মেহেরপুর: পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সজনে গাছে ডাঁটায় ভরে গেছে মেহেরপুরের প্রতিটি বাড়ির আঙিনা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর সর্বোচ্চ সজিনার ফলন হয়েছে।
সজনে পাতা ও ডাঁটা পুষ্টি ও ভেষজগুণে ভরা সবজি হিসেবেও খুব দামি। ফলে দিন দিন বসতবাড়ির আশেপাশে, রাস্তার ধারে, ক্ষেতের আইলে এবং বাণিজ্যিকভাবে সজনে ক্ষেত বাড়ছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে ৩৫ থেকে ৩৭ হাজার সজনে গাছ রয়েছে। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় ৪ থেকে সাড়ে ৪ টন। দেশে দুটি জাত আছে, একটি হালো সজনে ও আর একটি নজিনা। ভারত থেকে আসা হাইব্রিড সজনের বীজ বপন করে লাগাতে হয়। হাইব্রিড জাতের সজনে গাছে বছরে দু’বার ফুল আসে। ফেব্রয়ারি-মার্চ ও জুন-জুলাই মাস। গত বছর জেলায় ৬০ হাজার সজিনার ডাল রোপণ করা হয়েছে। সজনে গাছের পাতা, ফুল, ফল, ব্যাকল ও শিকড় সবই মানুষের উপকারে আসে। সজনে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।
সজনে অনেক পুষ্টিগুণ থাকায় এ গাছকে যাদুর গাছ বলা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর মেহেরপুর জেলায় সর্বোচ্চ সজিনার ফলন হয়েছে। সজিনায় উচ্চ মূল্য পাওয়ায় চাষিরা খুশি। শুরুতে বাজারে সজিনার কেজি ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তবে বর্তমানে বিভিন্ন সাইজ হিসেবে ১৪০-২০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পুষ্টিবিদ ডা. অলোক কুমার দাস জানান, সজিনার পাতা, ফল, ফুল, বীজ, ছাল, মুলের ভেষজ গুণও আছে। তাই সজনে গাছের বিভিন্ন অংশ ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে। সজিনার পাতার পুষ্টিগুণ বেশি, যেভাবে খাওয়া হোক না কেন তা শরীরে পুষ্টি যোগাবে, আর ঔষধিগুণ তো আছেই। সজনের পাতায় যে পরিমাণ পুষ্টি রয়েছে তা অনেক পুষ্টিকর খাবারেও নেই। যেমন, ডিমের চেয়ে বেশি আমিষ, দুধের চেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে বেশি ভিটামিন সি, কলার চেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম, গাজরের চেয়ে বেশি ভিটামিন এ রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এ বছর সজিনার সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে এ জেলায়। প্রতিটি বাড়িতে কমবেশি সজনে গাছ আছে। পুষ্টিকর সবজি হিসেবে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে সজনে ক্ষেত গড়ে তোলার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৪
এসএম