এরই মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম কেনার জন্য প্রায় চার হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক সভায়।
অন্যদিকে নির্বাচনে মনোনয়ন নামক সোনার হরিণ পেতে এখন থেকেই দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পোস্টার চোখে পড়ছে রাজধানীর বিভিন্ন ফ্লাইওভার, ফুটওভার ব্রিজের পিলার, গুরুত্বপূর্ণ দেওয়াল কিংবা চলাচলরত বাসে। তবে পোস্টার বা লিফলেটে বিশ্বাসী নয় বিএনপি। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, পোস্টার নয়, জনগণের বিশ্বাস আর গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই এখন মুখ্য বিষয়।
রাজধানীতে যারা পোস্টার সাঁটিয়ে নিজেদের জানান দিচ্ছেন তাদের অনেকেই রাজনীতিতে নবীন। এদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, শিল্পপতি; তৃণমূল থেকে উঠে আসা ব্যক্তি ছাড়াও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই এমন অনেক ব্যক্তি।
রাজধানীতে পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার ও সামাজিক মাধ্যমে নিজের প্রচারে সরব আছেন শিল্পপতি আদম তমিজি হক। ‘মানবিক ঢাকা’ স্লোগান নিয়ে তিনি সাধারণের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। তার লিফলেট ও পোস্টার চোখে পড়ে চলাচলরত মিনিবাস, ফ্লাইওভারের পিলারগুলোতে।
নিজের প্রচারে ব্যস্ত রয়েছেন বিজিএমইএ-এর সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি। মিরপুর-পল্লবী অঞ্চলের ভবনের দেয়ালে, চলাচলরত বাস, রাস্তার মোড়ে তার পোস্টার ও ব্যানার চোখে পড়ে। একই সঙ্গে নিজের ফেসবুক পেজেও চলছে প্রচারণা।
তিনি মিরপুর-পল্লবী অঞ্চল থেকে এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়া জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন গোলাম মোস্তফা, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, মোহাম্মদ নাজমুল হক, ডা. দিলীপ কুমার রায়, হারুনুর রশিদ মুন্না, আমিরুল হক খোকা প্রমুখ। প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের আরও অনেকে।
তবে পোস্টার যারা ছাপিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের নজর কাড়ছেন তার ভুল করছেন বলেন জানান আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা।
তাদের মতে, যে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাসী তাদেরকে আগামীতে দল মনোনয়ন দেবে। মনোনয়নের ক্ষেত্রে আগে তাকে জনগণের সঙ্গে মিশতে হবে, তাদের পাশে থাকতে হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, মনোনয়ন যে কেউ চাইতে পারেন। তবে মনোনয়ন চাইলেই যে তিনি পাবেন, এমনটা বলা যাবে না। আমাদের মনোনয়ন বোর্ড আছে, তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। যে মনোনয়ন প্রত্যাশী তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, জনবান্ধব বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়ার পরই তিনি মনোনীত হবেন।
আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বাংলানিউজকে বলেন, নেত্রী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ত্যাগী নেতাকে দেবেন। নির্বাচনের আগে অনেকেই মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে আসেন, যোগ্য হলে তিনি অবশ্যই পাবেন।
অন্যদিকে বিএনপি নেতারা বলছেন, আমরা কোনো ব্যানার-পোস্টারের রাজনীতি করছি না। দেশে এখন গণতন্ত্র অনুপস্থিত, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। জনগণের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্রের নেত্রীর (খালেদা) মুক্তি চাই। যদিও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকা ব্যানার-পোস্টারের মাধ্যমে হাইকমান্ডের নজর কাড়ায় ব্যস্ত রয়েছেন দলটির একাধিক নেতা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঢাকা শহরের দিকে তাকালেই মনে হয় আওয়ামী লীগের প্রচারের শহর। সর্বত্র নৌকায় ভোট চায় এই স্লোগানের পোস্টার। তবে ইসিকে অবশ্যই এটা দেখতে হবে এখন এ ধরনের পোস্টারের প্রচার করা যায় কিনা। তবে আমরা চাই গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে, গণমানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। ’
দলটির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পোস্টার বা ব্যানারের রাজনীতি নিয়ে এখন ব্যস্ত না। দেশে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র অবরুদ্ধ সেটাকে মুক্ত করাই মুখ্য বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮
ইএআর/জেডএস