বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে শহরের মণিরামপুর বাজারে দোতলার উপর ছোট্ট ঘরের বিএনপির অফিসে ঢুকলে কেউ বলবে না দলটি, দলের নেতাকর্মীরা কোণঠাসা। অন্তত সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দাবি সেরকমই।
এক দোকানির দেখানো পথে আড়াই ফুটের চিপা সিঁড়ি দিয়ে অর্ধেক উঠতেই চারজন নেতাকে দেখা গেলো সিঁড়িতেই আড্ডা দিতে। তাদের গা ছুঁয়েই উপরে উঠে দেখা গেলো আলাপ-আলোচনায় মুখরিত প্রায় ৩০ জনের মতো নেতাকর্মী। ভিতরে জায়গা না থাকায় কেউ দাঁড়িয়ে আবার কেউ আড্ডা দিচ্ছেন বাইরে সিঁড়িতে।
সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের প্রাক নির্বাচনের খবর সংগ্রহেই সেখানে যাওয়া। একই কাজে এরইমধ্যে কয়েকটি জেলা ও উপজেলা ঘুরলেও কোথাও দেখা গেছে অফিসই নেই, কোথাও অফিস খোলা কিন্তু নিরাপত্তরক্ষী ছাড়া কোনো নেতার অস্তিত্ব সেখানে নেই। আবার কোথাও ছোট ভাঙাচোরা অফিস থাকলেও নেতারা হয় কথা বলতে ভয় পেয়েছেন নতুবা থেকেছেন সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে।
দুপুরে গিয়ে পাওয়া গেলো উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন হিরু, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কেএম হাবিবুল হক সাব্বির, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামন আরিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রেজাউল হক রাজা, শহর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা আলামিন হোসেনসহ প্রায় ২৫-৩০ নেতাকর্মীকে।
এতো লোকজন একসঙ্গে দেখে কোনো প্রোগ্রাম আছে কিনা জানতে চাইলে সাব্বির বলেন, আমাদের অফিস সবসময় এমন জনাকীর্ণ থাকে। কোনো প্রোগ্রাম আয়োজন করলে নেতাকর্মী যোগাড় করতে কষ্ট করতে হয় না। ব্যাপক সাড়া পাই। প্রোগ্রাম করতে বের হলে জনগণেরও ব্যাপক সাড়া পাই। শাহজাদপুর বিএনপি খুব ভালো অবস্থায় আছে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন হিরু কথা টেনে নিয়ে বলেন, এটা আমাদের অস্থায়ী পার্টি অফিস। অথচ আমাদের পার্টি অফিস ছিলো জেলার মধ্যে দেখার মতো একটি অফিস। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর র্যাব এনে, বিজিবি, পুলিশ এনে একদিনে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়। ১৪৪ ধারা জারি করে। কোনো জিনিসও বের করতে পারিনি।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামন আরিফ বলেন, যে যখনই আসুক এখানে আমাদের নেতাকর্মী পাবেন। নিয়মিত সবাই আসেন। এটা আমাদের ঐতিহ্য। মানুষ যেমন অফিস করে তেমন আমরা সকাল ১০টার সময় আসি, ২টা পর্যন্ত থাকি আবার বিকেলে আসি রাত পর্যন্ত থেকে যাই। অন্য কোথাও বিএনপির কোনো পার্টি অফিস খোলা না থাকলেও এখানে সবসময় খোলা।
‘আপনি দেখছেন এখানে ছোট্ট একটা অফিসে আমরা বসে আছি। বিষয় সেটি না। তারপরও আমাদের নেতাকর্মীরা আসে। কর্মীরা পার্টি অফিসকেন্দ্রিক। নেতাকর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা আমরা শুনি, দেখি। এখন কর্মী সংগ্রহ ও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে আলাপ জমছে বেশি। ’
বলেন, আমাদের মূল পার্টি অফিসের জায়গায় জেলা পরিষদের মার্কেট হয়েছে। জেলা পরিষদ কমিটমেন্ট করছিলো আমাদের ওই জায়গাটা দেবে। কিন্তু দেয়নি। তবু আমাদের মনোবল ভাঙতে পারেনি। ছোট জায়গা হওয়ায় নেতাকর্মীরা অনেকসময় ফিরে যান।
বাংলাদেশে কোথাও শাহজাদপুর বিএনপির মতো এভাবে পার্টি অফিসে কেউ বসে কিনা সন্দেহ তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন খোদ সেখানকার নেতারাই।
২০১০ সাল থেকে মণিরামপুর বাজারের এ অস্থায়ী অফিসে তারা নিয়মিত অফিস করছেন বলেন জানান, যেখানে সার্বক্ষণিক বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কাউকে না কাউকে পাওয়া যায়।
আগের পার্টি অফিসে সবসময় ২শ নেতাকর্মী থাকতো বলেও জানান তারা।
** ‘নির্বাচিত হলে গ্রামেও আনবো ডিজিটাল সুবিধা’
** এমপি হলে পুরো বেতন অসচ্ছল নেতাকর্মীদের দেব
** ভরসন্ধ্যায় নির্বাচনী উত্তাপ রাজশাহী মহানগর আ'লীগ অফিসে
** এই আমাদের বিমানবন্দর রেলস্টেশন!
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
এএ