আর সেই ডিনারকে প্রাণবন্ত করে তুলতে সব আয়োজন করেন একদল দক্ষ কর্মী।

একে তারা বলছেন বিচ ডাইনিং পডও। পশ্চিম সাগর তীরে নিরিবিলি পরিবেশে সুনির্মল বাতাস, সূর্যাস্ত তারপর চাঁদের আলো উপভোগ করতে করতে ডিনার সারার মতো রোম্যান্টিক আয়োজন দেবে সম্পূর্ণ ভিন্ন আমেজ।

বাংলা খাবারের পাশাপাশি কক্সবাজারের সেরা সি-ফুডের সব ব্যবস্থা রয়েছে মারমেইডে। রয়েছে ইউরোপ আমেরিকান ডিশও। চাইলে খেতে পারেন সেসব। পডে বসে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে কাটাতে চাইলে খেতে পারবেন বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাকস, জুস প্রভৃতি।

দুটি এগ পডে ১০ থেকে ২০ জন একসঙ্গে বসতে পারেন। বাইরে বসার জন্য, শুয়ে সমুদ্র উপভোগ করার জন্য রয়েছে কিটকট। কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠান অথবা ছোট গানের আসর বসানোর ব্যবস্থাও রয়েছে এতে।

আর এসব কাজে মারমেইডের কর্মীদের একনিষ্ঠতা, সহযোগিতা, আন্তরিকতা প্রতি মুহূর্তে মুগ্ধ করবে। আর সবকিছুর পর পুরোটা সময় মাঝে মধ্যে সঙ্গ দেবে সিগাল, বক, মাছরাঙাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিরা। সব মিলিয়ে মুগ্ধ হওয়ার মতো সব আয়োজন সম্ভব করবে এগ প্ল্যান্ট।

মারমেইড বিচ রিসোর্টে থাকা-খাওয়া ও এগ পড সংক্রান্ত বিভিন্ন প্যাকেজের জন্য ভিজিট করুন: www.mermaidbeachresort.net

**
‘২২ বছর একইরকম, এ বছরটি ভিন্ন’
**পাতা যেখানে বাঁশি বাজায়, ঘুম ভাঙায় পাখির গান
** ছেঁড়া দ্বীপকে আবর্জনার ভাগাড় বানাচ্ছেন পর্যটকরা
**বিচ ঘেঁষে বিচ পার্ক, জানেন না পাশের ব্যবসায়ীরা!
**কক্সবাজার সৈকত বদলে দিতে পারে একজন কাদেরের চিন্তা
** নোনা দ্বীপে মিষ্টি পানি
** ড্যান্সিং বাসে কক্সবাজার টু টেকনাফ
** তথ্যহীন পর্যটন তথ্য কেন্দ্র!
** ডাব-তরমুজেই পকেট ফাঁকা সেন্টমার্টিনে
** মরা শামুক হাঁটে ছেঁড়া দ্বীপে!

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৬
এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ