আর বড় দুই দলের কোন্দলে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে জাতীয় পার্টি। আগামী নির্বাচনে দলটি থেকে প্রার্থী হতে একজনই কাজ করে যাচ্ছেন।
০৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ আবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চান।
মনোনয়ন চাইছেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সিরাজুল হকও। অনেকদিন ধরে দলের মনোনয়ন চেয়ে আসছেন তিনি। আদিতমারী উপজেলা পরিষদের দু’বারের সাবেক চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী সিরাজুল হক লালমনিরহাট মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। এলাকায় জনপ্রিয়তাও রয়েছে তার।
সাধারণ মানুষ বলছেন, এখানে আওয়ামী লীগের অবস্থা ভালো। তবে তেমন কোনো উন্নয়ন করতে পারেননি এমপি নুরুজ্জামান আহমেদ। তার লোকজনের কর্মকাণ্ডেরও সমালোচনা রয়েছে। এর দায়ভার আওয়ামী লীগের ওপরই এসে পড়ছে। তাই আগামী নির্বাচনে যিনিই প্রার্থী হোন না কেন, এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
এমপির লোকজনের স্বেচ্ছাচারিতায় দলের মধ্যে গ্রুপিং-দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরাও।
আদিতমারী-কালীগঞ্জে বিএনপিতেও দ্বন্দ্ব রয়েছে। আগামী নির্বাচনে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে এ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে।
এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে চান কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সালেহ উদ্দিন আহমেদ হেলাল। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রয়াত মুজিবুর রহমানের কাছে পরাজিত হন।
দলের মনোনয়ন দাবি করছেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমও।
এ নিয়ে ওই দুই নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। জাহাঙ্গীর আলম বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব দুলুর অনুসারী। দুলুর সঙ্গে হেলালের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ কারণে হেলাল বিরোধী জাহাঙ্গীরকে শেল্টার দিয়ে আসছেন দুলু।
এদিকে একক প্রার্থী রোকন উদ্দিন বাবুলকে নিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে জাতীয় পার্টি। দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইতোমধ্যেই তাকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
লালমনিরহাট-২ আসনে বরাবরই বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। এলাকায় দলটির সংগঠনিক অবস্থা ভালো, নিয়মিত কার্যক্রম আছে। বাবুলের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরাও ঐক্যবদ্ধ।
এলাকাবাসী জানান, বর্তমান এমপি নুরুজ্জামানের আগে এ আসনে দীর্ঘদিন এমপি ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রয়াত মুজিবুর রহমান। তার সময়ে এলাকায় যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছিলো। এ কারণে মানুষের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রতি দুর্বলতা ও সমর্থন রয়েছে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির চেয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন বলেও ধারণা এলাকাবাসীর। তারা বলছেন, ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতীয় পার্টিরই বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কালীগঞ্জের কৃষক সামাদ মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা জাতীয় পার্টিকে ভোট দেই। আগে জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন মুজিবুর রহমান। তার সময় এলাকার অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এবার বাবুলের প্রার্থী হওয়ার কথা শুনেছি। নির্বাচন করলে তিনিই এমপি হবেন’।
আদিতমারী রেলস্টেশনে বসে মাকসুদ আলী বলেন, ‘এক সময় এখানে জাতীয় পার্টিরই এমপি ছিলেন। তাদের সময় অনেক কাজ হয়েছে। বর্তমান এমপির তো কাজ দেখি না। বিএনপি থেকেও এমপি হওয়ার মতো তেমন ভালো লোক নেই। জাতীয় পার্টির বাবুল নির্বাচন করলে জেতার সম্ভাবনাই বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
এসকে/এএসআর