ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

জাফলং পর্যটনে বাধা ‘সড়ক’

মাহবুব আলম, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৬
জাফলং পর্যটনে বাধা ‘সড়ক’ ছবি- জি এম মুজিবুর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

জাফলং-বল্লাঘাট (গোয়াইনঘাট) ঘুরে: পাহাড়ি ঝরনার শোঁ-শোঁ আওয়াজ, শুভ্রতা ছাড়িয়ে হিম ঠাণ্ডা বাতাসের ছোঁয়া; আর পাহাড়ের গা ঘেঁষে পেঁজা মেঘের ওড়াউড়ি, সঙ্গে স্বচ্ছ পিয়াইনের বুক থেকে মূল্যবান খনিজ পাথর উত্তোলন।

শুধু কী তাই? আছে সমতল চা-বাগান, খাসিয়া পল্লী, পানের বরজ; সব মিলিয়ে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলা।

চাইলেই যে কেউ এ আহ্বানে সাড়া না দিয়ে নিরপেক্ষ থাকতে পারেন না। তাই প্রকৃতি কন্যা জাফলংয়ের নিমন্ত্রণে ছুটে আসেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
 
তবে তাদের যতো অভিযোগ সড়কের বেহাল দশা নিয়ে। একারণে গাড়ি চলা তো দূরে থাক হেঁটে যেতেও ভয় পান পথচারীরা। সারা বছর তো আছেই, বর্ষা মৌসুমে সে দুর্ভোগ ওঠে চরমে। বৃষ্টিমুখর শ্রাবণের প্রথম সপ্তাহে গিয়ে এমনটাই দেখা গেলো।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, দেশের পর্যটন খাতে জাফলং একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পট। কিন্তু ভঙ্গুর আর বেহাল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সিলেটের পর্যটন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট-জাফলংয়ের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। তবে এর আগে অর্থাৎ সিলেট-জাফলং সড়কের মামুর বাজার, বল্লাঘাট জিরোপয়েন্ট কিংবা গোয়াইনঘাটগামী সড়কের অবস্থা বেহাল। যেনো দেখার কেউ নেই। ভারতের মেঘালয় ঘেঁষা উপজেলা গোয়াইনঘাটের আয়তন ৪৮৬.১০ বর্গ কি.মি.। এর সীমানা এঁকে দিয়েছে- উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে সিলেট সদর ও জৈন্তাপুর উপজেলা, পূর্বে জৈন্তাপুর উপজেলা, পশ্চিমে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা।

পর্যটন ছাড়াও তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে কয়লাসহ অন্যান্য পণ্য ভারত থেকে আমদানি করায় অনেকেই ভ্রমণে আসেন এখানে।

সড়কগুলোতে ভারী যানবাহন বিশেষ করে পাথর বোঝাই ট্রাকের আনাগোণার কারণে সড়কের এ হাল বলে দাবি করেন স্থানীয় ‘মা হোটেল’র ম্যানেজার ময়না মিয়া।

তিনি বলেন, পর্যটকদের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি সিলেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র। সড়কের অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় একবার আসা পর্যটকরা ক্রমেই জাফলংবিমুখ হচ্ছেন। বর্ষাকালে বৃষ্টির দিন এ অবস্থা আরও প্রকট হয়।
 
সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ইমরান আহমেদ এলাকায় এলে তার গাড়ি এসব খানাখন্দে আটকে যায়। বাধ্য হয়েই তাকে নৌকা ও মোটরসাইকেল কিনতে হয়েছে।

ময়না মিয়া বলেন, খানাখন্দ আর কাদায় ডুবে যাওয়া সড়কের কারণে প্রতিদিনই গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। তখন চলাই যায় না, এছাড়া প্রতিদিন দুর্ঘটনার মতো ঘটনা তো আছেই।
 ‘কেয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের পর তা আনা-নেওয়ার কাজে ট্রাক চলাচলের কারণে এসব গর্ত হয় রাস্তায়। হয় অহরহ দুর্ঘটনা। ’

সিলেট-জাফলংগামী বাস সূচি’র সুপারভাইজার সাহেব উদ্দিন জানান, সড়কের এ অবস্থার কারণে সিলেট মহানগরী থেকে রিজার্ভেও কোনো বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ওই সড়ক দিয়ে যেতে চায় না। গেলেও দ্বিগুণ টাকা দিতে হয়।

‘তাই একজন পর্যটক একবার যাওয়ার পর বেহাল সড়কের কারণে দ্বিতীয়বার যেতে চান না। ’

পিয়াইন নদীর তীরে বল্লাঘাট জিরো পয়েন্টে পান ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান বলেন, শুধু এ সড়কের কারণেই বিকশিত হচ্ছে না সিলেটের পর্যটন।

যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে দেশের পর্যটন খাতে জাফলং অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন তিনি।  

তবে এ বিষয়ে মতামত জানতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।



**অযত্নে-অবহেলায় আদিত্যপুর গণকবর
**যাত্রীর ইয়ার্ডে পাবলিকের কার পার্কিং
** ফাংশন নেই শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে
** সন্ধ্যে হতেই দোকান উঠে যায় বানিয়াচং বাজারে
** দু’টি পাতার একটি কুড়ির নিচেই অন্ধকার
** পর্যটনে আকর্ষণ তারাও
** স্বচ্ছ লেকে লাল শাপলার নিমন্ত্রণ
** ‘মৌলভীবাজার রুটের অধিকাংশ যাত্রীই পর্যটক’


বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৬
এমএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ