ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

বিটিআরআই কর্মকর্তার উদ্ভাবন ‘সাতকড়া চা’

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৬
বিটিআরআই কর্মকর্তার উদ্ভাবন ‘সাতকড়া চা’ ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: এতোদিন আচার কিংবা মাছ-মাংসের সঙ্গে খেয়েছেন সিলেট অঞ্চলের বিখ্যাত সাতকড়া। সুস্বাদু এ লেবুজাতীয় ফল দিয়ে এবার তৈরি হচ্ছে চা।

এরইমধ্যে গবেষকরা সিলেটের এ জনপ্রিয় ফলকে দেশব্যাপী জনপ্রিয় করে তুলতে তৈরি করেছেন ‘সাতকড়া চা’।

চায়ের রং হবে অনেকটা কমলা। চা পাতার সঙ্গে সাতকড়ার সংমিশ্রণে তৈরি এ চা। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) শ্রীমঙ্গলের জেনারেল ম্যানেজার খোন্দকার শাহজাহান নিজেই উদ্ভাবন করেছেন নতুন এ চা। এখন বাজারজাত করার অপেক্ষায়।

গবেষণাগার থেকে টেস্টিং প্রতিবেদন পাওয়ার পর যে কোনো সময় এ চা বাজারজাত করা হতে পারে, জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

চায়ের সঙ্গে সাতকড়ার মিশ্রণ (ব্লেন্ড) করে তৈরি হয়েছে সাতকড়া চা। এখন চায়ের গুণাগুণ বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রথম অবস্থায় চায়ে একটু অতিরিক্ত টক হয়ে যাওয়ায় ফের কয়েক দফা চেষ্টা করেছেন এ বিশেষজ্ঞ।

সাতকড়া চা তৈরি বেশ ব্যয়বহুল। বাজারজাত করার পর প্রতিকেজি চা মিলবে ১ হাজার ৫শ’ টাকায়।

এমনটি দাবি করে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের জেনারেল ম্যানেজার খোন্দকার শাহজাহান বাংলানিউজকে জানান, সাতকড়ার চা ছাড়াও ‘সিলভার চা’ তৈরি করেছেন তিনি। যা গুণাগুণের দিক থেকে সব চা পাতাকে পেছনে ফেলবে।

তিনি বলেন, সাতকড়া বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের জনপ্রিয় লেবুজাতীয় ফল। মানুষের জনপ্রিয়তার কথা চিন্তা করে এ ফল থেকে চা তৈরির জন্য তিনমাস যাবত চেষ্টা করে সফল হয়েছি। এখন স্যাম্পল পাঠানো হয়েছে ঢাকার পরীক্ষাগারে।

সাতকড়ার চা দেশের জন্য একটি মাইলফলক হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

খোন্দকার শাহজাহান বলেন, ১ কেজি সাতকড়া থেকে এক কেজি চা তৈরি করা যায়। এরসঙ্গে চা পাতার সংমিশ্রণ ঘটাতে হয়।

সাতকড়ার ভেতরের পর্সনটা ফেলে দিয়ে বাকি অংশটুকু কাজে লাগিয়েছেন। তবে রোদ না থাকায় সাতকড়ার আর্দ্রতা দূর করতে সময় লাগে বলে জানান তিনি।

প্রথম অবস্থায় দুশো কেজি চা বাজারজাতের সম্ভাবনা আছে বলে জানান এ চা গবেষক। আর সাতকড়া চায়ের লেভেলও তৈরি হয়ে গেছে। এর ব্র্যান্ডিং নাম হবে সাতকড়া চা, বাংলাদেশের চা।  

এরই মধ্যে তিনি সিলভার চা ছাড়াও অর্থডক্স (আদি চা) তৈরি করেছেন। যে চা অর্ধশত বছর আগে তৈরি করা হতো। এ চায়ের বৈশিষ্ট্য লিকার হালকা, ফ্লেভার বেশি।

এছাড়াও ডায়বেটিক চা তৈরিরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আর এসব কাজে তাকে প্রেরণা যুগিয়েছেন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। দেশের জন্য কিছু করার অংশ হিসেবে এই চা তৈরি করেছেন তিনি। অচিরেই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের এ চা পাওয়া যাবে।

লেবুজাতীয় ফল সাতকড়া বৃহত্তর সিলেটের মানুষের কাছে জনপ্রিয়। শুধু সিলেটে নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও বিস্তৃত হচ্ছে এ ফলের নাম। সাতকড়া মাছ-মাংসের সঙ্গে কিংবা আচার বানিয়ে খেলে টেস্ট মেলে বেশি। জনপ্রিয় এ ফল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়।   তবে ফলটি ভারত থেকেই আমদানি বেশি হয় বলে প্রচার আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৬
এনইউ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ