বুধবার (১০ জানুয়ারি) ভোর থেকে ১৬ জেলার মুসল্লিরা তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় (স্থান) এসে অবস্থান নেবেন।
এবারের প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে শুক্রবার।
প্রথম পর্বের ইজতেমায় যোগ দেবে ঢাকা জেলার একাংশ, নারায়ণগঞ্জ, শরীয়তপুর, নীলফামারী, নাটোর, বগুড়া, মাদারীপুর, গাইবান্ধা, শেরপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, নড়াইল, পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার তাবলিগের সাথীরা।
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জিম্মাদার প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানান, গত দুই মাসের স্বেচ্ছাশ্রমে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি কাজ চলেছে। এখন অল্প কিছু কাজ বাকি আছে।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকালে ইজতেমার ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, তুরাগ নদের তীরে ১৬০ একর এলাকাজুড়ে সাধারণ প্যান্ডেল এবং বিদেশি মেহমানদের জন্য চার কামরার আন্তর্জাতিক নিবাস তৈরি শেষ হয়েছে। শুধু মাঠের পূর্ব দিকে ঢাকা জেলার মুসল্লিদের জন্য জায়গা খালি রাখা হয়েছে। এখানে নিজ উদ্যোগে মুসল্লিরা শামিয়ানা টানিয়ে নেবেন।
সাত সকালেই উপস্থিত তাবলিগের সাথীরা মাঠ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে জেলাভিত্তিক খিত্তা ও খুঁটি নম্বর লাগানোর কাজ করছেন। ময়দানে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা ময়দানজুড়ে পর্যবেক্ষণ করছেন।
বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাঁচটি নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র থেকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার বিষয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এ বছর নিরাপত্তার বিষয়টিকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবার ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকাগুলোতে ছয় স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং রোহিঙ্গা প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের ১৭টি প্রবেশপথে দেহ তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। ময়দানের চারপাশে ১৫টি ওয়াচ (পর্যবেক্ষণ) টাওয়ার বসানো হয়েছে। জেলাভিত্তিক বিভিন্ন খিত্তায় সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশ নজরদারিতে মোতায়েন থাকবে।
এ ছাড়া দুই পর্বে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রায় ১২ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। সোমবার থেকেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন।
বিশ্ব ইজতেমা চলাকালে ১৪টি গভীর নলকূপ থেকে প্রতিদিন ৩.৫০ কোটি লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে। ১৩ কিলোমিটার পানির লাইন স্থাপনের মাধ্যমে টয়লেট, অজু ও গোসলখানায় পানি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ৪০টি ফগার মেশিনের সাহায্যে মশা নিধন কার্যক্রম চলবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকৌশল টিম তুরাগ নদের দুই পাশে সহজ যাতায়াতের জন্য আটটি পন্টুন ব্রিজ তৈরি করেছে। এগুলো বুধবার উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
অন্যদিকে যেকোনো দুর্ঘটনা মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৯০টি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, ১২টি গাড়িসহ তিনটি আধুনিক ইউনিট সার্বক্ষণিক ময়দানে প্রস্তুত থাকবে।
মুসল্লিদের সেবা দিতে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে। ১৪টি অ্যাম্বুল্যান্স ও ছয়টি বিশেষ মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। অ্যাজমা, হৃদেরাগ, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিশেষ ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বছরব্যাপী তাবলিগের কাজে বের হওয়া সাথীরা এরই মধ্যে টঙ্গীর বিভিন্ন মসজিদে এসে অবস্থান নিয়ে গাশতের (স্থানীয়ভাবে প্রচার চালানো) কাজ করছেণ।
বিশ্ব ইজতেমা সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে তাবলিগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি ও বয়ানকারীরা ময়দানে এসে পৌঁছবেন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৮
এমএইউ/