ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকনসহ সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মী জাপা প্রার্থীর প্রতীকের পক্ষে ভোট চাইছেন। পুরো আসনজুড়ে লাঙ্গলের পোস্টার আর ডিজিটাল ব্যানারে সাজসাজ পরিবেশ।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪, ৫৮ এবং ৫৯ ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা-৪ আসন। শ্যামপুর, জুরাইন, পোস্তগোলা, কদমতলী এলাকার এ আসনটির মোট ভোটার ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৮ জন। এই আসনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মহাজোট প্রার্থীর প্রচারণা এবং তার পক্ষে হাঁকডাকই বেশ চোখে পড়লো।
জুরাইনের নতুন রাস্তা মুন্সিবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘লাঙ্গলের পক্ষে পোস্টার ব্যানার দেখা যাচ্ছে। মাইকে গান বাজিয়ে ভোটও চাইছে। বিএনপির কাউকেতো দেখছি না। পোস্টারও নাই। দেখি কী হয়। ভেজাল ছাড়া ভোট হলে ভোট দিবো। ভেজাল হলে ভোট দিবো না। ’
কদমতলী এলাকায় দেখা যায় প্রতিটি মহল্লায় নির্বাচনী কার্যালয় রয়েছে জাতীয় পার্টির। যেখানে জাতীয় পার্টি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বসে শলা-পরামর্শ করছেন।
৫২ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক শেখ মাইনুদ্দিন বাবু বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে। তার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নেতা বাবলা ভাই ঢাকা-৪ আসনে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এ আসনে মহাজোট ঐক্যবদ্ধ। আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। প্রচারণায় আওয়ামী লীগ-জাপা একসঙ্গেই আছি। এ কারণে ফের মহাজোটের প্রার্থী এখানে বিজয়ী হবে। ’
প্রতীক বরাদ্দের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন ঢাকা-৪ আসনের মহাজোটের প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। ধোলাইপাড়, মীর হাজীরবাগ ও জুরাইন এলাকায় ব্যাপক জনসংযোগ করছেন বাবলা।
জনসংযোগকালে বাবলা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢাকা-৪ আসনে শেখ হাসিনা ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতীক লাঙ্গল। এ প্রতীক উন্নয়ন অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। জনগণের কাছে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। কারণ গত পাঁচ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। ’
এই আসনে ২০ দলীয় জোট তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের তেমন পোস্টার দেখা না গেলেও নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি প্রচারণা শুরু করেছেন।
গণসংযোগকালে সালাহ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে পোস্টার পর্যন্ত লাগাতে দিচ্ছে না। কিন্তু মানুষের মনের ভেতরে ধানের শীষ আছে। দেশনেত্রীর (খালেদা জিয়া) মুক্তির জন্য যে আন্দোলন বা নির্বাচন, সেটাতে কামিয়াব হবো। ’
মুন্সিবাড়ী মোড়ে চায়ের দোকানে বসে আলাপ হয় স্থানীয় ভোটার জসিম উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, প্রচারণা বলতে কেবল লাঙ্গলেরই। এখনো মাঠের অবস্থা বোঝা যাচ্ছে না। তবে এই এলাকায় জাতীয় পার্টির ভোট বেশি।
আসনটিতে ধানের শীষ ও লাঙ্গল প্রতীকধারী দুই প্রার্থী ছাড়াও হাতপাখা প্রতীক লড়ছেন সৈয়দ মো. মোসাদ্দেক বিল্লাহ, গোলাপ ফুল প্রতীকে মো.আজাদ মাহমুদ, মিনার প্রতীকে শাহ আলম, মশাল প্রতীকে হাবিবুর রহমান শওকত, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের সহিদুল ইসলাম মোল্যা, আম প্রতীকে সুমন কুমার রায় ও কুলা প্রতীকে লড়ছেন মো.কবির হোসেন।
দশম সংসদ নির্বাচনে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা নির্বাচিত হন। এর আগে নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সানজিদা খানম বিএনপির আব্দুল হাইকে পরাজিত করে আসনটিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তবে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (ডেমরা থানা, খিলগাঁও থানার গজারিয়া, গৌরনগর, নাসিরাবাগ ইউনিয়ন, উত্তর দূর্গাপুর, বালদিতপুর, পূর্ব দূর্গাপুর, পশ্চিম দূর্গাপূর, নন্দীপাড়া, সবুজবাগ থানার দক্ষিণগাঁও, মানিকদিয়া, বেগুনবাড়ি ও মাণ্ডা এবং শ্যামপুর থানার কিছু অংশ) বিএনপির সালাহ উদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান মোল্লাকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন।
তার আগের নির্বাচন তথা সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাবিবুর রহমান মোল্লা বিএনপির সালাহ উদ্দিন আহমেদকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিপিবির সাইফুদ্দিন মানিককে পরাজিত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮
এমআইএইচ/এইচএ/