সরেজমিনে নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে এমনটিই জানা গেছে। ইতিমধ্যে নির্বাচনী সরগোল তৈরি হয়ে গেছে দেশব্যাপী।
জানা গেছে, আমিনুল ইসলাম নাচোলেই জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন স্থানীয় রেজিস্ট্রি অফিসের মুহুরি। তবে কবে তারা এলাকা ছাড়েন তা স্পষ্ট করে কেউ বলতে না পারলেও এলাকাবাসী জানান, আমিনুল ইসলাম চট্টগ্রামে চিংড়ির ব্যবসায় জড়িত। মূলত তিনি একজন এক্সপোর্টার। অনেক টাকা পয়সা রয়েছে। তারেক রহমানের সঙ্গেও তার ঘনিষ্টতা বেশ। আর এই সুবাদেই তিনি হঠাৎ দলের মনোনয়ন নেন।
সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুর সংস্কারপন্থিদের দলে ভিড়ে কর্নেল অলির বলয়ে কাজ করেছেন (এক সময় তিনি এলডিপিতেও যোগ দেন)। আর এ সুযোগটিই নেন আমিনুল ইসলাম।
অন্যদিকে বাইরুল ইসলাম ছাত্রজীবন থেকেই বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। জনগণের কাছের নেতা তিনিই। বর্তমানে গোমস্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
এলাকাবাসী বলছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনটিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মাঝে কোনো ঝগড়া, মারামারি নেই। তবে দলীয় ভিত্তিতে মামলা দেওয়ার প্রবণতা এখানেও আছে। আর বাইরুল নিজের মাথায় অনেকগুলো মামলা নিয়েও লড়ে যাচ্ছেন। হয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যানও। সেই সঙ্গে তিনি নেতা-কর্মীদেরও উজ্জীবিত করে রেখেছেন। তাই সবার পছন্দ বাইরুল। ধানের শীষের টিকিটে একাদশ সংসদ নির্বাচনে তারা আর কোনো চাপিয়ে দেওয়া নেতাকে দেখতে চান না।
এদিকে অন্য একজনও নেতা আছেন, যিনি জেলা জজকোর্টের অ্যাডভোকেট। তার নাম নুরুল ইসলাম মন্টু। তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে বাইরুলকে ছাপিয়ে অন্য কেউ তেমন পাত্তা পাচ্ছেন না।
আসনটির ফতেহপুর, কসবা, রাধানগর, দলদলিসব বিভিন্ন ইউনিয়নের সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা আত্মীয়তা রাজনীতি বা টাকার বিনিময়ে দলের টিকিট নেওয়া কোনো প্রার্থীকে আর দেখতে চান না। নিজেদের কাছের নেতাকেই তারা প্রার্থী হিসেবে পাবেন বলে আশা করেন।
নিজেকে বিএনপির একজন সাধারণ সমর্থক দাবি করে নাচোল সদরের ভোটার মো. সানাউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, মঞ্জুর সাহেব বাদ পড়ার পর সবাই আশা করেছিলাম বাইরুল ইসলামকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। কিন্তু হঠাৎ করেই জানলাম আমাদের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম। কাজেই আমাদের ওপর ‘ডালি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে’।
‘কাদার মধ্যে গাছ গাড়ি দিলে যেমন ধান হয় না, এজন্য চাষ করতে হয়। তেমনি রাজনীতিও চাষ করার বিষয়। এখানে টাকার জোরে কেউ মনোনয়ন নিয়ে এলেই নেতা হয় না। যে আসনে বিএনপি পরপর পাঁচ বার জয়ী হলো, সেই আসনটা কিন্তু একজন ব্যবসায়ীকে হঠাৎ এনেই নষ্ট করা হলো’।
বিএনপির কর্মী সমর্থকরা মনে করছেন, আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশ নেয় আর তাদের এলাকার জনগণের পছন্দের নেতাকেই যদি মনোনয়ন দেওয়া হয়, তবে নির্বাচন হবে খুব অংশগ্রহণমূলক। অনেকটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এক্ষেত্রে আসনটি আবারও ফিরে পাওয়ার স্বপ্নও দেখছেন তারা।
বলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ নামের এক ভোটার বলেন, বিএনপি যোগ্য নেতার মূল্যায়ন করেনি। এবার নির্বাচনে গেলে যোগ্য নেতাকে মূল্যায়ন করলে ফল ভালো হবে।
**জনগণের নেতা জিয়া, পেইড কর্মীতে চলেন মোস্তফা
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
ইইউডি/জেডএম